মালয়েশিয়ার নিলাইয়ে মেডিসেরাম এসডিএন বিএইচডি কম্পানিতে কর্মরত ১৭২ জন বাংলাদেশি শ্রমিককে ধর্মঘটের অভিযোগে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। বিষয়টি বাংলাদেশ হাইকমিশনের নজরে এলে শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য কম্পানির চেয়ারম্যান ও শ্রমিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কয়েক দফা আলোচনা করে হাইকমিশন।
হাইকমিশন জানায়, ২০২৩ সাল থেকেই কম্পানির সঙ্গে শ্রমিকদের বিরোধ চলছিল। ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তনের পর কাজের পরিবেশ কিছুটা উন্নত হলেও বিরোধ মেটে না।মেডিসেরামের দাবি, ২০২৫ সালে শ্রমিকরা ছয় দফায় ধর্মঘট করেছে—১৬-২৩ জানুয়ারি, ৯-২৭ মার্চ, ১৫-২৬ মে, ২৪-২৬ জুন, ১-২ অক্টোবর এবং সর্বশেষ ২৩ অক্টোবর। সর্বশেষ ধর্মঘটের পর ১৭২ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়। তাদের মধ্যে ১৬ জনকে ইতিমধ্যে মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়েছে। বাকিরা কম্পানির হোস্টেলে আছেন।তাদের মধ্যে ১০ জন আবার কাজে যোগ দিয়েছেন, বাকিরা ধর্মঘট চালিয়ে যাচ্ছেন।চাকরিচ্যুতি প্রত্যাহার এবং অভিযোগ যাচাইয়ের জন্য কম্পানিকে লিখিত অনুরোধ করে বাংলাদেশ হাইকমিশন। পাশাপাশি অভিযোগের বিস্তারিত জানতে ১৩ নভেম্বর হাইকমিশনের একটি দল কম্পানিটি পরিদর্শন করে।
হাইকমিশন জানায়, নথি যাচাইয়ে দেখা গেছে—অক্টোবর ২০২৫ পর্যন্ত সবাইকে বেতন পরিশোধ করা হয়েছে।রেসপন্সিবল বিজনেস অ্যালাইন্স–এর সুপারিশে ১৮৪ জন বাংলাদেশি শ্রমিককে অভিবাসন ব্যয় বাবদ ২২,৫০০ রিঙ্গিত (প্রায় ছয় লাখ টাকা) করে ফেরত দিয়েছে কম্পানি। ভিসা নবায়নের আবেদনে ৮৬ জনের ভিসা অনুমোদিত হয়েছে, ৯৮ জনের প্রক্রিয়া চলছে। যাদের ভিসা প্রক্রিয়াধীন, তাদের জন্য বিশেষ পাস দেওয়া হয়েছে।শ্রমিকদের একটি প্রতিনিধিদল হাইকমিশনকে জানিয়েছে, তারা মেডিসেরামে আর কাজ করতে চান না এবং কম্পানি পরিবর্তনে সহায়তা চেয়েছেন। এ বিষয়ে মালয়েশিয়ার শ্রম আইন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত হয়।তবু হাইকমিশন তাদের দাবি শ্রম দপ্তরকে জানিয়ে দ্রুত সমাধানের অনুরোধ করেছে।
হাইকমিশনের অনুরোধে কম্পানি ধর্মঘটরত শ্রমিকদের ইমিগ্রেশনের ছাড়পত্র সাপেক্ষে পুনর্বহালে সম্মতি দিয়েছে। দ্রুত সমাধান না হলে সংশ্লিষ্ট সবাই বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর ঝুঁকিতে পড়বেন বলে হাইকমিশন জানিয়েছে।
হাইকমিশন বলেছে, মেডিসেরামে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় তারা কম্পানি এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে।
এ জাতীয় আরো খবর..