শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:০৯ অপরাহ্ন

পার্বত্য চট্টগ্রামে বিচ্ছিন্নবাদীদের তৎপরতা ঠেকাতে ৬ দফা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট টাইম: সোমবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৫

পার্বত্য চট্টগ্রামে সাম্প্রতিক সহিংসতা, বিদেশি প্রভাব ও বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান ঘোষণা করেছে ইন্তিফাদা বাংলাদেশ।

আজ (সোমবার) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি পার্বত্য অঞ্চলের নিরাপত্তা ও জাতীয় অখণ্ডতা রক্ষায় ছয় দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন বক্তারা।

ইন্তিফাদা বাংলাদেশ ঘোষিত ছয় দফা হলো-
১. ইউপিডিএফসহ সব বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গি সংগঠনকে অবিলম্বে নিষিদ্ধ করা এবং তাদের বিদেশি অর্থায়ন, প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র সরবরাহের উৎসের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা।
২. সীমান্তপথে অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ ঠেকাতে গোয়েন্দা নজরদারি, সীমান্ত সুরক্ষা ও প্রয়োজনীয় কূটনৈতিক পদক্ষেপ জোরদার করা।
৩. বিদেশি প্রভাব ও বিভ্রান্তিকর তথ্যযুদ্ধ প্রতিহত করতে রাষ্ট্রের সক্ষমতা বাড়ানো।
৪. ঔপনিবেশিক আদিবাসী-সেটলার ধারণা ভেঙে প্রকৃত ইতিহাসভিত্তিক জনসচেতনতা গড়ে তোলা।
৫. গোয়েন্দা সংস্থাগুলো যেন নিজ দেশের নাগরিক বিশেষ করে ইসলামী আদর্শে বিশ্বাসীদের হয়রানি বন্ধ করে বাহ্যিক হুমকি ও বিচ্ছিন্নতাবাদ মোকাবিলায় মনোযোগী হয়।
৬. বাঙালি ও পাহাড়ি জনগণের পারস্পরিক আস্থা, নিরাপত্তা ও সহাবস্থান জোরদারে রাষ্ট্র ও নাগরিক সমাজের সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ।

সংবাদ সম্মেলনে ইন্তিফাদা বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য আহমদ রফিক বলেন, ২৩ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়িতে কথিত ধর্ষণ অভিযোগকে কেন্দ্র করে ইউপিডিএফ পরিকল্পিতভাবে সহিংসতা উস্কে দেয়, যাতে প্রাণহানি ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটে। কিন্তু পরবর্তীতে চিকিৎসাগত যাচাইয়ে অভিযোগের ভিত্তি মিলেনি।

তিনি অভিযোগ করেন, ইউপিডিএফ দীর্ঘদিন ধরে অস্ত্রধারী সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, অপহরণ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলাসহ নানা সহিংস কর্মকাণ্ডে জড়িত। তারা সীমান্ত পারের সহায়তায় শক্তিশালী হয়েছে। ভারতের ত্রিপুরা ও মিজোরাম রাজ্যে প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র সরবরাহের বিষয়টি বহুদিনের অভিযোগ।

আহমদ রফিক আরও বলেন, সীমান্তবর্তী অঞ্চল থেকে হাইব্রিড ওয়ারফেয়ার অর্থাৎ সরাসরি সহিংসতা, তথ্যযুদ্ধ ও বিদেশি প্রভাবের মাধ্যমে বাংলাদেশের অখণ্ডতার বিরুদ্ধে এক ধরনের প্রক্সি যুদ্ধ চালানো হচ্ছে।

সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়, ঔপনিবেশিক আমল থেকে আমদানি করা ‘আদিবাসী-সেটলার’ ধারণাকে নতুন করে উস্কে দেওয়া হচ্ছে। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নিজেদের আদিবাসী দাবি এবং বাঙালিদের সেটলার আখ্যা দুটিই রাজনৈতিকভাবে তৈরি বিভাজনমূলক বয়ান, যা বৈজ্ঞানিক ইতিহাসের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি মেজর জেনারেল (অব.) মাহবুব উল আলম বলেন, সাম্প্রতিক সহিংসতা পাহাড়ের শান্তিপ্রিয় জনগণের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত রাজনৈতিক ও সাম্প্রদায়িক ষড়যন্ত্র। ইউপিডিএফ ও তাদের সহযোগীরা নারীর ইস্যুকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে—যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।

এ সময় বক্তারা আরও অভিযোগ করেন, দেশের বামপন্থী মহলের একাংশও এ ধরনের বিভ্রান্তিকর ন্যারেটিভে নীরব সমর্থন দিয়ে আসছে, যা কার্যত বিদেশি সম্প্রসারণবাদী এজেন্ডাকে শক্তিশালী করছে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

  • Print
  • উত্তরা নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন:
এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৫ | Technical Support: Uttara News Team
themesba-lates1749691102