রাজধানীর তুরাগে রাইদা বাস ডিপোর মালিক আনোয়ার হোসেন সিকদারকে (৫৩) হত্যার পর মাটিচাপা দিয়ে লাশ গুম করার চাঞ্চল্যকর ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে তুরাগ থানা পুলিশ। জানা যায়, নিখোঁজের চার মাস পর এই ক্লুলেস মামলার রহস্য উদঘাটন করা হয়। নিহতের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে রাইদা ডিপোর ভেতরে মাটির নিচ থেকে।
রাইদা বাস ডিপোর মালিক আনোয়ার হোসেন সিকদারের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার | ছবি: উত্তরা নিউজ
পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃতরা হলেন-মো. সবুজ ফকির (২৮), মো. কালাম (২২) ও মো. শাকিল (১৮)। তারা সবাই পেশায় বাসচালক এবং রাইদা বাস সার্ভিসের সাথে যুক্ত ছিলেন। বাস ব্যবসায়িক লেনদেন নিয়ে বিরোধের জেরে আনোয়ারকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে তারা।
আজ (সোমবার) ডিএমপি মিডিয়া সেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
জানা যায়, গত ১৭ জানুয়ারি সকাল ৯টার দিকে আনোয়ার হোসেন সিকদার বাসা থেকে বেরিয়ে ডিপোর উদ্দেশ্যে রওনা হন। ওইদিন রাত পর্যন্ত বাসায় না ফেরায় এবং মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেন। পরদিন স্ত্রী শিউলি আক্তার তুরাগ থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি (জিডি) করেন।
ডিসি মহিদুল ইসলাম বলেন, জিডির ভিত্তিতে তদন্তে নামে তুরাগ থানা পুলিশ। তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে দীর্ঘ চার মাস অনুসন্ধান শেষে গতকাল রবিবার আশুলিয়া ও দিয়াবাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রথমে কালাম ও শাকিলকে এবং পরে সবুজকে গ্রেফতার করা হয়।
তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ওইদিন সকাল ১১টার দিকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আনোয়ারকে রাইদা ডিপোর ভেতর নিয়ে যায় তারা। সেখানেই লোহার পাইপ দিয়ে মাথায় আঘাত ও পরে গলায় ছুরি চালিয়ে তাকে হত্যা করে। হত্যার পর প্রমাণ গোপনের উদ্দেশ্যে ডিপোর উত্তর পাশের টিনের বেড়ার কাছে মাটি খুঁড়ে লাশ পুঁতে রাখা হয়।
পুলিশ জানায়, তাদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে গতকাল সন্ধ্যায় দিয়াবাড়ি মেট্রো গোলচত্ত্বর এলাকার ডিপোর ভেতর থেকে আনোয়ার হোসেনের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে মরদেহ শনাক্ত করেন। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
ঘটনার পর নিহতের স্ত্রী শিউলি আক্তার বাদী হয়ে তুরাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় গ্রেফতারকৃত তিনজন ছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরও ৫/৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, “ঘটনাটি শুরুতে ক্লুলেস ছিল। ধাপে ধাপে তদন্ত ও প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যা রহস্য উদঘাটন সম্ভব হয়েছে। পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।