যখন মাঠ ভর্তি সোনালী ধান কেটে নিয়ে যাওয়ার জন্য গেরস্থের গোলা অপেক্ষা করে, ঠিক তখনি জামালপুরে কৃষকের স্বপ্নে নেমে আসে ধ্বস। জেলার মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ, ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ ও সদর উপজেলার বিস্তীর্ণ বোরো খেতে ‘কারেন্ট পোকা’ নামে পরিচিত ঘাসফড়িংয়ের আক্রমণে মারা যাচ্ছে ধানগাছগুলো। এতে দিগ্বিদিক হয়েছে পড়েছেন কৃষকেরা।
স্থানীয় কৃষকেরা কাঁন্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ধান না থাকায় শুধু খড় কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ধান কেটে নেয়ার ১২ থেকে ১৫ দিন বাকি ছিলো, আর এরই মধ্যে কারেন্ট পোকা সব শেষ করে দিয়েছে। তারা এখন সংসার চালানো নিয়ে পড়েছে কোণঠাসায়।
এক কৃষক জানান, আবহাওয়া ভালো থাকায় বিধায় ঋণ করে আবাদ করেন। কিন্তু হঠাৎ এই পোকার আক্রমণে সব শেষ। কিভাবে ঋণ পরিশোধ করবে তা নিয়ে দিশেহারা তারা।
জামালপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) জেসমিন জাহান বলেন, ‘কৃষকেরা যেটাকে কারেন্ট পোকা বলছেন, সেটা আসলে বাদামি গাছফড়িং। এরা গাছের গোড়ার রস খেয়ে ফেলে। একটি গাছে আক্রমণ করলে তা দ্রুত আশেপাশের খেতে ছড়িয়ে পড়ে।’ যদিও অনেক কৃষক কীটনাশক ব্যবহার করছে, কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। উল্টো গাছ পুড়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন অনেক কৃষকেরা। এ ব্যাপারে উপজেলা পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাদের মাঠে গিয়ে পরামর্শ দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, চলতি মৌসুমে জামালপুর জেলায় ২৯ হাজার ৩৭০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আবাদ হয়েছে। কিন্তু এখন অনেক কৃষক এই বিপর্যয়ে কী করবেন, তা ভেবে কূল পাচ্ছেন না।