রাজধানীর উত্তরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পানি খাওয়ানোসহ নানারকম সহযোগিতা করে উল্টো ছাত্র হত্যা মামলায় নাম আসায় মামলা প্রত্যাহার ও মুক্তির দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে এক ভুক্তভোগী পরিবার ও উত্তরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীরা।
আজ (রবিবার) দুপুর ১টায় উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরে উত্তরা প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিএন্ডএফ ব্যবসায়ী এম শরীফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক হত্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানিয়েছে ভুক্তভোগীর স্ত্রী আখি শরীফসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা।
জানা যায়, ১৮ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত উত্তরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আন্দোলনকারীদের সাথে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন উত্তরার ৪নম্বর সেক্টরের বাসিন্দা ও সিএন্ডএফ ব্যবসায়ী এম শরীফ উদ্দিন। কিন্তু, তারপরও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় বর্তমানে অন্যায়ভাবে জেলে রয়েছেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী এম শরীফুর উদ্দিনের স্ত্রী আখী শরীফ বলেন, আমার স্বামী কখনই রাজনীতির সাথে জড়িত না থেকেও তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। তিনি একজন ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক। গত কিছু দিন আগে যৌথ বাহিনী তাকে তুলে নিয়ে যায়। বর্তমানে সে অন্যায়ভাবে জেলখানায় আছে।
ওই নারী বলেন, আমার স্বামী বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-ছাত্রীদের পানি, খাবার, স্যালাইন দিয়ে অনেক ভাবে সহযোগীতা করেছেন এমন অনেক প্রমাণই আমার কাছে আছে। সে উত্তরা ৪নম্বর সেক্টর কল্যাণ সমিতির নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় প্রতিপক্ষরা তাকে ফাঁসাতে তাকে মামলার আসামি করা হয়েছে। আমি আমার স্বামীর নামে দেয়া মিথ্যা মামলার প্রত্যাহার ও দ্রুত মুক্তি চাই।
সংবাদ সম্মেলনে কারাগারে থাকা এম শরীফ উদ্দিনের ভাতিজি উর্মি বলেন, আমরা মামলার বাদির সাথে কথা বলেছি। তারা বলেছে আমরা শরীফ উদ্দিন নামে কাউকে চিনিনা। আমাদের মামলার আসামী ছিলো ১৬ জন পরে শুনি ২ শত এর অধিক মানুষকে আসামী করা হয়েছে। কে বা কারা এসব নাম মামলয় যুক্ত করেছে তার কিছুই আমরা জানিনা।
সংবাদ সম্মেলনটিতে উপস্থিত থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলি খাওয়া উত্তরা টাউন কলেজের শিক্ষার্থী আকাশ বলেন, আন্দোলন করতে গিয়ে ৫ আগস্টে আমি গুলিবিদ্ধ হই। আমাকে হাসপাতালে নেওয়াসহ চিকিৎসা বাবদ অনেক সহযোগীতা করেছেন এম শরীফ উদ্দিন। আর এখন শুনি তিনিই নাকি হত্যা মামলার আসামী। মামলা থেকে শরীফ উদ্দিনের নাম প্রত্যাহার করে দ্রুত মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।
এ সময় উপস্থিত থাকা প্রায় অর্ধ-শতাধিক শিক্ষার্থী এম শরিফ উদ্দিন আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পক্ষে সক্রিয় থাকার ব্যাপারে সাক্ষ্য দেন। বক্তব্যে উত্তরা ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী সিফাত বলেন, আমার বাসা এম শরীফর উদ্দিনের আষ্কেলের বাসার পাশেই। যখন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হয় তখন আষ্কেল আমাকে আন্দোলন করার পরামর্শ দেন এবং আমাকে বলে তাদের যখন যা লাগবে আমাকে বললে আমি ব্যবস্থা করে দিবো। আজমপুর থেকে এপিবিএন পর্যন্ত আমরা যারা ছিলাম তাদের খাবার, পানিসহ বিভিন্নভাবে সহযোগীতা করেছেন তিনি। আজকে দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে, যাদের নিয়ে আমরা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন করেছি তারাই আজ মিথ্যা মামলায় জেলে। এমন দেশতো আমরা চাইনি।