কবিতা মানুষকে সভ্যতার পথ দেখায় এবং সুস্থ-সুন্দর সমাজ গঠন করতে সহায়তা করে। আধুনিক কবি, কবিতা, সাহিত্য কথাগুলোতে বা শব্দগুলোতে কালধর্মের বিষয়টি যেমন দ্যোতিত, তেমনি ভাবধর্মিতার বিষয়টিও উপেক্ষণীয় নয়। আধুনিক সাহিত্যের প্রধান বৈশিষ্ট্য মানববাদী চিন্তার প্রকাশ। মানুষের কথা বলতে গিয়ে আধুনিক যুগের কবিগণ, সাহিত্যিকগণ, শিল্পীগণ মানুষের দেশকাল, সামাজিক পরিবেশ প্রতিবেদনকে যথাযোগ্য ভূমিকায় স্থাপন করেছেন।
আধুনিক যুগের সাহিত্য নবজাগরণের যুগের মানবচিন্তাকে ললাটতিলক রূপে গ্রহণ করে আত্মপ্রকাশ করেছে। আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রতি মানস-প্রবণতা, ইউরোপীয় সাহিত্যের ব্যাপক প্রভাব, সংস্কার-উদ্দীপ্ত যুক্তিভিত্তিক মনোভঙ্গি, আত্মপ্রকাশের দুর্দমনীয় কামনা প্রভৃতি এ-যুগের মানুষের মনকে প্রণোদিত করেছে, অপরদিকে তেমনি সাহিত্যের ভিত্তিভূমিটি দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
এবার আধুনিক কবি,কবিতা ও সাহিত্য নিয়ে কিছু কথা বলছি, অনেকে মাইকেল মধুসূদন দত্তকে বাংলা সাহিত্যের প্রম আধুনিক কবি বলে মনে করেন। বাংলা সাহিত্যের, বিশেষ করে বাংলা কবিতার ক্ষেত্রে উদাহরণ টেনে বলা যায়, রবীন্দ্রনাথ তার সময়ের বিচারে আধুনিক। আবার আপাত রবীন্দ্রবিরোধী বুদ্ধদেব বসু বা সমকালীন একাধিক কবিকেও বলা হয় আধুনিক।
পরবর্তী প্রজন্মের কবিদের বাংলা কবিতার সংকলনের বিচার ব্যাখ্যায় এমনিতেই চোখে পড়ে। কেউ কেউ আরো পরবর্তী ত্রিশের কবিদেরই মনে করেন আধুনিক কবি। প্রথম আধুনিক বাংলা কবিতা পাই মধুসূদনের কাছ থেকেই। তাই বলা যায়, তিনিই আধুনিক বাংলা কবিতার জনক।
মেঘনাদবধ মহাকাব্য এবং চতুর্দশপদী কবিতা লিখে বিখ্যাত হন। তিনিই বাংলা সাহিত্যে যোগ করেন মহাকাব্য, সনেট ও মনোনাট্যের। চৌদ্দ মাত্রার পয়ারে আট-ছয়ের চাল ভেঙে দেন এবং আঠারো মাত্রার মহাপয়ার রচনা করেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত। ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তকে বলা হয় যুগসন্ধিকালের কবি। তিনি মধ্যযুগ ও আধুনিক যুগের সংযোগ ঘটিয়েছেন। অর্থাৎ তিনি মধ্যযুগের শেষ কবি এবং আধুনিক যুগের প্রথম কবি।
চর্যাপদ বাংলা হলে, চর্যাপদ থেকে মধ্যযুগ পর্যন্ত আমাদের সাহিত্য মানেই পদ্ম সাহিত্য। অর্থাৎ বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস মূলত বাংলা কবিতার ইতিহাস। চর্যাপদ বা মধ্যযুগের কাহিনী নির্ভর অনুবাদ বাংলা কাব্য সাধারণ মানুষের সাহিত্য হিসাবে আর ভূমিকা রাখছে না। এখন সাধারণ মানুষের পঠিত কবিতা মানেই আধুনিক কবিতা। বাংলা সাহিত্যের প্রধান কবি রবীন্দ্রনাথ। রবীন্দ্রনাথের কবিতা আজও সমভাবে পঠিত এবং প্রাসঙ্গিক।
রবীন্দ্রনাথ ব্যাপকভাবে আধুনিক কবিতা লেখা শুরু করলেও আধুনিক কবিতা পূর্ণতা পায় ত্রিশের কবিদের হাতেই। এর আগে গোবিন্দচন্দ্র দাস থেকে নজরুল ইসলাম পযর্ন্ত ছন্দের দিকে দৃষ্টি রেখেই কবিতা রচনা করেছেন। একই সালে (১৮৯৯) জন্মগ্রহণ করলেও নজরুলের চেয়ে ভিন্ন ধারায় কবিতা লিখেন জীবনানন্দ দাশ।
জীবনানন্দের ঝরা পালক অন্তমিলের কাব্যগ্রন্থই, ‘ধূসর পাণ্ডুলিপিতে তিনি প্রতিভার স্বাক্ষর রাখেন। মৃত্যুর পর প্রকাশিত ‘রূপসী বাংলা’ কাব্যগ্রন্থও একই ধারার। তিনি তার প্রতিভার চূড়ান্ত স্ফুরণ ঘটান ১৯৪২সালে ‘বনলতা সেন’ কাব্যগ্রন্থে। বনলতা সেন যেমন জীবনানন্দের শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ, তেমনি নজরুলের শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ ‘অগ্নি-বীণা। ‘ অগ্নি-বীণার ১৮ বছর পর প্রকাশ পায় ‘বনলতা সেন। ‘ বাংলা জনপ্রিয়তম কাব্যগ্রন্থগুলোর মধ্যে এ দুটি অন্যতম। নজরুল বিদ্রোহী কবিতা লিখেছেন ৬ মাত্রার মুক্তক মাত্রাবৃত্তে।
ত্রিশের প্রধান পাঁচ কবির অন্যরা হলেন অমিয় চক্রবর্তী, বিষ্ণু দে, বুদ্ধদেব বসু ও সুধীন্দ্রনাথ দত্ত। ত্রিশের দশকের আরো গুরুত্বপূর্ণ কবি রয়েছেন- প্রেমেন্দ্র মিত্র, অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত প্রমুখ। অবশ্য এই দুইজনের সাথে বুদ্ধদেব বসুকে মিলিয়ে কল্লোলযুগের প্রধান তিন কবিও বলা হয়। ত্রিশের কবির মধ্যে সুধীন্দ্রনাথ কবিতা লিখেছেন মাত্র ১৩০টি, যদিও কাব্যগ্রন্থ ৭টি। জীবনানন্দের পর তিনিই ত্রিশের গুরুত্বপূর্ণ কবি। ত্রিশের কবিরাই মূলত আধুনিক কবিতার পুরোধা।
সমসাময়িক কবি জসীমউদ্দীন পল্লিকবি খ্যাতি লাভ করেছেন, কিন্তু যুগের সাথে তিনি হাঁটেননি। মাত্রাবৃত্ত ও স্বরবৃত্ত ছন্দে তিনি মধ্যযুগের মতো কাহিনিকাব্য রচনা করেও আলোচিত হয়েছেন। এর পরও অনেকে বলেন, কবিতায় আধুনিকতা এসেছে চল্লিশের দশকে।
নজরুলের পর এই চল্লিশের দশকেই বেশ কয়েকজন মুসলমান আধুনিক কবিকে পাই- ফররুখ আহমদ, আহসান হাবীব ও সৈয়দ আলী আহসান এর মধ্যে প্রধান। চল্লিশের দশকের অন্যতম প্রধান কবিও এই তিন কবি।
সৈয়দ আলী আহসান ভাঙা গদ্য ও টানা গদ্য কবিতাও লিখেছেন। সাতচল্লিশে দেশ বিভাগের পর কবিরাও ভাগ হয়ে গেছেন। হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকজন কবি চলে যান পশ্চিমবঙ্গে। এদের মধ্যে বিনয়কুমার মজুমদার এবং সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়রা দেশভাগের কারণে বাংলাদেশের কবি না হয়ে ভারতের কবি হয়েছেন।
এই দেশভাগে ঢাকা-কেন্দ্রিক কবিদের উত্থান ঘটে। ঢাকা-কেন্দ্রিক সাহিত্যের নেতৃত্ব দেন মুসলমান কবিরাই। এরাই পঞ্চাশ ও ষাটের দশকের কবি হিসাবে স্বীকৃতি পান। এরাই হয়ে ওঠেন বাংলা সাহিত্যের প্রধানতম আধুনিক কবি। হাসান হাফিজুর রহমান, সুফিয়া কামাল প্রমুখ কবিরা এ সময় সমহিমায় উঠে আসেন।
মধ্যপঞ্চাশের আরেক প্রধান কবি আল মাহমুদ। তবে আধুনিক বাংলা সাহিত্যে ধর্মীয় বিভেদ কখনোই সৃষ্টি হয়নি। ফলে বাংলাদেশে নির্মলেন্দু গুণ, মহাদেব সাহা, অসীম সাহা, রফিক আজাদের, আসাদ চৌধুরী, নির্মলেন্দু গুণ, মহাদেব সাহা, নাসির আহমেদ,মুহাম্মদ নূরুল হুদা অন্যতম প্রধান আধুনিক কবি।
বিনয় মজুমদার তার ‘ফিরে এসো চাকা’ কাব্যগ্রন্থে সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের আধুনিক কবিতা রচনা করেন। শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ‘যেতে পারি কিন্তু কেন যাবো’ কাব্যগ্রন্থটি লিখে প্রতিভার স্বাক্ষর রাখেন। তিনি লিখেছেন, ‘ভাবছি ঘুরে দাঁড়ানোই ভাল/ এতো কালো মেখেছি দুহাতে/ এতোকাল ধরে/ কখনো তোমার করে তোমাকে ভাবিনি। থ আর সুনীল রচনা করেন অনেকগুলো পাঠকপ্রিয় কবিতা। ‘আমি কীরকমভাবে বেঁচে আছি কবিতায় তিনি লিখেছেন, ‘আমি কীরকমভাবে বেঁচে আছি তুই এসে দেখে যা নিখিলেশ/ এই কী মানুষজন্ম? নাকি শেষ/ পুরোহিত-কঙ্কালের পাশা খেলা! প্রতি সন্ধ্যেবেলা/ আমার বুকের মধ্যে হাওয়া ঘুরে ওঠে, হৃদয়কে অবহেলা/ করে রক্ত।
সুনীলের সবচেয়ে জনপ্রিয় কবিতা হলো ‘কেউ কথা রাখেনি। ত্রিশের কবিদের পর বাংলা কবিতায় সবচেয়ে জনপ্রিয় চার কবি হলেন, শামসুর রাহমান, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, আল মাহমুদ এবং শক্তি চট্টোপাধ্যায়। দুজন এ বাংলার, দুজন ও বাংলার; দুজন মুসলমান, দুজন হিন্দু।
ষাটের দশকের কবিদের মধ্যে প্রধান কবি বলা হতো শামসুর রাহমানকে। ষাটের কবিরা বাংলা কবিতায় সম্পূর্ণতা এনেছেন। এদের মধ্যে শুধু আল মাহমুদই পরিচিতি পেয়েছেন ‘সোনালী কাবিনথ কাব্যগ্রন্থে সনেট লিখে। অন্যদের সফল বিচরণ সকল ধরনের কবিতায়। শামসুর রাহমান শুরুতে মাত্রাবৃত্ত ছন্দকে প্রাধান্য দিয়ে তিন ছন্দেই লিখেছেন; কিন্তু তিনি শামসুর রাহমান হয়ে উঠেছেন মুক্তক অক্ষরবৃত্তে কবিতা লিখেই।
শামসুর রাহমানের অধিকাংশ কবিতা মুক্তক অক্ষরবৃত্তে সাজানো। তিনি মুক্তিযুদ্ধের এবং শহরের আধুনিক কবি হিসাবেই নিজেকে মেলে ধরেছেন। তিনি মাত্রাবৃত্ত ছন্দ, স্বরবৃত্ত, গদ্য ছন্দ কিংবা সনেট-সবর্ত্রই সাবলীল; কিন্তু মুক্ত অক্ষরবৃত্ত তার স্বাভাবিক ছন্দ। শামসুর রাহমানের পর গুরুত্বপূর্ণ কবি আল মাহমুদ।
একই ভাবে তিনিও শুরু করেছিলেন ছন্দোবদ্ধ কবিতা লিখে। তার সবচেয়ে আলোচিত কাব্যগ্রন্থ তিনটি হলো ‘লোক লোকান্তরথ, ‘কালের কলসথ ও ‘সোনালী কাবিনথ। আল মাহমুদ প্রম দুটি কাব্যগ্রন্থ লিখে কবিখ্যাতি পেলেও সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছেন ‘সোনালী কাবিন কাব্যগ্রন্থের সনেটগুলো লিখে। তবু তার শেষ আশ্রয় আধুনিক গদ্য কবিতায়। রফিক আজাদ, মোহাম্মদ রফিক, হুমায়ুন আজাদ একই সময়ের অন্যতম প্রধান কবি। এর মধ্যে হুমায়ুন আজাদ তার শেষ কাব্যগ্রন্থ ‘পেরোনোর কিছু নেই -এ ছন্দ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছিলেন।
বিশ শতকের শেষ কয়েক দশক ও একুশ শতকের শূন্য দশকে এসে আমরা অসংখ্য তরুণ প্রতিশ্রুতিশীল কবির দেখা পাই। কিন্তু একুশ বছর বয়সে নজরুল, সুকান্ত যে রকম জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন, এ প্রজন্মে তা দেখা যায়নি। বদরে মুনীর, আলফ্রেড খোকন, কামরুজ্জামান কামু, রহমান হেনরী, টোকন ঠাকুর, সরকার আমিন, সরকার মাসুদ, ব্রাত্য রাইসু, তপন বাগচী, সুব্রত অগাস্টিন গোমেজ, রেজাউদ্দিন স্টালিন, আবু হাসান শাহরিয়ার, জাহিদ হায়দারসহ আরো অনেকে কবি স্বীকৃতি পেয়েছেন।
এরা আধুনিক কবিতার উন্নয়ন ঘটিয়েছেন, এগিয়ে নিচ্ছেন। কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ সহজ হওয়া বা অনেক বেশি কবিতা লেখায় তাদের কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা অনেক। কিন্তু একটি বহুল আলোচিত কবিতা এদের কাছ থেকে আজও আসেনি। আরো আগে রুদ্র মুহাম্মদ শহিদুল্লাহর ‘বাতাসে লাশের গন্ধ’ তুমুল আলোচিত হয়েছিল। হেলাল হাফিজ প্রকৃতপক্ষে একটি কাব্যগ্রন্থই রচনা করেছেন, ‘যে জলে আগুন জ্বলে। ‘ এই কাব্যগ্রন্থের নিষিদ্ধ সম্পাদকীয় (এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়) সহ অল্প কয়েকটি কবিতা জনপ্রিয়তা পায়। সাম্প্রতিক বাংলাদেশের কবিতায় গদ্যছন্দের কবিতা ছন্দোবদ্ধ কবিতার চেয়ে অনেক বেশি লেখা হচ্ছে। এখানে পশ্চিম বাংলার কবিতার সাথে পার্থক্য তৈরি হচ্ছে।
কবিতার উদ্দেশ্য, পরিধি, গঠন, কৌশল, ছন্দ, আবৃত্তি ইত্যাদি কারণে দশকে দশকে বদলে গেছে কবিতা। কবিতার পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে নিয়মিত। রবীন্দ্রনাথের জীবিতাবস্থায় ত্রিশের কবিরা কবিতা বদলে দিয়েছেন। এই রেশ কাটতে না কাটতেই হাজির হয়েছেন চল্লিশ-পঞ্চাশ-ষাটের কবিরা। প্রতিটি দশকেই কবিতার উন্নতি অনেক স্পষ্ট হয়েছে। ফলে বাংলাদেশের কবিতা পেছনে পড়ে যায়নি।
এই ধারা বজায় রাখেন সত্তর-আশির দশকের অনেক কবি। এই সময়ে প্রচুরসংখ্যক বলিষ্ঠ কবিকে আমরা পাই। দশকওয়ারি এই বিবর্তনধারায় বাংলা কবিতা সমৃদ্ধ হয়েছে। তবে অনেক কবিকেই দশকের ছকে বেঁধে ফেলা যায় না। তীব্র প্রতিদ্বন্দিতার মধ্যে ভালো কবিতা লেখার একটি চেষ্টা সবার মধ্যেই ছিল। এই চেষ্টার পেছনে রয়েছে মানুষ যাতে কবিতা থেকে দূরে চলে না যায়, সাধারণ মানুষের ভাষা থেকে বিচ্ছিন্ন না হয়ে যায়। গদ্য ভাব প্রকাশের সবচেয়ে কার্যকরী মাধ্যম। ছন্দোবদ্ধ কবিতা যথায ভাবপ্রকাশের গতির সাথে চলতে পারত না। তাই অনিবার্য ছিল অক্ষরবৃত্ত বা গদ্য কবিতার। এতে কবিতার সুসময় ফিরে এসেছে তা নয়। তবে কবিতা মাঝে মাঝে তীব্র আলোর ঝলকানি ছড়িয়েছে।
শামসুর রাহমানের ‘স্বাধীনতা তুমি’ কবিতাটি স্বাধীনতা নিয়ে লেখা যেকোনো প্রবন্ধ, গল্প-উপন্যাস, ইতিহাসের চেয়ে শক্তিশালী। এই কবিতাটি মানুষ গ্রহণ করেছে বিপুলভাবে। কবিতা ছন্দোবদ্ধ না গদ্য কাঠামোর, তার চেয়ে বড় হয়ে ওঠে মানের বিষয়টি। আবার অসংখ্য আধুনিক কবিতা পাঠকপ্রিয়তা পায়নি দুর্বল গঠন ও দুর্বোধ্যতার জন্য। মূল কথা, কবিতার মধ্যে সৌন্দর্য থাকলে তা পাঠক গ্রহণ করে।
রবীন্দ্র-পরবর্তী সময়ে নজরুল ও ত্রিশের কবিরা, আরো পরে চল্লিশ-পঞ্চাশের ও ষাটের কবিরা আধুনিক কবিতার শুধু ধারাবাহিকতাই বজায় রাখেননি, তারা কবিতাকে সমৃদ্ধ করেছেন। এখন শামসুর রাহমান, আহসান হাবীব, সৈয়দ শামসুল হক, আল মাহমুদ ও রফিক আজাদের, আসাদ চৌধুরী, নির্মলেন্দু গুণ, মহাদেব সাহা, নাসির আহমেদ,মুহাম্মদ নূরুল হুদা পরবর্তী সময়ে যেসব তরুণ কবিতা লিখছেন তাদের ওপরই নির্ভর করছে আধুনিক কবিতার আধুনিক ও সুস্থ ধারা।
লেখক: প্রদীপ্ত মোবারক
কবি ও গবেষক