সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ০৭:২৫ অপরাহ্ন

হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায় ইনফ্লুয়েঞ্জা, জেনে নিন বিশেষজ্ঞ পরামর্শ

অনলাইন ডেক্স রির্পোট
  • আপডেট টাইম: বুধবার, ২৮ মে, ২০২৫

ইনফ্লুয়েঞ্জা একটি ভাইরাস। যা সাধারণত শ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তিতে ছাড়ায়। যখন একজন সংক্রামিত ব্যক্তি হাঁচি, কাশি বা কথা বলে তখন এটি ছড়াতে পারে। তাছাড়া ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির মুখ, নাক বা চোখ স্পর্শ করলেও ভাইরাস সংক্রামিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

ইনফ্লুয়েঞ্জা কীভাবে ছড়ায়, এর ঝুঁকি, লক্ষ্মণ ও এই ভাইরাস থেকে বাঁচার উপায়-

১. নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিনে প্রকাশিত একটি স্টাডিতে দেখা গেছে, ইনফ্লুয়েঞ্জা সংক্রমণের পরবর্তী ৭ দিনের মধ্যে হার্ট অ্যাটাক হবার ঝুঁকি ৬ গুণ বেড়ে যায়।

২. ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলসে হওয়া একটি রিসার্চে ইনফ্লুয়েঞ্জাকে হার্ট অ্যাটাকের ট্রিগার হিসেবে দেখানো হয়েছে। ইনফ্লুয়েঞ্জা ইনফেকশানের প্রথম ৩ দিনে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে।

৩. ৫০ বা তার বেশি বয়সি ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে মৃদু ইনফ্লুয়েঞ্জা সংক্রমণও হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি দ্বিগুণ করতে পারে।

৪. ২০০৮ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ডেটা অ্যানালাইজ করে দেখা যায়, যাদের আগে কখনোই ইশকেমিক হার্ট ডিজিজ ছিল না তাদের মধ্যে ইনফ্লুয়েঞ্জা সংক্রমণের পর ১৬.৬ গুণ পর্যন্ত হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

৫. ইনফ্লুয়েঞ্জা সংক্রমণে সিস্টেমিক ইনফ্ল্যামেশন, এনডোথেলিয়াল ডিসফাংশন ও এথেরোসক্লেরোটিক প্ল্যাকের রাপচার হতে পারে। যা অ্যাকিউট করোনারি সিনড্রোম তথা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়।

৬. ইনফ্লুয়েঞ্জা সংক্রমণের পিক টাইমে হার্ট ফেইলিওরের পেশেন্টদের হসপিটালাইজেশান ১৯% ইনফ্লুয়েঞ্জার কারণে হয়ে থাকে।

৭. ২০১০-২০১৮ সালের মধ্যে ৮০০০০-এর বেশি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ওপর পরিচালিত সিডিসি-এর একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ইনফ্লুয়েঞ্জা সংক্রমণে ভর্তি রোগীদের প্রায় ১২% পরবর্তীতে অ্যাকিউট হার্ট ফেইলিওর বা ইশকেমিক হার্ট ডিজিজে আক্রান্ত হয়েছেন। যাদের ৩০%-এর আইসিইউ সাপোর্ট লেগেছে। ৭% হাসপাতালে মারা গেছেন।

৮. JAMA Network Open এ একটি মেটা-অ্যানালাইসিস প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে দেখে গেছে, ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিন মেজর অ্যাডভার্স কার্ডিওভাস্কুলার ইভেন্টের ঝুঁকি ৩৪% কমাতে পারে। আরেকটি গবেষণায় দেখা গেল, ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিন গ্রহণকারীদের মধ্যে অ্যাকিউট করোনারি সিনড্রোমের ঝুঁকি ৩৭% কম।

৯. ইউরোপিয়ান সোসাইটি অফ কার্ডিওলজি তাদের সর্বশেষ গাইডলাইনে অ্যাকিউট করোনারি সিনড্রোমের রোগীদের বার্ষিক ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিন দিতে জোরালোভাবে রিকমেন্ড করেছে। মূলত মেজর অ্যাডভার্স কার্ডিওভাস্কুলার ইভেন্ট এবং মৃত্যুর ঝুঁকি কমাতে এই ক্লাস ওয়ান রিকমেন্ডেশান।

১০. আমাদের দেশে যে ‘সিজনাল ফ্লু’ হয় তার জন্য প্রধানত দায়ী ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস।

IEDCR & ICDDR,B-এর ডেটা বলছে, ইনফ্লুয়েঞ্জা সংক্রমণ বাংলাদেশে সারা বছরই হয়। তবে এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরে বেশি হয়। সবচেয়ে বেশি হয় জুন ও জুলাই মাসে।

১১. হেলথ এক্সপার্টগণ রিকমেন্ড করছেন, পিক শুরু হবার আগেই অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি/মার্চ মাসে ভ্যাকসিন নিয়ে নিতে। বিশেষ করে হেলথকেয়ার ওয়ার্কার, বয়স্ক মানুষ, হৃদরোগী ও যাদের ক্রনিক ডিজিজ রয়েছে।

১২. হাত ধোয়া, মাস্ক পরা ও জনসমাগম যথাসাধ্য এড়িয়ে চলা ইনফ্লুয়েঞ্জা সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়ক।

নিউজটি শেয়ার করুন..

  • Print
  • উত্তরা নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন:
এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৫ | Technical Support: Uttara News Team
themesba-lates1749691102