বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের জন্য দিন দিন সংকুচিত হয়ে আসছে বৈশ্বিক ভ্রমণের সুযোগ। একের পর এক দেশ বাংলাদেশিদের জন্য বন্ধ করছে অন-অ্যারাইভাল ও সাধারণ ট্যুরিস্ট ভিসা। শুধু উন্নত দেশ নয়, ছোট দেশগুলোও বাংলাদেশিদের জন্য কঠোরতা আরোপ করছে, ফলে বিশ্ব যেন ক্রমেই হয়ে উঠছে সীমিত।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব) সূত্রে জানা গেছে, অপরাধপ্রবণতা, মানব পাচার ও ভিসা জালিয়াতির মতো বিভিন্ন কারণে বন্ধ হচ্ছে ভিসা সুবিধা। ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইনসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বহু দেশ এখন বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা প্রদানে কঠোর।
মধ্যপ্রাচ্যের শীর্ষ শ্রমবাজারগুলোতেও একই সংকট। সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, মালয়েশিয়া, কুয়েত ও কাতারের মতো দেশগুলোতে বাংলাদেশিদের জন্য বিভিন্ন ধরনের ভিসা সাময়িকভাবে স্থগিত বা সীমিত করা হয়েছে। ইউরোপের ইতালি, জার্মানি, এমনকি কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রেও ভিসা প্রক্রিয়া হয়েছে জটিল ও দীর্ঘসূত্রতাময়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ পরিস্থিতির পেছনে অন্যতম কারণ হল অনিয়মতান্ত্রিক অভিবাসন এবং কিছু নাগরিকের অপরাধমূলক কার্যক্রম। টোয়াব প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রাফিউজ্জামান জানান, এসব কারণে আউটবাউন্ড ট্যুরিজম হুমকির মুখে। ভিসা সংকটে ভ্রমণসংক্রান্ত ব্যবসায় বড় ধাক্কা লাগছে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন স্বীকার করেন, ভিসা জটিলতার পেছনে দেশেরই দায় রয়েছে। তিনি বলেন, “যেভাবে নিয়ম ভেঙে মানুষ বাইরে যাচ্ছে, সেটাই মূলত ভিসা বন্ধের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।”
বর্তমানে কেবলমাত্র নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য কিছুটা সহজ ভিসা প্রক্রিয়া রাখলেও তা বিশ্ব পর্যটনের পরিপ্রেক্ষিতে অত্যন্ত সীমিত সুযোগ।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সমস্যা নিরসনে কূটনৈতিক পদক্ষেপের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণভাবে ভিসা সংক্রান্ত শৃঙ্খলা আনাই এখন সবচেয়ে জরুরি।