ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেছেন, আমেরিকা বারবার হুমকি দিচ্ছে। কিন্তু তাদের জানা উচিত আমরা কখনো কারো সাথে সংঘাতের সূচনাকারী ছিলাম না। তবে কেউ যদি আক্রোশ বশত শয়তানি করে এবং সংঘাত শুরু করে তাহলে তাদেরকে শক্ত চপেটাঘাত করা হবে।নতুন ফার্সি বছর ১৪০৪ এর প্রথম দিনে আজ (২১ মার্চ, ২০২৫) তেহরানে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার হাজার হাজার মানুষের সমাবেশে ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি এ কথা বলেন। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা দোয়া, তাওয়াস্সুল এবং পবিত্র স্থানগুলোতে সমবেত হওয়ার মাধ্যমে নববর্ষ শুরু করার ইরানি ঐতিহ্যকে নওরোজ উৎসবের প্রতি জাতির আধ্যাত্মিক দৃষ্টিভঙ্গির নিদর্শন হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি ইতিহাস জুড়ে ন্যায়কামীদের মহান বিজয়ে দোয়া এবং দৃঢ়তার প্রভাব ব্যাখ্যা করেছেন এবং গত ফার্সি বছরকে ধৈর্য, অধ্যবসায় ও ইরানি জনগণের আধ্যাত্মিক শক্তির প্রকাশের বছর বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি সমগ্র জাতিকে শুভ নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এবং নতুন বছরের স্লোগান অর্থাৎ “উৎপাদনের জন্য বিনিয়োগ” বাস্তবায়ন এবং অর্থনীতি ও জীবিকার অবস্থার উন্নতি সাধনে জনগণ এবং সরকারের দায়িত্ব-কর্তব্য ব্যাখ্যা করেছেন।ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আরো বলেন, আমেরিকার জানা উচিত ইরানকে হুমকি দিয়ে তারা কখনোই কিছু অর্জন করতে পারবে না। আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী বলেন, মার্কিন এবং ইউরোপীয় রাজনীতিবিদরা যে বড় ভুলটি করছেন তা হচ্ছে তারা এই অঞ্চলের প্রতিরোধের কেন্দ্রগুলোকে ইরানের প্রক্সি বাহিনী বলে অভিহিত করছেন। এর মাধ্যমে তাদের অপমান করা হচ্ছে। ইয়েমেনি জাতির উৎসাহ-উদ্দীপনা ও প্রেরণা রয়েছে এবং এই অঞ্চলের দেশগুলোর প্রতিরোধ কেন্দ্রগুলোর উদ্দীপনা ও প্রেরণা রয়েছে। ফিলিস্তিনের বিষয়ে ইয়েমেনের অতীত ও বর্তমান অবস্থান প্রসঙ্গে বলেন, ফিলিস্তিনে দখলদারি প্রতিষ্ঠার শুরুতেই তা মোকাবিলায় যেসব দেশ অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল তার মধ্যে একটি হলো ইয়েমেন।ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী ইসরাইল যে জুলুম করছে ইয়েমেনিরা সেটার বিরোধী। ইয়েমেনি জাতির উৎসাহ-উদ্দীপনা ও প্রেরণা রয়েছে। তাদের বিষয়ে যে বড় ভুলটি করা হচ্ছে তা হলো- (পশ্চিমারা) মনে করছে ইয়েমেনিরা ইরানের পক্ষে প্রক্সি লড়াই করছে। কিন্তু না।
ইসরাইলি নৃশংসতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বর্তমানে নিষ্ঠুর ইহুদিবাদী ইসরাইলের নৃশংস ও ঘৃণ্য তৎপরতা অনেক অমুসলিম জাতির হৃদয়কেও বেদনার্ত করে তুলেছে। দখলদার ইসরাইলের জন্য নিষ্ঠুর শব্দটি পর্যাপ্ত নয়। আমেরিকা বলছে, যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ করতে এসেছিল সেগুলোর বাজেট কমিয়ে দেওয়া হবে। এটাই হলো তারে তথ্যের অবাধ প্রবাহ, লিবারেলিজম, স্বাধীনতা এবং মানবাধিকার!ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী আরো বলেন, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী জাতিগুলো অবশ্যই ইহুদিবাদী ইসরাইলের শয়তানি ও ঘৃণ্য তৎপরতার বিরোধী। তারা যেকোনো উপায়ে এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করছে। ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে। ইরানের অবস্থান স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে: মাতৃভূমি রক্ষায় তৎপর ফিলিস্তিনি এবং লেবাননি সংগ্রামীদেরকে আমরা সমর্থন করি। এটাই ছিল আমাদের সব সময়ের নীতি ও পদ্ধতি এবং এখনও তা অব্যাহত রয়েছে।