গরুর জন্য আলাদা হোটেল! শুনলেই প্রথমে কেউ হাসবে, কেউ অবিশ্বাস করবে। কিন্তু রংপুরের ধর্মদাস বারো আউলিয়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ঘটনা পুরোপুরি সত্য। এখানে মানুষ নয়, বরং গরুরাই রাত কাটায় ‘আবাসিক হোটেলে’। মাত্র ৫০ টাকায় প্রতিটি গরু বিশ্রাম নিচ্ছে আধুনিক হোটেলের মতো জায়গায়।
রংপুর মহানগরীর মডার্ন মোড়ের পাশে গড়ে ওঠা এই গরুর হোটেলটি প্রতিষ্ঠা করেন স্থানীয় উদ্যোক্তা আসানুর রহমান। প্রায় ৭-৮ বছর আগে গরু ব্যবসায়ীদের দুর্ভোগ দেখে তার মাথায় আসে এই ব্যতিক্রমধর্মী ভাবনা। তিনি বলেন, ‘বৃষ্টি, ঝড় বা দীর্ঘ যাত্রায় গরু রাখার নিরাপদ জায়গা ছিল না। এখন তারা নিশ্চিন্তে বিশ্রাম নিতে পারে। ব্যবসায়ীরাও স্বস্তিতে থাকেন।’
লালবাগ, শঠিবাড়ি, বড়াইবাড়ি, আমবাড়ি, বেতগাড়ি ও আফতানগর হাট থেকে গরু কিনে এনে এখানে রাখেন ব্যবসায়ীরা। এরপর তারা ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা কিংবা ফেনীর পথে যাত্রা করেন।
এক রাতের জন্য ভাড়া মাত্র ৫০ টাকা। দিনে গড়ে ৩০-৪০টি গরু এখানে থাকে। কোরবানি মৌসুমে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় একশর বেশি।
এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ এখন রংপুরের আলোচ্য বিষয়। স্থানীয় অনেকে বলেন, আসানুর রহমান শুধু গরু নয়, মানুষেরও উপকার করছেন। তার হোটেল ঘিরে গড়ে উঠেছে নতুন কর্মসংস্থান। গরুর খাবার সরবরাহকারী, পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও পরিবহন শ্রমিকদের জন্য সুযোগ।
উদ্যোক্তা আসানুর রহমান বলেন, গরু নিরাপদে রাখার পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের কষ্ট কমানোই আমার উদ্দেশ্য। এখন হোটেলকে ঘিরে প্রায় ১০-১২ জনের কর্মসংস্থান হয়েছে। বর্তমানে এখানে ১০০টি গরু রাখার ব্যবস্থা আছে। ভবিষ্যতে এটিকে আরও বড় করার পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া গরুর জন্য আলাদা গোসলখানা, মেডিক্যাল কর্নার ও বিশ্রাম এলাকা তৈরি করা হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাই গরুদের জন্যও ‘হেলদি ট্রাভেল’ অভিজ্ঞতা দিতে। এ উদ্যোগ একদিন দেশের অন্যান্য জায়গাতেও ছড়িয়ে পড়বে।