মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৪৩ অপরাহ্ন

ব্যাংক দেউলিয়া হলে গ্রাহক ২ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ পাবেন

অনলাইন ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট টাইম: সোমবার, ২৪ মার্চ, ২০২৫
  • ১৫ বার পঠিত
সরকার পরিবর্তনের পর ১১টি দুর্বল ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে। এদের মধ্যে কেউ কেউ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আবার কেউ কেউ এখনো হিমশিম খাচ্ছে আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে। এই মুহূর্তে প্রশ্ন উঠেছে কোনো ব্যাংক দেউলিয়া বা অবসায়ন বা বন্ধ হয়ে গেলে কত টাকা ফেরত পাবেন একজন গ্রাহক।আমানত সুরক্ষা আইন অনুযায়ী কোনো ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান অবসায়িত (বন্ধ) হলে প্রত্যেক আমানতকারী সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ পাবেন।তবে অন্তর্বর্তী সরকারের নিয়োগ করা গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর ঘোষণা দিয়েছেন, আমানত বীমা তহবিল থেকে ফেরতের পরিমাণ বাড়িয়ে দ্বিগুণ করা হচ্ছে। কোনো ব্যাংক দেউলিয়া হলে এ তহবিল থেকে সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা ফেরত পাবেন।গত ৮ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমানত বীমার পরিমাণ এক লাখ থেকে দুই লাখ টাকায় উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।এর মাধ্যমে প্রায় ৯৫ শতাংশ আমানতকারীর আমানত সম্পূর্ণরূপে নিরাপদ করা হয়েছে। পৃথিবীর কোনো দেশই শতভাগ আমানতকারীর টাকার গ্যারান্টি দিতে পারে না। আমরাও পারব না। কোনো ব্যাংক দেউলিয়া হলে ছোট আমানতকারীরা সঙ্গে সঙ্গে টাকা ফেরত পাবেন।আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এরই মধ্যে ব্যাংক খাতে সংস্কার শুরু হয়েছে। কিছু হলেও কাজ হচ্ছে। এ মুহূর্তে আমাদের প্রধান লক্ষ্য, আমানতকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনা। তাই আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন গভর্নর।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ২০২২-২৩ অর্থবছর শেষে এ তহবিলে মোট জমার পরিমাণ দাঁড়ায় ১৪ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। তবে এখন এর পরিমাণ ১৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। পাঁচ বছর আগের তুলনায় যা দ্বিগুণ। আর ২০২১-২২ অর্থবছরের তুলনায় বেড়েছে এক হাজার ৭৯০ কোটি টাকা বা ১৪.১১ শতাংশ। আমানতকারীদের সুরক্ষা দিতে সব ব্যাংক থেকে নির্ধারিত হারে চাঁদা নিয়ে এ তহবিল গঠিত হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ব্যাংকের আমানতের সুরক্ষা দিতে ১৯৮৪ সালে সর্বপ্রথম একটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়। অধ্যাদেশকে ২০০০ সালে ব্যাংক আমানত বীমা আইন ২০০০-এ পরিণত করা হয়। সেই আইন অনুযায়ী, গ্রাহকরা যে পরিমাণ অর্থই জমা রাখেন, তার বিপরীতে ব্যাংকগুলো আমানত বীমার আওতায় সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা দিতে পারে। তাই এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেলে গ্রাহকদের এ পরিমাণ অর্থই ফেরত দেওয়ার বিধান রয়েছে। তবে পলাতক আওয়ামী লীগ ২০১৭ সালে এই আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নেয়। সংশোধিত খসড়া আইন অনুযায়ী, ব্যাংক বন্ধ হয়ে গেলে আমানতকারী সর্বোচ্চ ছয় মাসের মধ্যে দুই লাখ টাকা পাবেন। দুই লাখেরও বেশি টাকা ব্যাংকে জমা রাখলেও দুই লাখ টাকাই পাবেন এমন বিধান রাখা হয়। তবে সেই আইন আর বাস্তবায়ন হয়নি।

বর্তমানে ব্যাংকগুলোতে আমানতকারীদের গচ্ছিত অর্থের পরিমাণের ওপর ০.৮ থেকে ০.১০ শতাংশ হারে বীমার প্রিমিয়াম দিতে হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা জমা রাখা আমানতকারীদের অ্যাকাউন্টের মধ্যে ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশই আমানত সুরক্ষা বীমার অধীনে আছেন। কিন্তু সরকার যদি এক লাখ টাকার বদলে দুই লাখ টাকা পরিশোধের নিয়ম করে, তাহলে বীমা করা অ্যাকাউন্টের পরিমাণ ৯০ শতাংশ থেকে বেড়ে ৯৫-৯৬ শতাংশে দাঁড়াবে। বর্তমানে ব্যাংকিং খাতে যে এলোমেলো পরিস্থিতি, তাতে যাঁরা বড় অঙ্কের টাকা জমা রেখেছেন তাঁরা দুশ্চিন্তায় আছেন। প্রিমিয়াম নির্ধারণের ক্ষেত্রে সরকারের উচিত প্রতিবেশী দেশ ও উন্নত দেশগুলোর প্রিমিয়াম রেট বিবেচনায় নেওয়া।

নিউজটি শেয়ার করুন..

  • Print
  • উত্তরা নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন:
এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৫ | Technical Support: Uttara News Team
themesba-lates1749691102