মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫, ০৭:৪০ অপরাহ্ন

ভোলা জেনারেল হাসপাতাল যেন পোকামাকড়ের আস্তানা

অনলাইন ডেক্স রিপোর্ট
  • আপডেট টাইম: সোমবার, ২৩ জুন, ২০২৫
ভোলা জেলার প্রায় ২২ লাখ মানুষের প্রধান স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র ভোলা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের পরিবেশ বর্তমানে চরম অব্যবস্থাপনায় ভুগছে। হাসপাতালের শয্যাগুলো এখন যেন পোকামাকড়ের আস্তানায় পরিণত হয়েছে। চারদিকে ছড়িয়ে রয়েছে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। বিশেষ করে নারী ও শিশু ওয়ার্ডে পোকামাকড়ের উপদ্রব ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে।দীর্ঘদিন ধরে এ অবস্থা চললেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ রোগী ও তাদের স্বজনদের। এ ছাড়া হাসপাতালে ১৫ জন সরকারি এবং ২৫ জন আউটসোর্সিং পরিচ্ছন্নতাকর্মী থাকলেও তারা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করছেন না বলেও অভিযোগ তাদের।হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন এই হাসপাতালে ধারণক্ষমতার চেয়ে দুই থেকে তিন গুণ বেশি রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বহির্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে এক হাজার থেকে ১২০০ রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন।রোগীর চাপে ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা।সরাসরি হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, শিশু, গাইনি ও মেডিসিন ওয়ার্ডসহ প্রতিটি ওয়ার্ডের শয্যার নিচে, দেয়ালের ফাঁকে এবং মেঝেতে তেলাপোকা ও ছারপোকা ঘুরে বেড়াচ্ছে। এসব পোকামাকড় রোগীদের কামড়াচ্ছে, খাবার নষ্ট করছে। রাতে এ উপদ্রব আরো বেড়ে যায়।অনেক রোগী ও তাদের স্বজনকে দেখা গেছে, শরীর ঢেকে তেলাপোকা সরিয়ে ঘুমাতে চেষ্টা করছেন।ভোলার দৌলতখান উপজেলার বাসিন্দা আব্দুল মমিন জানান, তিনি শরীরের জটিলতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, কিন্তু ময়লা, তেলাপোকা ও ছারপোকার কারণে শয্যায় ঠিকমতো শুয়ে থাকতে পারছেন না। হাসপাতালে এসে বরং আরো অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।একই জেলার সদর উপজেলার বাসিন্দা ফাতেমা বেগম জানান, তার মা হাসপাতালে ভর্তি। রাতে ঘুমাতে গেলে তেলাপোকা নাকেমুখে হাঁটে, ছারপোকার কামড়ে ঘুম ভেঙে যায় বারবার।খাবারেও পোকা উঠে যায়, বাধ্য হয়ে সেই খাবারই খেতে হয়।
চিকিৎসাসেবা নিতে আসা নারগিছ বেগম ও সুরমা আক্তার জানান, হাসপাতালে পা রাখলেই বোঝা যায় পরিবেশ কতটা অপরিচ্ছন্ন। কোনো বাথরুমে দরজা ঠিক নেই, টয়লেট ব্যবহার করতে একজনকে বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখতে হয়। টয়লেটগুলো থাকে দুর্গন্ধময় ও অপরিচ্ছন্ন। তাদের মতে, এত বড় সরকারি হাসপাতাল হয়েও এখানে কার্যত কোনো পরিচ্ছন্নতাকর্মীর উপস্থিতি দেখা যায় না।এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. তায়েবুর রহমান বলেন, পোকামাকড় মারার জন্য ইতিমধ্যে স্প্রে প্রয়োগ করা হয়েছে এবং এতে কিছুটা উপকার মিলেছে। ধাপে ধাপে প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি রুম খালি করে ওষুধ প্রয়োগের কাজ চলছে। আশা করা যাচ্ছে, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে পুরো হাসপাতালেই এ কার্যক্রম সম্পন্ন করা যাবে।হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবু সুফিয়ান রুস্তম জানান, গত দুই দিন ধরে বিভিন্ন ওয়ার্ডে পোকামাকড় নিধনে স্প্রে ছিটানো হচ্ছে এবং পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে। সরকারি ১৫ জন এবং আউটসোর্সিংয়ের ২৫ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মীর মাধ্যমে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। তবে আউটসোর্সিং কর্মীদের নিয়ে কিছু সমস্যা রয়েছে বলে তিনি স্বীকার করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন..

  • Print
  • উত্তরা নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন:
এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৫ | Technical Support: Uttara News Team
themesba-lates1749691102