শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৪২ পূর্বাহ্ন

পর্যটন শহর বান্দরবানে ব্যয় বাড়াচ্ছে সিন্ডিকেট

অনলাইন ডেক্স রির্পোট
  • আপডেট টাইম: সোমবার, ৩ নভেম্বর, ২০২৫
মৌসুম শুরু হলেও আশানুরূপ পর্যটক নেই পাহাড়ি পর্যটন জেলা বান্দরবানে। শহরের অধিকাংশ হোটেল-মোটেল, কটেজ, রিসোর্ট প্রায় পর্যটকশূন্য। পর্যটন স্পট, বার্মিজ মার্কেট ও দোকানগুলোতেও পর্যটকের উপস্থিতি খুবই কম। এতে হতাশ হয়ে পড়েছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।এজন্য সিন্ডিকেট, অতিরিক্ত পরিবহন ভাড়া ও খাবারের চড়ামূল্যকে দায়ী করছেন তারা।শহরের ব্যবসায়ীরা জানান, অন্যান্য বছর এই সময় প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটকের উপচে পড়া ভিড় থাকে। সেখানে এবছর ছুটির দিনগুলোতেও পর্যটকের সংখ্যা খুবই কম। এতে পর্যটন ব্যবসায় মন্দাভাব দেখা দিচ্ছে বলে জানান তারা।ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, প্রশাসনের উদাসীনতা ও নজরদারির অভাবে পর্যটন খাতের প্রতিটি সেক্টরেই নিয়ন্ত্রণহীন ও লাগামহীন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। পরিবহন, হোটেল, খাবারের দোকানসহ সব সেক্টরে গড়ে উঠেছে সিন্ডিকেট। এর সঙ্গে জড়িতরা  পরিকল্পিতভাবে পর্যটক ও সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে অতিরিক্ত মুনাফা হাতিয়ে নিচ্ছেন, যার মারাত্মক প্রভাব পড়ছে পর্যটন শিল্পে। হোটেল মালিকরা বলছেন, পর্যটক কমে যাওয়ায় কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন, বিদুৎ বিল ও অন্যান্য খরচ মেটাতে বিপাকে পড়েছেন তাঁরা।

স্থানীয় সাংবাদিক সুফল চাকমা  বলেন, পর্যটন শিল্প বিকাশে বড় বাধা প্রশাসন আর ব্যবসায়ীদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা, পরিকল্পনার অভাব এবং সংশ্লিষ্টদের মাত্রাতিরিক্ত লোভ। অন্যদিকে অপরিকল্পিত ও অনুমোদনহীন হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট, পরিবহনসহ সবকিছুই দিনদিন অস্বাভাবিক বাড়ছে। যার টাকা আছে, তিনি একটি  হোটেল ও কটেজ নির্মাণ করে ফেলছেন। মান ও চাহিদা থাকুক বা না থাকুক। পর্যটকবাহী অধিকাংশ গাড়ির কাগজপত্র ঠিক নেই, চালকদের নেই লাইসেন্স।বেশিরভাগ চালকই এখন দুই-তিনটি পর্যটকবাহী গাড়ির মালিক। তাদের পেছনে রয়েছে সমিতির শক্তি।স্থানীয় লেখক ও গবেষক মংচানু মারমা বলেন, পর্যটনসহ নানা বিষয় নিয়ে জেলা পরিষদ ও প্রশাসনের মধ্যে একটি নীরব দ্বন্দ্ব রয়েছে। এ কারণে ২০১৪ সালে পর্যটন খাতকে পার্বত্য জেলা পরিষদের কাছে ন্যস্ত করা হলেও পরিষদ সঠিকভাবে কাজ করতে পারছে না। এছাড়া জেলা প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও পর্যটন ব্যবসায় জড়িত। ফলে তারা কারো অনিয়ম-বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারছেন না।

অপরদিকে, টানা কয়েক বছরের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর পর্যটকের আনাগোনা কিছুটা বেড়েছে রুমায় অবস্থিত দেশের অন্যতম উঁচু পর্বত পর্বতশৃঙ্গ কেওক্রাডং, বগালেক, রিঝুক ঝর্ণা (রিঝুক জলপ্রপাত), রোয়াংছড়ি দেবতাকূম, শীলবান্ধা ঝর্ণা ও থানচির তমাতঙ্গী, রেমাক্রীর জলপ্রপাত, বড়মদক, রাজাপাথর ও নাফাকূম পর্যটন স্পট। ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, মৌসুম অনুযায়ী পর্যটন স্পটগুলোতে কাঙ্খিত পর্যটক নেই। এজন্য  প্রশাসনের অবহেলা, অতিরিক্ত পরিবহন খরচ ও সিন্ডিকেট দায়ী।

ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয়রা বলেন, পর্যটন খাতে  প্রশাসনের তদারকি নেই। বিশেষ করে পরিবহন সেক্টর ও খাবার দোকান, রেস্টুরেন্টগুলোর ওপর প্রশাসনের কোনো  নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ নেই বললেই চলে। এতে অতিরিক্ত গাড়িভাড়া ও খাবারের দাম গুণতে হচ্ছে পর্যটকদের। যে পর্যটক একবার আসেন, তিনি আর দ্বিতীয়বার আসছেন না। ফলে পর্যটকের সংখ্যা কমছে।

আবাসিক হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরা জানান, প্রায়ই তিন-চার দিনের বুকিং দিয়ে আসা পর্যটকরা একদিন থাকলেও পরদিনই বুকিং বাতিল করে চলে যাচ্ছেন।  বুকিং বাতিলের সময় তারা অভিযোগ করেন, এখানে সবকিছুতেই অতিরিক্ত খরচ। এতে  বাজেট সংকুলান করতে পারছেন না তারা।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, নিয়ম অনুযায়ী হোটেল-মোটেল, কটেজ, পরিবহন, খাবার হোটেল-রেস্টুরেন্ট ও পণ্যের দোকানগুলোতে মূল্য তালিকা টাঙিয়ে রাখার নির্দেশনা থাকলেও তা অমান্য করা হচ্ছে। বিশেষ করে পরিবহন ও খাবার হোটেলগুলোতে এই নির্দেশনা অমান্যের প্রবণতা বেশি দেখা যায়। তারা ইচ্ছামতো দাম ও ভাড়া নিচ্ছেন।

সরেজমিনে জেলা শহরের বার্মিজ মার্কেট ও একাধিক পর্যটন স্পট ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে পর্যটকের উপস্থিতি খুবই কম। প্রায় ফাঁকা জেলা শহরে অধিকাংশ হোটেল-মোটেল ও কটেজ, বার্মিজ মার্কেট, দোকানপাট এবং প্রান্তিক লেক, স্বর্ণজাতি (বৌদ্ধটিস ট্যাম্পল) ও রামজাদির মতো স্পটগুলো। তবে শহরের নীলাচল, মেঘলা ও দুরবর্তী পর্যটনস্পট শৈলপ্রপাত, চিম্বুক ও নীলগিরিতে কিছুটা পর্যটক উপস্থিতি দেখা গেছে।

শহরে মধ্যমপাড়া মগবাজারস্থ হ্লাসাইন বার্মিজ স্টোরে প্রবেশ করে দেখা যায়, সেখানে  প্রায় ৬০ বছর বয়সী এক মারমা নারী মিয়ানমার থেকে আমদানি করা থামী কাপড় (পাহাড়ি নারীদের লুঙ্গি) বিক্রি করছেন। মাখিং মারমা নামের ওই দোকানি বলেন, পর্যটন মৌসুম চললেও পর্যটক নেই বললেই চলে। বেচাবিক্রি কমে গেছে। তবে লোকাল কিছু কাস্টমারকে খুচরা দুই-এক পিস পণ্য বিক্রি করে দোকান ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল ও কর্মচারীদের বেতন বহন করতে হচ্ছে।

অপর পাশে হ্লাহ্লা বার্মিজ মার্কেটে ঢুকে দেখা যায়, প্রায় ১৫টি দোকানের মালিক ও কর্মচারীরা অলস বসে আছেন। এসময় হেলেন বার্মিজ স্টোরের কর্মচারী উমা সাং মারমা বলেন, পর্যটক না থাকায় পুরো অক্টোবর মাসজুড়ে তেমন বেচাবিক্রি হয়নি। পুরো মাসে মাত্র চার-পাঁচ হাজার টাকার মালামাল বিক্রি হয়েছে, যা দিয়ে চলতি মাসের দোকান ভাড়াও দেওয়া যাবে না।

থানচি বাসস্ট্যান্ড এালাকায় অবস্থিত রুবাইকা স্টোরের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ রুবেল বলেন, অন্যান্য বছরের চেয়ে এবছর পর্যটক খুবই কম। প্রতিদিন ৮-১০ হাজার টাকা বিক্রি উঠছে না। অথচ অন্য বছর এই সময়ে প্রতিদিন ৫০ হাজার, এক লাখ টাকার পণ্য বিক্রি হতো।

জেলা শহরের হোটেল গার্ডেন সিটির মালিক জাফর উল্লাহ বলেন, বর্তমানে স্থানীয় পর্যটকের চেয়ে অস্থায়ী পর্যটকের সংখ্যা বেশি। অতিরিক্ত পরিবহন খরচের কারণে পর্যটকরা সকালে এসে রাতেই ফিরে যাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার, শুক্রবার ও শনিবার তাঁর হোটেলের ২৬টি কক্ষের মধ্যে মাত্র ছয়-সাতটি করে কক্ষ ভাড়া হয়েছে, যা দিয়ে কর্মচারীদের বেতনও হবে না।

থানচি বাসস্ট্যান্ডে মোহন নামের এক পর্যটক জানান, তিনি পোল্যান্ডে পড়াশোনা করেন। ছুটিতে দেশে এসে ১৬ বন্ধু মোটরবাইকযোগে রুমার কেওক্রাডং যাচ্ছেন। ওখানে  রাত্রী যাপন করবেন। মোটরবাইকে কেন প্রশ্ন করলে বলেন, এখানে পরিবহন  খরচ অনেক বেশি। দুইটি মাহিন্দ্র গাড়ি ভাড়া ১৭ হাজার করে ৩৪ হাজার টাকা। তাই ঝুঁকিপূর্ণ সড়ক জেনেও বাধ্য হয়ে মোটরবাইকে কেওক্রাডং ভ্রমণে যাচ্ছেন তাঁরা।

জানা গেছে, জেলা শহর থেকে রুমা সদর পর্যন্ত চার হাজার টাকা। সেখান থেকে বগালেক-কেওক্রাডং ছয় হাজার টাকা। কিন্তু পরিবহন মালিক সমিতির সিন্ডিকেট কেওক্রাডং ভাড়া নিচ্ছেন ১৭ হাজার টাকা করে। ফলে পর্যটকদের অতিরিক্ত খরচ বহন করতে হচ্ছে।

বান্দরবান জিপ-মাইক্রো-মাহিন্দ্র মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, জেলা শহর থেকে কেওক্রাডং মাহিন্দ্র জীপ (চাঁদের গাড়ি) ভাড়া ১৪ হাজার টাকা, তাও (সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত), রাত যাপন করলে অতিরিক্ত তিন হাজার টাকা যোগ হয়ে মোট ভাড়া ১৭ হাজার টাকা। আর নীলগিরি ভাড়া পাঁচ হাজার ৩০০ টাকা, দেবতাকূম সাড়ে চার হাজার টাকা, থানচির তমাতঙ্গী সাড়ে আট হাজার এবং রাত যাপন করলে সাড়ে ১০ হাজার টাকা।

মালিক সমিতির লাইনম্যান ফকরুল জানান, জেলায় পর্যটকবাহী সাড়ে ৩০০ মাহিন্দ্র ও জিপ গাড়ি রয়েছে। গাড়ির ভাড়াগুলো মালিক সমিতির নির্ধারণ করা।

স্থানীয়রা জানান, সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী পরিবহন ভাড়া কিলোমিটার প্রতি  আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা। পাহাড়ি এলাকা হিসেবে একটু বাড়তি নিলেও পাঁচ-সাত হাজার টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়। কিন্তু ১০-১২ গুণ বেশি টাকা পর্যটকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট গাড়িমালিক ও চালকরা।

পর্যটক আল আমিন বলেন, আমরা গত মঙ্গলবার ঢাকা থেকে কক্সবাজারে যাই। সেখানে আমাদের চার দিনে হোটেল ভাড়া, খাওয়া ও যাতায়ত খরচ হয়েছে মাত্র ৩৫ হাজার টাকা। আর বান্দরবানে একদিনে খরচ হয়েছে প্রায় ১৮ হাজার টাকা, যা অতিরিক্তের চেয়ে অতিরিক্ত।

ঢাকার যাত্রাবাড়ীর বাসিন্দা মো. মাসুম বলেন, ৭০টি মোটরসাইকেলে করে বিভিন্ন পেশার ১৩৮ জন নারী-পুরুষের একটি দল তিন দিনের ভ্রমণে বান্দরবান এসেছে। তিনি বলেন, এখানে পরিবহন ও খাবার খরচ অতিরিক্ত বেশি। তাই খরচ কমাতে আমরা মোটরসাইকেল নিয়ে এসেছি।

স্থানীয়রা বলছেন, নিষেধাজ্ঞা ও পাহাড়ের নানা সমস্যার কারণে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা-বাণিজ্য না হওয়ায়, বর্তমানে এখানে সবকিছুতে বাড়তি দাম। দোকান-রেস্টুরেন্টে খাবারের মান ভালো না হলেও দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি খরচ পড়ছে পরিবহনে।

প্রতিটি পর্যটন স্পটে যে পর্যটকদের দ্বিগুণ, তিনগুণ ভাড়া দিতে হচ্ছে বলে স্বীকার করেন সমিতির নেতারাও। তারা বলেন, শ্রমিক-মলিকরা অসন্তুষ্ট হবে, সেই ভয়েও নেতারা অনেক সময় অসহায় হয়ে পড়েন। এক্ষেত্রে  প্রশাসনের নজরদারি, চাপ প্রয়োগ, নির্দেশ ও  সমন্বয় বাড়ানো প্রয়োজন। প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ থাকলে সমিতিগুলো সমন্বয় করে প্রতিটি সেক্টরে ভাড়া ও দাম কমিয়ে পর্যটকদের অতিরিক্ত খরচ সাশ্রয় হয়।

জেলা হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন বলেন, পর্যটন খাতের সব সেক্টরে সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। এখানে পর্যটকদের একদিনে যে  খরচ হয়, তার সঙ্গে আর কিছু টাকা যোগ করলে বিদেশে ঘুরে আসতে পারবেন তারা। তাই দিনদিন পর্যটকের সংখ্যা কমছে।

পর্যটন বিভাগ জেলা পরিষদকে ন্যস্ত করা হলেও এখনও  প্রশাসনিক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে গেছে বলে জানান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজামা লুসাই। তিনি বলেন, পর্যটনসহ অন্যান্য বিষয়ে জেলা পরিষদের সঙ্গে জেলা প্রশাসন সমন্বয় করছেন না। অবকাঠামো উন্নয়নে পরিষদ কাজ করলেও নিয়ম-শৃঙ্খলা, আইন-শৃঙ্খলাসহ অনেক বিষয়ে পরিষদ কাজ করতে পারছে না। তিনি জেলার পর্যটন শিল্পের বিকাশে জেলা প্রশাসন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ পর্যটন শিল্পের সঙ্গে  জড়িত সংশ্লিষ্টদেরকে জেলা পরিষদকে সহযোগিতার আহ্বান জানান।

ব্যয়বহুল পর্যটন এলাকায় পরিণত হয়েছে বলে স্বীকার করে জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি বলেন, অন্যান্য মৌসুমে পর্যটক কম হওয়ার আশঙ্কায় পর্যটন সংশ্লিষ্টরা, বিশেষ করে পরিবহনে জড়িতরা বেশি মুনাফা করার চেষ্টা করেন। তিনি  বলেন, পর্যটন খাতকে আরো বিকাশে ও সুন্দর শৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি করতে হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট; খাবার হোটেল; পরিবহন মালিক-শ্রমিকের সমিতি; সমাজ, রাজনীতি, ছাত্র প্রতিনিধিসহ সব স্তরের মানুষকে নিয়ে সমন্বয় ও মতামতের ভিত্তিতে একটি নীতিমালা প্রণয়নের কাজ করছে প্রশাসন। নীতিমালা প্রণয়নের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

  • Print
  • উত্তরা নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন:
এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৫ | Technical Support: Uttara News Team
themesba-lates1749691102