‘চিফ হিট অফিসার‘ পদটি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নয়, এই পদে উত্তর সিটি কাউকে নিয়োগ দেয়নি। বুশরা আফরিনকে নিয়োগ দিয়েছে বিদেশি একটি প্রতিষ্ঠান যারা জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় কাজ করে।
ঢাকার তাপমাত্রা কমাতে যৌথভাবে কাজ করার লক্ষ্যে উত্তর সিটির সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অ্যাড্রিয়েন আর্শট-রক ফেলার ফাউন্ডেশন রেজিলিয়েন্স সেন্টার (আর্শট-রক)। এই প্রতিষ্ঠান বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় কাজ করছে। এজন্য তারা বিভিন্ন দেশে নিজেদের অর্থে ‘চিফ হিট অফিসার’ নিয়োগ দিয়েছে। একইভাবে ঢাকা উত্তর সিটিতে তারা বুশরা আফরিনকে ‘চিফ হিট অফিসার’ নিয়োগ করেছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এসব তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত সচিব) সেলিম রেজা। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, বুশরা আফরিনকে ডিএনসিসির পক্ষ থেকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি, আর্শট-রক নিয়োগ দিয়েছে।
উল্লেখ্য বুশরা আফরিন ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলামের মেয়ে। কয়েকটি গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে বুশরাকে অর্থাৎ নিজের মেয়েকে চিফ হিট অফিসার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন মেয়র আতিক! এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র সমালোচনাও শুরু হয়েছে।
সিইও সেলিম রেজা বলেন, আমরা ঢাকা উত্তর সিটির পক্ষ থেকে বুশরাকে কোনো নিয়োগপত্র দিইনি; তাকে বেতন বা অন্য কোনো সুবিধা দেবো না; ডিএনসিসিতে তিনি অফিসও করবেন না। সুতরাং এটা আমাদের নিয়োগ বলার সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে অনেকে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, ইউনিসেফের মতো প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে। অনুরূপভাবে আর্শট-রক তাকে নিয়োগ দিয়েছে। আমাদের নন, তিনি তাদের একজন অফিসার। শহরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে তিনি যদি আমাদের কোনো সহযোগিতা করেন, সেটা আর্শট-রক-এর পক্ষ থেকে করবেন।
জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলার অংশ হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন শহরে চিফ হিট অফিসার নিয়োগ করে ‘আর্শট-রক’। স্থানীয় সরকারি-বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়ে তারা কাজ করে। ২০২১ সালের জুনে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার মিয়ামিতে প্রথম বারের মতো চিফ হিট অফিসার নিয়োগ দেওয়া হয়। ফ্লোরিডা, চিলি, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের আরও ছয় শহরে একই পদ নিয়ে কাজ করছেন আরও ছয় নারী।
বুশরা একজন সমাজকর্মী
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, বুশরা আফরিন একজন সমাজকর্মী। তিনি কানাডার কুইন্স ইউনিভার্সিটিতে গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজে পড়েছেন। পাশাপাশি ঘানার ইনস্টিটিউট অব লোকাল গভর্নমেন্ট স্টাডিজেও পড়াশোনা করেছেন। ঘানার বলগাটাঙ্গায় ‘তাওদেপ’ নামে একটি নারী উন্নয়ন প্রকল্পে কাজ করেন।
বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম এনজিও শক্তি ফাউন্ডেশনের একজন ব্যবস্থাপনা নির্বাহী হিসেবে কাজ করেছেন বুশরা। তিনি বিভিন্ন পোশাক কারখানায় কর্মরত নারী শ্রমিকদের কাজের পরিবেশের উন্নতি এবং কারখানাগুলোতে পরিবেশগত স্থায়িত্বের সুপারিশ প্রদান করেছেন।
বাংলাদেশের বিশিষ্ট প্রাণী অধিকার সংস্থা ‘অভয়ারণ্য’র পলিসি অ্যাডভোকেসি কনসালটেন্ট হিসেবেও কাজ করেছেন বুশরা। কর্পোরেশন-কেন্দ্রিক প্রাণীদের চিকিৎসা এবং কল্যাণে নানা নীতি-নির্ধারনী কাজ করেছেন তিনি। পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে শর্টফিল্ম তৈরি করেছেন বুশরা, যা বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন মহলে প্রশংসিত হয়েছে।