শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:২৬ পূর্বাহ্ন

ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা: রাজবাড়ীতে সকাল থেকেই শুরু অভিযান

ন্যাশনাল ডেস্ক
  • আপডেট টাইম: শনিবার, ৪ অক্টোবর, ২০২৫
সংগৃহীত ছবি | উত্তরা নিউজ

ইলিশের নিরাপদ প্রজনন নিশ্চিতে মধ্যরাত থেকে বন্ধ হয়েছে ইলিশ মাছ ধরা। মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে আগামী ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২২ দিন পদ্মাসহ দেশের বিভিন্ন নদ-নদী ও সাগরে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরায় এই নিষেধাজ্ঞা থাকবে।

নিষেধাজ্ঞার প্রথম দিন শনিবার (৪ অক্টোবর) সকাল থেকেই কঠোর অবস্থানে রয়েছে প্রশাসন। অভিযান সফল করতে প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করবে নৌপুলিশ ও কোস্টগার্ড। সকাল থেকে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ (ইউএনও) মৎস্য বিভাগ নদীতে মহড়া দিচ্ছে। কোথাও ইলিশ মাছ ধরার নৌকা বা ট্রলার দেখলেই তারা অভিযান চালাচ্ছে।

মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, রাজবাড়ী জেলায় পদ্মা নদীর অংশ রয়েছে ৫৭ কিলোমিটার। এ ছাড়া, গড়াই, হড়াই ও চন্দনা নদী এ জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞায় রাজবাড়ী, গোয়ালন্দ, কালুখালী ও পাংশা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চলছে প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা মেনে চলতে জেলে পল্লীগুলোতে লিফলেট বিতরণের পাশাপাশি নদী তীরবর্তী এলাকায় করা হয়েছে মাইকিং। এই সময়ে কাজ না থাকায় ইলিশ আহরণে সংযুক্ত জেলেদের ২৫ কেজি করে ভিজিএফের চাল দেবে সরকার।

এ দিকে মধ্যরাত থেকে ইলিশ মাছ ধরা বন্ধ হয়ে যাবে বিধায় জেলেরা জাল ও নৌকা নিয়ে নদী থেকে তীরে উঠে এসেছেন। এই ২২ দিন তারা জাল ও নৌকা মেরামতের কাজ করবে বলে একাধিক জেলে জানান। এ ছাড়া, ২৫ কেজি ভিজিএফের চাল বরাদ্দ পেতে সঠিকভাবে তালিকা তৈরির দাবি জানিয়েছেন তারা।

কয়েকজন জেলে জানান, মধ্য রাত থেকে আগামী ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন সারা দেশে ইলিশ মাছ আহরণ, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় সম্পন্ন নিষিদ্ধ থাকবে। এই নিষিদ্ধের সময় আমাদের ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হবে যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। আমরা এই ২২ দিন নদীতে নামতে পারবো না বিধায় আর্থিকভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হবো। কারণ আমাদের দাদন নেওয়া রয়েছে, বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নেওয়া আছে। সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ থাকবে জেলেদের আরও সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর জন্য।

দৌলতদিয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ত্রিনাথ সাহা বলেন, জেলেদের ২২ দিন ধৈর্য ধরে মা ইলিশ রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। সরকার এ সময় বিকল্প কর্মসংস্থান ও সহায়তা দেবে। তবুও যদি কেউ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নদীতে নামে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. নাহিদুর রহমান বলেন, নিষিদ্ধ সময় নদী থেকে ইলিশ আহরণ, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় সম্পন্ন নিষেধ। যারা এই আইন অমান্য করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাজবাড়ী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাহবুব উল হক বলেন, মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানকে সামনে রেখে আমরা মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে প্রচার প্রচারণা চালিয়েছি। সেইসঙ্গে মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান চলাকালীন জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগ সমন্বয় করে কাজ করবে। এ ছাড়া, নদীতে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করা হবে। এই ২২ দিন ইলিশ তালিকাভুক্ত ৫ হাজার ৪৯৭ জন জেলেকে ২৫ কেজি করে ভিজিএফের চাল বিতরণ করা হবে।

রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক সুলতানা আক্তার বলেন, মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের ২২ দিন জেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট সার্বক্ষণিক কাজ করবে। ইলিশ আমাদের জাতীয় সম্পদ, এই সম্পদকে রক্ষা করার জন্য প্রশাসন সবসময় মাঠে থাকবে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

  • Print
  • উত্তরা নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন:
এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৫ | Technical Support: Uttara News Team
themesba-lates1749691102