জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তুলে কমিশনের সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার। শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে নতুন কলা ভবনের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, অসুস্থতা সত্ত্বেও তিনি নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশ নেন। তবে পুরো প্রক্রিয়ায় যে অব্যবস্থাপনা ও অনিয়ম ঘটেছে, তার দায় নিতে তিনি প্রস্তুত নন। এজন্য কমিশনের সদস্য পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচন কমিশনের অসহযোগিতা ও নানা ত্রুটি পুরো নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বিতর্কিত করেছে। সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য বারবার অনুরোধ জানালেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তার ভাষায়, “আমার মতামতকে বারবার উপেক্ষা করা হয়েছে। কমিশনে দায়িত্বশীল হিসেবে আমি বারবার ত্রুটির কথা বললেও তা সংশোধনের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।”
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, শুক্রবার বিকেলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার একটি সভা ডাকেন। সেই সভায় ভোট গণনা আপাতত স্থগিত রাখার প্রস্তাব তিনি উত্থাপন করেছিলেন। কিন্তু নামাজ পড়ে ফেরার পর তিনি দেখেন ভোট গণনা শুরু হয়ে গেছে। এতে তিনি স্পষ্টভাবে বুঝতে পারেন যে তার মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।
মাফরুহী সাত্তার বলেন, “আমি অনেক অনিয়ম ও মারাত্মক ত্রুটি দেখেছি, যা পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। অথচ অভিযোগগুলোর প্রতি দৃষ্টি না দিয়েই ভোট গণনা চালিয়ে যাওয়া হয়েছে। এতে আমার পক্ষে দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়।”
তিনি আরও জানান, পদত্যাগের জন্য তাকে চাপ দেওয়া হয়নি, বরং পদত্যাগ না করার জন্য নানা চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিল। কিন্তু একজন শিক্ষক ও দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে তিনি ন্যায়সঙ্গত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। তার বক্তব্যে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “আমি কাউকে ভয় করি না, এখনো করব না। সঠিক মনে হওয়ায় এই পদক্ষেপ নিয়েছি, এর দায়ভার আমি নেব না।”