বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ১২:১৩ অপরাহ্ন

স্কুলছাত্র সুমেল হত্যায় ৮ জনের ফাঁসি ও ৭ জনের যাবজ্জীবন

ন্যাশনাল ডেস্ক
  • আপডেট টাইম: বুধবার, ৩০ জুলাই, ২০২৫
সংগৃহীত ছবি | উত্তরা নিউজ

সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার বহুল আলোচিত স্কুলছাত্র সুমেল হত্যা মামলায় আদালত ৮ জন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং আরও ৭ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। দীর্ঘ চার বছর ধরে চলা এই মামলার রায় ঘোষণা করা হয় বুধবার (৩০ জুলাই) সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতে।

আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট কামাল হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, রায়ে আরও ১৭ জন আসামিকে ২ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মামলায় মোট ৩২ জন আসামির মধ্যে একজন এখনো পলাতক রয়েছেন। এর আগে গত ১৩ জুলাই মামলাটির যুক্তিতর্ক শেষ হলে রায় ঘোষণার জন্য ৩০ জুলাই দিন নির্ধারণ করেন আদালত।

ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল ২০২১ সালের ১ মে। বিশ্বনাথ উপজেলার চৈতননগর গ্রামে যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাইফুল আলম তার ব্যক্তিগত স্বার্থে স্থানীয় নজির উদ্দিনের জমি থেকে জোর করে রাস্তায় মাটি তুলতে চাইলে প্রতিবাদ করেন নজির উদ্দিন, তার ভাতিজা দশম শ্রেণির ছাত্র সুমেল মিয়া ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। এ সময় কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সাইফুল আলম নিজের সঙ্গে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি চালান। গুলিতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায় সুমেল, আহত হন তার বাবা, চাচা ও আরও দুইজন।

মর্মান্তিক এই ঘটনার পর নিহতের চাচা ইব্রাহিম আলী সিজিল বাদী হয়ে বিশ্বনাথ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, যাতে ২৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। তদন্ত শেষে তৎকালীন তদন্ত কর্মকর্তা ওসি রমা প্রসাদ চক্রবর্তী ৩২ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলায় মোট ২৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।

আদালতে প্রমাণিত অভিযোগের ভিত্তিতে যাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে তারা হলেন: সাইফুল, নজরুল, সদরুল, সিরাজ, জামাল, শাহিন, আব্দুল জলিল ও আনোয়ার। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন: ইলিয়াছ, আব্দুন নূর, জয়নাল, আশিক, আছকির, ফরিদ ও আকবর।

মামলার অন্যতম প্রধান আসামি সাইফুল আলম গ্রেফতারের পর থেকেই প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে কারাগারে রয়েছেন। এছাড়া মামুনুর রশীদ নামের একজন আসামি এখনও পলাতক আছেন।

চার বছরের দীর্ঘ তদন্ত, সাক্ষ্য ও যুক্তিতর্ক শেষে আদালতের এই রায় শুধু বিশ্বনাথ নয়, সিলেটজুড়ে তীব্র আলোড়ন তোলে। নিহত সুমেল ছিলেন শাহজালাল হাইস্কুলের ১০ম শ্রেণির ছাত্র। একজন মেধাবী শিক্ষার্থীর এভাবে প্রাণ হারানো এবং বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘ সময় সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও আইনের শাসনের গুরুত্ব আবারও স্পষ্ট করে তুলে ধরেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

  • Print
  • উত্তরা নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন:
এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৫ | Technical Support: Uttara News Team
themesba-lates1749691102