সাম্প্রতিক সময়ে দেশে মব সহিংসতা ভয়াবহ মাত্রায় পৌঁছেছে। বিগত চার বছরে মব সন্ত্রাসে মৃত্যুহার প্রায় পাঁচগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। অতীতে সীমিত অপরাধমূলক ঘটনায় গণপিটুনির ঘটনা হলেও এখন চোর, ডাকাত বা ধর্ষণের সন্দেহে মানুষকে নির্বিচারে বেদম পিটিয়ে হত্যা করা হচ্ছে। আহত হওয়ার ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
বেসরকারি সংস্থা ও পুলিশ সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে মব সন্ত্রাসে নিহত ২৯ জনের সংখ্যা ২০২৪ সালে বেড়ে ১৪৬-এ দাঁড়িয়েছে। চলতি বছরে (আগস্ট ২০২৪–জুলাই ২০২৫) ১৭৭ জন মব সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছে। এর মধ্যে প্রথম সাত মাসে নিহত ৪৭ জন হলেও, শেষ পাঁচ মাসে মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যকারিতা কমে যাওয়ায় মবের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে মব সহিংসতায় ৮৯ জন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ঢাকায় ৪৫, চট্টগ্রামে ১৭ ও বরিশালে ১১ জন। সামাজিক মনোবিজ্ঞানীদের মতে, দেশে মব জাস্টিসের কারণে তরুণ সমাজের মধ্যে আইনের প্রতি অনাস্থা বেড়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, আইনের শাসন দুর্বল থাকা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অপর্যাপ্ত কার্যক্রম, গোয়েন্দা তথ্যের ঘাটতি এবং রাজনৈতিক দলের স্বৈরাচারী মনোভাবই মব সহিংসতার মূল কারণ।
সরকার মব সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে কিছু অগ্রগতি করেছে, তবে সাম্প্রতিক কিছু এলাকায় তা আবার মাথাচাড়া দিয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী অপরাধ দমনে প্রস্তুত রয়েছেন, এবং জরুরি সেবা ৯৯৯-এর মাধ্যমে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।