বিশ্বের অনেক দেশ সরকারি ঋণ ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা বজায় না রেখে জটিল ও গোপনীয় পদ্ধতির আশ্রয় নিচ্ছে বলে উদ্বেগ জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত সংস্থাটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এই পরিস্থিতিতে দেশগুলোর প্রকৃত ঋণপরিমাণ নির্ধারণ করা কঠিন হয়ে পড়ছে।
বিশ্বব্যাংক ঋণগ্রহীতা ও ঋণদাতা উভয় পক্ষের কাছে তথ্যপ্রকাশের পদ্ধতিতে মৌলিক সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছে। বিশেষ করে নিম্নআয়ভুক্ত দেশগুলো গোপন ঋণ চুক্তি, প্রাইভেট প্লেসমেন্ট, মুদ্রা বিনিময় এবং বন্ধক রাখা সম্পদের মাধ্যমে ঋণ নেওয়ার মতো অস্বচ্ছ ব্যবস্থায় ঝুঁকে পড়ছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
২০২০ সালের আগে মাত্র ৬০ শতাংশ নিম্নআয়ভুক্ত দেশ ঋণসংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করত। এখন তা ৭৫ শতাংশে উন্নীত হলেও মাত্র ২৫ শতাংশ দেশ ঋণ চুক্তির শর্তাবলি প্রকাশ করে—যা যথেষ্ট নয় বলে বিশ্বব্যাংক মনে করছে।
বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যাক্সেল ভ্যান ট্রটসেনবার্গ বলেন, “অস্বচ্ছ ঋণ চক্র একটি দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।” উদাহরণ হিসেবে তিনি সেনেগালের ঋণসংক্রান্ত তথ্য গোপনের ঘটনা তুলে ধরেন, যেখানে প্রকৃত ঋণ পূর্বঘোষিত পরিমাণের চেয়ে প্রায় ২৫ শতাংশ বেশি পাওয়া গেছে।
পাবলো সাভেদ্রা, বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট, বলেন, “ঋণ স্বচ্ছতা কেবল কারিগরি বিষয় নয়, এটি একটি কৌশলগত নীতি। যা অর্থনৈতিক আস্থা ও বিনিয়োগে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।”
সংস্থাটি ঋণ স্বচ্ছতা নিশ্চিতে আইনি সংস্কার, নিয়মিত নিরীক্ষা, জাতীয় পর্যায়ের তদারকি ও ঋণ চুক্তির শর্তাবলি প্রকাশের ওপর জোর দিয়েছে।