হালাল প্রসাধনপণ্যের উপাদান নির্বাচনের ক্ষেত্রে যেমন শূকরের মতো হারাম প্রাণীগুলোর চর্বিসহ অন্যান্য দেহাংশ পরিহার করা হবে, তেমনি মৃত প্রাণী বা হালাল পদ্ধতিতে জবাই করা হয়নি এমন প্রাণীর দেহাংশও পরিহার করা হবে। কেননা ইসলামের দৃষ্টিতে প্রাণী হালাল হওয়া এবং তা হালাল পদ্ধতিতে জবাই করা উভয়টি আবশ্যক। পণ্য উৎপাদনের সময় যে মেশিনারিজে হারাম উপাদান ব্যবহার করা হচ্ছে তা শরয়ি পদ্ধতিতে পবিত্র না করে তাতেই হালাল উপাদানগুলো ব্যবহার করা যাবে না। পণ্য প্যাকেটিং ও লেবেলিংয়ের সময় কম্পানিকে দায়িত্বের সঙ্গে উপাদানগুলোর নাম ও পরিমাণ প্রকাশ করতে হবে এবং পণ্যকে হালাল বলে ঘোষণা করতে হবে, যেন গ্রাহকের মন থেকে যাবতীয় সংশয় দূর হয়।ইউরো মনিটরের বরাতে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বলছে, শুধু মুসলিম দেশগুলোতে নয়, বিশ্বব্যাপী হালাল পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। কসমেটিকস বা প্রসাধনপণ্যের বাজারও ক্রমেই প্রসারিত হচ্ছে। অর্থাৎ ভোক্তা পর্যায়ে হালাল-হারামের পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। হালাল পণ্যের বাজার ধরতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে হালাল পণ্যের সনদ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। যেমন—যুক্তরাজ্যের হালাল ফুড অথরিটি (এইচএফএ), হালাল মনিটরিং কমিটি (এইচএমসি), জার্মানির হালাল কন্ট্রোল জিএমবিএইচ, হালাল কোয়ালিটি কন্ট্রোল (এইচকিউসি), আমেরিকার ইসলামিক সার্ভিস অব আমেরিকা (আইএসএ)।
মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া এ বিষয়ে বিশেষ অগ্রগতি লাভ করেছে। ২০১৯ সাল থেকে ইন্দোনেশিয়া হালাল সনদ গ্রহণ ও লেবেলিং বাধ্যতামূলক করেছে। ডিপার্টমেন্ট অব ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট মালয়েশিয়াকে (জাকিম) একটি নির্ভরযোগ্য হালাল সনদ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান মনে করা হয়। রাষ্ট্রীয় এসব উদ্যোগ হালাল পণ্যের বাজারে ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার অবস্থান শক্তিশালী করেছে। বাংলাদেশে ২০০৭ সাল থেকে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ পণ্যের হালাল সনদ প্রদান করে আসছে। ২১ নভেম্বর ২০২৩ বাংলাদেশ সরকারের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় ‘হালাল সনদ নীতিমালা-২০২৩’ প্রকাশ করে। তবে অভিযোগ রয়েছে, মাঠ পর্যায়ে নীতিমালার বাস্তবায়ন জোরালো নয়। পণ্যের গুণগত মান ও হালাল সনদ গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করা গেলে হালাল কসমেটিকসের বাজার দেশে ও দেশের বাইরে প্রসারিত হবে।