বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ১২:১৭ পূর্বাহ্ন

শুধু সংসার না, আমাদের জীবনটাই অগোছালো হয়ে গেছে

উত্তরা নিউজ প্রতিবেদক
  • আপডেট টাইম: মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই, ২০২৫
সংগৃহীত ছবি | উত্তরা নিউজ

মাহেরীন চৌধুরীর জন্মদিন ছিল ৬ জুন। সেই দিন মাকে নিজের উপার্জনে কেনা একটি ব্যাগ উপহার দিয়েছিল ও-লেভেল পড়ুয়া বড় ছেলে আয়ান। আজ সেই ব্যাগ অক্ষত, কিন্তু তার মালিক নেই। ২১ জুলাই রাজধানীর দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুলের হায়দার আলী ভবনে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় স্কুলশিক্ষিকা মাহেরীন দগ্ধ হয়ে প্রাণ হারান— যিনি নিজের জীবন দিয়ে রক্ষা করেছিলেন শিশু শিক্ষার্থীদের।

প্রায় ১৭ বছর ধরে মাইলস্টোন স্কুলে শিক্ষকতা করে আসা মাহেরীন ছিলেন বাংলা মাধ্যমের দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির কো-অর্ডিনেটর। দুর্ঘটনার সময় তিনি শিশুদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন, কিন্তু আগুনে নিজেই দগ্ধ হন। ঢাকার বার্ন ইনস্টিটিউটে নেওয়ার পর জীবনের শেষ মুহূর্তে তিনি বলেছিলেন, “ছেলেদের পড়াশোনা যেন বন্ধ না হয়… স্কুলের বাচ্চারাও তো আমারই সন্তান।” ওই ঘটনায় নিহত ৩৪ জনের মধ্যে মাহেরীনও ছিলেন অন্যতম।

স্বামী মনসুর হেলাল জানান, মৃত্যুশয্যায় মাহেরীন দুই ছেলের ভবিষ্যৎ চিন্তায় কাতর ছিলেন। বড় ছেলে আয়ান দুর্ঘটনার আগে মায়ের জন্য ফ্লেক্সিলোড পাঠাতে গিয়েছিল— এখন শুধু স্মৃতি। ছোট ছেলে আদিল এখনও মায়ের শূন্যতা কাটিয়ে উঠতে পারেনি।

মাহেরীনের পরিবার জানায়, মৃত্যুর আগে তিনি বাবা–মায়ের কবরের পাশে সমাহিত হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। সেইমতো তাঁকে দাফন করা হয়েছে জলঢাকার বগুলাগাড়িতে।

মাহেরীনের সহকর্মীরা জানান, তিনি শুধু এক শিক্ষকই নন, ছিলেন এক সাহসী মমতাময়ী মানুষ। রাষ্ট্র ইতোমধ্যে তাঁকে ও আরেক শিক্ষক মাসুকা বেগমকে সম্মাননার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

মাহেরীনের স্বামী মনসুর বলেন, “মাহেরীন কোনো কিছুই অগোছালো পছন্দ করত না। আজ ঘরের প্রতিটি জিনিস এলোমেলো। শুধু সংসার নয়, আমাদের জীবনটাই অগোছালো হয়ে গেছে।”

নিউজটি শেয়ার করুন..

  • Print
  • উত্তরা নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন:
এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৫ | Technical Support: Uttara News Team
themesba-lates1749691102