সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা সহকারী শিক্ষক পদ বাতিলের সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, উত্তরা পূর্ব শাখা। সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ বলেছেন— সরকারের এই সিদ্ধান্ত শিক্ষাব্যবস্থাকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেওয়ার সমান। এটি শিশুদের মানসিক, সাংস্কৃতিক ও শারীরিক বিকাশের পথে এক গুরুতর বাধা সৃষ্টি করবে।
উত্তরা পূর্ব শাখার আহ্বায়ক ইব্রাহিম শিকদার বলেন, “সরকারের এই সিদ্ধান্ত গভীরভাবে উদ্বেগজনক। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা শুধুমাত্র সহপাঠ কার্যক্রম নয়, এটি শিশুদের মানবিক, সাংস্কৃতিক ও শারীরিক বিকাশের অপরিহার্য অংশ। শিশুদের মানসিক বিকাশ, আত্মবিশ্বাস, সৃজনশীলতা ও দলগত চেতনা গঠনে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষার ভূমিকা অপরিসীম। অথচ সরকার ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর চাপে নতি স্বীকার করে শিক্ষাব্যবস্থা থেকে এই গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলো সরিয়ে দিচ্ছে। এটি প্রগতিশীল শিক্ষা দর্শনের পরিপন্থী এবং শিক্ষাক্ষেত্রে অন্ধকারাচ্ছন্ন চিন্তার প্রতিফলন।”
তিনি আরও বলেন, “একটি জাতি তখনই এগিয়ে যেতে পারে, যখন তার শিশুরা মানসিকভাবে আনন্দময়, সংস্কৃতিমনা ও শারীরিকভাবে সক্ষম হয়ে বড় হয়। কিন্তু সরকার আজ সেই পথ বন্ধ করছে। সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বাদ দেওয়া মানে শিশুদের শিক্ষা থেকে আনন্দ, সংস্কৃতি ও সুস্থতার অনুষঙ্গ কেড়ে নেওয়া। এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রতি অন্যায়।”
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, উত্তরা পূর্ব শাখার নেতৃবৃন্দ বলেন— “আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা প্রাথমিক পর্যায়ে বাধ্যতামূলক করা উচিত। কারণ এটি শুধু শিক্ষা নয়, মানবিক সমাজ গঠনের ভিত্তি। শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধর্মীয় কিংবা রাজনৈতিক প্রভাবে বিকৃত করা চলবে না। শিক্ষাকে হতে হবে বৈজ্ঞানিক, যুক্তিনির্ভর ও মানবিক।”
সংগঠনটি অবিলম্বে এই অবৈজ্ঞানিক ও প্রতিক্রিয়াশীল সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা সহকারী শিক্ষক নিয়োগের পদ পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছে। পাশাপাশি দেশের প্রাথমিক শিক্ষাকে ধর্মীয় প্রভাবমুক্ত করে বৈজ্ঞানিক, মানবিক ও সংস্কৃতিনির্ভর শিক্ষানীতি প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছে।