বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:২৩ পূর্বাহ্ন

গাজায় ইসরায়েলি হামলা: নিহত ৫৩, ক্ষুধায় মৃত ৪২২

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক
  • আপডেট টাইম: সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
সংগৃহীত ছবি | উত্তরা নিউজ

অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর নতুন অভিযানে আরও ৫৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। হামলায় গাজা সিটির অন্তত ১৬টি ভবন ধ্বংস হয়েছে, যার মধ্যে তিনটি আবাসিক টাওয়ারও রয়েছে।

অন্যদিকে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে অপুষ্টি ও ক্ষুধায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২২ জনে।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, এই অভিযানের লক্ষ্য গাজার উত্তরাঞ্চল দখল এবং সেখানকার সাধারণ মানুষকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা। চিকিৎসকরা জানান, রোববার নিহতদের মধ্যে অন্তত ৩৫ জন গাজা সিটির বাসিন্দা।

গাজার রেমাল এলাকায় আল-কাওসার টাওয়ারে বিমান হামলা চালিয়ে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দেয় ইসরায়েলি বাহিনী। অব্যাহত বোমাবর্ষণে হাজার হাজার মানুষ পালাতে বাধ্য হচ্ছে। স্থানীয় ফিলিস্তিনি মারওয়ান আল-সাফি বলেন, “আমরা জানি না কোথায় যাব। এই পরিস্থিতির দ্রুত সমাধান দরকার। আমরা এখানে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছি।”

জাতিসংঘ ও মানবিক সংস্থার সতর্কবার্তা

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ)-এর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি এক্সে জানান, গত চার দিনেই সংস্থার ১০টি ভবন ইসরায়েলি হামলায় আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে সাতটি স্কুল ও দুটি ক্লিনিক ছিল, যেখানে হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। তিনি লিখেছেন, “গাজায় কোথাও নিরাপদ নয়। কেউ নিরাপদ নয়।”

ইউনিসেফের মুখপাত্র টেস ইঙ্গ্রাম জানান, দক্ষিণাঞ্চলের আল-মাওয়াসির পরিস্থিতিও ভয়াবহ। তিনি বলেন, “গাজায় কথিত কোনো মানবিক অঞ্চল নেই। প্রতিদিন আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষের ভিড় বাড়ছে। এমনকি এক নারী সন্তান জন্ম দিয়েছেন রাস্তায়, কারণ কোথাও নিরাপদ আশ্রয় মেলেনি।”

ফিলিস্তিনিদের মানবেতর জীবন

বাস্তুচ্যুত আহমেদ আওয়াদ জানান, মর্টার হামলা থেকে বাঁচতে উত্তর গাজা থেকে পালিয়ে আসলেও এখনো কোনো মৌলিক চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। পানি, টয়লেট বা আশ্রয়ের ব্যবস্থা নেই। পরিবারগুলো খোলা আকাশের নিচে ঘুমাচ্ছে।

আরেকজন ফিলিস্তিনি আবেদআল্লাহ আরাম জানান, তার পরিবার তীব্র পানির সংকটে ভুগছে। খাবার নেই, শিশুরা অপুষ্টিতে ভুগছে। শীতের আগমনে তাঁবুর প্রয়োজনীয়তা আরও জরুরি হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, “বাস্তুচ্যুত হওয়া মানে যেন প্রাণটা শরীর থেকে টেনে বের করে নেওয়া।”

গাজার সরকারি গণমাধ্যম দপ্তর অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল কেবল সশস্ত্র গোষ্ঠী নয়, বরং স্কুল, হাসপাতাল, মসজিদ, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, আবাসিক ভবন, এমনকি আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থার অফিসগুলোও লক্ষ্যবস্তু করছে। তারা একে “পদ্ধতিগত গণহত্যা ও জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি” বলে আখ্যা দিয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

  • Print
  • উত্তরা নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন:
এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৫ | Technical Support: Uttara News Team
themesba-lates1749691102