শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ১০:৩৭ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:

ইরানিরা আরব নাকি পারস্য?

অনলাইন ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট টাইম: রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
  • ১৭ বার পঠিত

ইরান একটি প্রাচীন এবং বিশাল বিস্তৃত ভূমি, জাতিগত বিশাল বৈচিত্র্য সত্ত্বেও ইতিহাস জুড়ে জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি ছিল নিবীড়। ইরানিরা কি আরব নাকি পারস্য?  এই নিবন্ধে আমরা এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজবো

ইরানিদের পরিচয়ের শেকড়

‘ইরানিরা ‘আরব নাকি পারস্য?’-এই প্রশ্নটির জন্ম হয়েছে একটি ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক ভুল বোঝাবুঝি থেকে। ইরানিরা আসলে আরবও নয়, কেবল পারস্যও নয়। ইরান এমন একটি দেশ যার বহুমুখী পরিচয় তৈরি হয়েছে হাজার বছরের প্রাচীন পারস্য সভ্যতা এবং সমৃদ্ধ জাতিগত বৈচিত্র্যের ওপর ভিত্তি করে।

জাতিগত বৈচিত্র্যইরানের সম্পদ

ইরান বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর একটি সমন্বিত মিশ্রণের মতো, যাদের প্রত্যেকেই দেশটির সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সমৃদ্ধিতে যোগ করেছে আপনাপন ঐতিহ্য। আজারবাইজানি, কুর্দি, লোর, বেলুচি, তুর্কমেন, খুজেস্তান আরব, গিলাক এবং মাজানির মতো অন্যান্য জাতিগোষ্ঠী ইরানে শান্তিপূর্ণভাবে পাশাপাশি সহাবস্থান করে। সরকারি ভাষা হিসেবে ফার্সির পাশাপাশি বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠীর স্থানীয় ভাষা-উপভাষা চর্চার মধ্য দিয়ে তাদের মাঝে গভীর সাংস্কৃতিক বন্ধন তৈরি হয়েছে।

বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান

ইরানি জাতিগোষ্ঠীগুলোর সহাবস্থানের মূলে রয়েছে অভিন্ন ধর্ম ও জাতীয় মূল্যবোধের ইতিহাস। ইসলামী বিপ্লবের নেতা ইরানি জনগণের ঐক্যকে দেশের অগ্রগতির জন্য অনন্য সম্পদ বলে মনে করেন। ইরান-ইরাক যুদ্ধের (১৯৮১-১৯৮৮) মতো জাতীয় ঘটনা-দুর্ঘটনায় এই ঐক্য স্পষ্টভাবে প্রদর্শিত হয়েছিল। ওই যুদ্ধে খুজেস্তান প্রদেশের আরব থেকে শুরু করে দেশের পশ্চিমের কুর্দি পর্যন্ত বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী মাতৃভূমি রক্ষার জন্য পাশাপাশি লড়াই করেছিল। প্রতি বছর ইরানে এই মূল্যবান এবং দীর্ঘস্থায়ী ঐতিহ্যকে সম্মান জানাতে সাংস্কৃতিক উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।

ইরানিরা কেন আরব নয়?

যদিও কিছু ইরানি বিশেষ করে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আরব বংশোদ্ভূত অথবা আরবি ভাষায় কথা বলে, তবুও ইরানিদের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠি ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে ইন্দো-ইউরোপীয় গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত। ইরানিদের জাতীয় পরিচয় যে-কোনো জাতিগত ও গোত্রীয় পরিচয়ের উর্ধ্বে, ইসলামী ইরানি সভ্যতার ভিত্তিমূলে প্রতিষ্ঠিত। ইউনেস্কো এক প্রতিবেদনে ইরানকে এমন কয়েকটি দেশের মধ্যে একটি বলে উল্লেখ করেছে যারা জাতিগত বৈচিত্র্যকে জাতীয় ঐক্যের সাথে একীভূত করতে সক্ষম হয়েছে।

সাংস্কৃতিক মিশ্রণ

ইরানে ৩৩টি প্রদেশ রয়েছে। প্রত্যেক প্রদেশেই রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন জনসংখ্যা, রীতিনীতি এবং সংস্কৃতির অস্তিত্ব। অবশ্য বর্তমানে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, ভ্রমণের সহজতা এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়ের প্রসারের সাথে সাথে, বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বসবাস করে এবং অন্যান্য ইরানী জাতিগোষ্ঠীর সাথে যোগাযোগ করে। মজার বিষয় হলো, কিছু ইরানি প্রদেশের নাম সেখানে বসবাসকারী প্রাচীন উপজাতিদের নাম থেকে নেওয়া হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, কুর্দিস্তান প্রদেশ (১.৬ মিলিয়ন মানুষ) কুর্দি জনগণ থেকে উদ্ভূত, লোরেস্তান (১.৭ মিলিয়ন মানুষ) লোর জনগণ থেকে উদ্ভূত অথবা ফারস (৪.৯ মিলিয়ন মানুষ) পারস্য জনগণ থেকে উদ্ভূত।

নিউজটি শেয়ার করুন..

  • Print
  • উত্তরা নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন:
এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৫ | Technical Support: Uttara News Team
themesba-lates1749691102