উজানে ভারি বৃষ্টি ও ঢলের প্রভাবে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে লালমনিরহাটের বিস্তীর্ণ চর ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। তবে ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে নদীর পানি বিপদসীমার নিচে নামলেও দুর্ভোগ কমেনি। এখনো পানিবন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে নদীতীরবর্তী কয়েক হাজার পরিবার।
বুধবার সকাল ৯টায় হাতীবান্ধার তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে পানি রেকর্ড করা হয় ৫২.৭০ মিটার, যা বিপদসীমা (৫২.১৫ মিটার) থেকে ৮ সেন্টিমিটার নিচে। অথচ মঙ্গলবার রাত ৯টায় এ পানি ছিল বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপরে।
হঠাৎ পানিবৃদ্ধির কারণে প্লাবিত হয় পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার বহু চরাঞ্চল। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মধ্যে রয়েছে দহগ্রাম, গড্ডিমারী, দোয়ানী, সানিয়াজান, শৈইলমারী, নোহালী, মহিষখোচা, গোবর্ধন, খুনিয়াগাছ, কুলাঘাট ও মোগলহাট ইউনিয়ন।
বাড়িঘর, ফসলি জমি, রাস্তা ও পুকুর ডুবে যাওয়ায় ভোগান্তির শিকার সাধারণ মানুষ। নৌকা ও বাঁশের ভেলায় চলছে যাতায়াত। বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা—আমন ধান ও মৌসুমি ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে, পুকুরের মাছ ভেসে গেছে।
খুনিয়াগাছের আবু তাহের বলেন, “চারপাশে পানি, কোথাও যাওয়ার উপায় নেই।” মহিষখোচার ইয়াকুব আলী জানান, “রাতে রান্না হয়নি, এখনো কেউ খবর নেয়নি।”
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, ভারতের উজানে ভারি বৃষ্টির ফলে হঠাৎ পানি বেড়ে বিপদসীমা অতিক্রম করে, তবে বুধবার সকাল থেকে পানি দ্রুত হারে নামছে।
লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার জানিয়েছেন, “ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি হচ্ছে, পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদ রয়েছে। দ্রুত বিতরণ শুরু হবে।”