ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস দাবি করেছে, তারা ‘ফাত্তাহ-১’ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে। ‘অপারেশন অনেস্ট প্রমিস ৩’-এর ১১তম ধাপে এ হামলা চালানো হয়েছে। সেইসঙ্গে পশ্চিম তীরের আকাশে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার দাবি করেছে আইআরজিএস।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে নিয়ে মঙ্গলবার একের পর এক আক্রমণাত্মক মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপরই সর্বাত্মক যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছেন খামেনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, মর্যাদাবান হায়দারের নামে যুদ্ধ শুরু হল।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ট্রাম্পের হুমকি সত্ত্বেও ইসরায়েলের আক্রমণের কঠোর প্রতিশোধ নেয়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। এক্সের আরেক পোস্টে ইংরেজিতে তিনি লিখেছেন, সন্ত্রাসী ইহুদিবাদী শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে কঠোর জবাব দিতে হবে। আমরা ইহুদিবাদীদের কোনো দয়া দেখাব না।
এর আগে, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির বিষয়ে ইঙ্গিত করে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে লিখেন, আমরা ঠিক জানি তথাকথিত ‘সর্বোচ্চ নেতা’ কোথায় লুকিয়ে আছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, তিনি সহজ লক্ষ্যবস্তু, কিন্তু সেখানে নিরাপদ – আমরা তাকে বের করে হত্যা করব না, অন্তত এখনই নয়। কিন্তু আমরা চাই না বেসামরিক নাগরিক বা আমেরিকান সৈন্যদের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ হোক। আমাদের ধৈর্য ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে।
এরও কিছুক্ষণ আগে দেওয়া আরেক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ইরানের আকাশসীমা আমাদের নিয়ন্ত্রণে। এই পোস্ট দুটির পরপরই তৃতীয় আরেকটি পোস্টে ইরানকে পিছু হটার আহ্বান জানিয়ে ট্রাম্প লিখেছেন, আনকন্ডিশনাল সারেন্ডার!
এদিকে, সর্বোচ্চ নেতার যুদ্ধ ঘোষণার পরেই ইসরায়েল জুড়ে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। টাইম অফ ইসরায়েলের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাত ১২টা ৪০ মিনিটের পর প্রথম ব্যারাজে প্রায় ১৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়, যার ফলে ইসরায়েলের বিস্তৃত অঞ্চলে সাইরেন বেজে ওঠে। এর প্রায় ৪০ মিনিট পরে দ্বিতীয় ব্যারাজে আরো ১০টি রকেট ছোঁড়া হয়, যা ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চল ও পশ্চিম তীরের কিছু বসতিতে সতর্কতা সৃষ্টি করে।
ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস দাবি করেছে, তারা ‘ফাত্তাহ-১’ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে। রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, ‘অপারেশন অনেস্ট প্রমিস ৩’-এর ১১তম ধাপে এই হামলা চালানো হয়েছে। সেইসঙ্গে পশ্চিম তীরের আকাশে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার দাবি করেছে আইআরজিএস।
এখন পর্যন্ত ইরান থেকে ইসরায়েলের দিকে ৩৭০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ও শত শত ড্রোন ছোড়া হয়েছে। ইসরায়েলে কমপক্ষে ২৪ জন নিহত এবং ৫০০ জনের বেশি আহত হয়েছে।