ভারতের শীর্ষ আর্থিক অপরাধ তদন্তকারী সংস্থা জানিয়েছে, ব্যাংক জালিয়াতি তদন্তের অংশ হিসেবে তারা শিল্পপতি অনিল আম্বানির সঙ্গে যুক্ত সংস্থাগুলো থেকে ৮৪৬ মিলিয়ন ডলারের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে। এএফপি মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, এশিয়ার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মুকেশ আম্বানির ছোট ভাই অনিল, বিদ্যুৎ থেকে শুরু করে প্রতিরক্ষা পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যাবসায়িক স্বার্থের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, কিন্তু গত দুই দশকে তার ভাগ্যের অবনতি হয়েছে।সাম্প্রতিক মাসগুলোতে, এই শিল্পপতি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার তদন্তের আওতায় এসেছেন।তদন্তকারীরা ব্যাংকঋণের অপব্যবহার থেকে শুরু করে অর্থপাচার পর্যন্ত বিভিন্ন অভিযোগের তদন্ত করছেন।এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) সোমবার সন্ধ্যায় জানিয়েছে, তারা তদন্তের অংশ হিসাবে ৭৫ বিলিয়ন রুপির বেশি মূল্যের সম্পদ ফ্রিজ করেছে, যার মধ্যে অফিসের চত্বর, আবাসিক ইউনিট ও ১৩২ একরের বেশি জমি রয়েছে।সংস্থাটি বলেছে, তারা রিলায়েন্স অনিল আম্বানি গ্রুপের বিভিন্ন কম্পানিগুলোর দ্বারা জনগণের অর্থের জালিয়াতিমূলক অপব্যবহার’ খুঁজে পেয়েছে এবং তারা এই অপরাধের অর্থ ‘তাদের বৈধ দাবিদারদের কাছে ফিরিয়ে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’।ইডি আরো জানিয়েছে, তারা আগস্ট মাসে সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (সিবিআই) করা একটি ফৌজদারি মামলার ভিত্তিতে এই তদন্ত শুরু করেছে।
অনিল আম্বানি নিয়ন্ত্রিত সংস্থা রিলায়েন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার সোমবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইডির কম্পানির সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার এই সিদ্ধান্তে ব্যবসার কার্যক্রমে ‘কোনো প্রভাব পড়বে না’।
সিবিআইয়ের কাছে মামলাটি এসেছে দেশের বৃহত্তম ঋণদাতা স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (এসবিআই) একটি জালিয়াতির অভিযোগ থেকে, যেখানে অভিযোগ করা হয়েছে, রিলায়েন্স কমিউনিকেশনস ব্যাংকের তহবিল ‘আত্মসাৎ’ করার পর ২৯.২৯ বিলিয়ন রুপির ক্ষতি হয়েছে।রিলায়েন্সের একজন মুখপাত্র সেই সময় বলেছিলেন, শিল্পপতি ‘দৃঢ়ভাবে সমস্ত অভিযোগ ও চার্জ অস্বীকার’ করেছেন এবং ‘যথারীতি আত্মপক্ষ সমর্থন করবেন’।অনিল আম্বানিকে সর্বশেষ সাত বছর আগে জনসমক্ষে দেখা গিয়েছিল যখন ভারতের বিরোধী দলের নেতা রাহুল গান্ধী ফ্রান্স থেকে রাফাল জেট কেনার সঙ্গে সম্পর্কিত ‘আপত্তিকর লেনদেনের’ জন্য তাকে এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অভিযুক্ত করেছিলেন—যদিও উভয় পক্ষই সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছিল।ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে জেট চুক্তি নিয়ে তদন্তের আহ্বান খারিজ করে দিয়েছিলেন।