এশিয়ার বহু দেশে একই সময় দেখা দিয়েছে চরম দুটি বৈরী আবহাওয়ার—রেকর্ড গরম ও ভয়াবহ বন্যা। বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এমন চরম আবহাওয়া আরও ঘন ঘন, তীব্র ও অপ্রত্যাশিত হয়ে উঠছে। খবর: বিবিসি।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্ব গড় হারের চেয়ে দ্বিগুণ গতিতে উষ্ণ হচ্ছে এশিয়া। গত ৩০ বছরে খরা, বন্যা ও তাপপ্রবাহের ফলে এই অঞ্চলে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২ ট্রিলিয়ন ডলার।
জাপানের গুনমা প্রিফেকচারের ইসেসাকি শহরে মঙ্গলবার তাপমাত্রা রেকর্ড গড়ে পৌঁছেছে ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে—দেশটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ। জুন-জুলাই মাসজুড়ে জাপানে চলেছে নজিরবিহীন গরম। শুধু টোকিওতেই গরমজনিত কারণে অন্তত ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। অতিরিক্ত তাপপ্রবাহের কারণে রেললাইন বিকৃত হওয়ার আশঙ্কায় ট্রেন চলাচলও স্থগিত করা হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় জুলাইয়ে রেকর্ড ২২টি ‘ট্রপিকাল নাইট’ (রাতেও তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রির বেশি) দেখা গেছে। গরমে জরুরি স্বাস্থ্যসেবার কল বেড়ে গেছে উল্লেখযোগ্য হারে। অনেক অফিসে পোশাকের নিয়ম শিথিল করতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে, ভিয়েতনামের হ্যানয়ে আগস্ট মাসে প্রথমবারের মতো তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে।
চীনের বিভিন্ন অঞ্চলে অতিবৃষ্টিতে দেখা দিয়েছে মারাত্মক বন্যা পরিস্থিতি। বেইজিংয়ের পার্বত্য এলাকায় গত মাসে আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে বহু প্রাণহানি হয়েছে। গুয়াংজু শহরে শত শত ফ্লাইট বাতিল বা বিলম্বিত হয়েছে। পানিবন্দি এলাকায় মশাবাহিত রোগ, বিশেষ করে চিকুনগুনিয়া ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে।
ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যে মেঘভাঙা বৃষ্টিতে হঠাৎ সৃষ্টি হওয়া বন্যায় শতাধিক মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। পাকিস্তানে জুন থেকে বৃষ্টিজনিত দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩০০ জন, যার মধ্যে ১০০ জনের বেশি শিশু। পাঞ্জাব প্রদেশে এক-চতুর্থাংশ স্কুল আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়েছে বলে জানিয়েছে ‘সেভ দ্য চিলড্রেন’।
হংকংয়েও মঙ্গলবার ৩৫০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে—১৮৮৪ সালের পর আগস্টে এটিই সর্বোচ্চ। উল্লেখযোগ্য যে, হংকংয়ের বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত ২৪০০ মিলিমিটার, যার অধিকাংশই হয় জুন-আগস্ট মাসে।