সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ১০:১৭ অপরাহ্ন

ইসরায়েল আমেরিকা নির্ভর, যুদ্ধ থেকে টানলেন ট্রাম্প!

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক
  • আপডেট টাইম: সোমবার, ১৪ জুলাই, ২০২৫
সংগৃহীত ছবি | উত্তরা নিউজ

দখলদার ইসরাইলের হাইফা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক বিশেষজ্ঞ বেনজামিন মিলার বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ছাড়া ইসরায়েল কিছুই করতে পারে না”। হাইফা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ বেনজামিন মিলার-কে এ প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, “যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ছাড়া ইসরায়েল কিছু করতে পারে কি না?” তিনি এক কথায় বলেন, “না, পারে না”।

পার্সটুডে’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র দশকের পর দশক ধরে ইসরায়েলকে সামরিকভাবে সহায়তা দিয়ে এসেছে, কিন্তু এরপরও ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধে ইসরায়েলের অক্ষমতা ও দুর্বলতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। স্বাধীনতার পর থেকে ইহুদিবাদী ইসরায়েল মার্কিন সমর্থন ও সামরিক আধিপত্যের ওপর ভর করে পশ্চিম এশিয়ায় কিছু প্রভাব তৈরি করলেও, তা মূলত কেবল নিরাপত্তাগত বিষয়ে সীমাবদ্ধ ছিল।

তুফান আল-আকসা, গাজা যুদ্ধ, হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধ বিশেষ করে ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ থেকে এটা প্রমাণিত হয়েছে, ইসরায়েল যে একাকী একদিনও টিকে থাকতে পারবে না।

যুদ্ধাপরাধী নেতানিয়াহু ইরানের সঙ্গে যুদ্ধের পর দাবি করেছিল, ইসরায়েল বড় শক্তিগুলোর কাতারে চলে এসেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি মন্তব্যই এর জবাব হিসেবে যথেষ্ট, আর তাহলো- “আমেরিকা ইসরায়েলকে ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ থেকে উদ্ধার করেছে।”

ইসরায়েলের আঞ্চলিক আধিপত্যের স্বপ্ন

“আঞ্চলিক হেজেমনি” বলতে এমন কোনো দেশকে বোঝানো হয়, যা একটি নির্দিষ্ট ভূগৌলিক অঞ্চলে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ও কর্তৃত্ব রাখে এবং অর্থনৈতিক ও সামরিকভাবে তা নিয়ন্ত্রণে সক্ষম। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশিষ্ট তাত্ত্বিক স্টিফেন ওয়াল্টের মতে- সত্যিকারের আঞ্চলিক শক্তিগুলো এতটাই শক্তিশালী হয় যে, তাদের জন্য কোনো প্রতিবেশী হুমকি সৃষ্টি করতে পারে না এবং কেউ প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠতে পারে এমন আশঙ্কাও তার থাকে না।

তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ইসরায়েল এই মানদণ্ড পূরণে সক্ষম নয় বরং ইয়েমেন কিংবা গাজায় হামাসের মতো দলগুলো প্রায় দুই বছরের যুদ্ধ ও ধ্বংসযজ্ঞ সত্ত্বেও ইসরায়েলকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে যাচ্ছে।

ইসরায়েলের অসহায়ত্বের নানা প্রমাণ

আমেরিকা বিহীন ইসরাইল শূন্য; যুদ্ধ থেকেও উদ্ধার করেছে ট্রাম্প

সামরিক সীমাবদ্ধতা

২০২৪ সালে যুদ্ধের কারণে ইসরায়েলের সামরিক ব্যয় ৬৫% বেড়ে ৪৬.৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে—১৯৬৭ সালের ছয় দিনের যুদ্ধের পর এটি সর্বোচ্চ। সামরিক খাতে বিশাল অংকের অর্থ ব্যয় করেও তারা হামাসকে দুর্বল করতে পারেনি। মডার্ন ডিপ্লোমেসি পত্রিকা বলেছে, ২০২৫ সালের জুনে ইসরায়েলের হামলা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি থামাতে ব্যর্থ হয়েছে, যদিও নেতানিয়াহু ভিন্ন দাবি করেছিলেন।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা, সতর্কতা ও বিজয়ের তিনস্তরবিশিষ্ট সামরিক নীতি ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ব্যর্থ হয়ে গেছে বলে ইসরায়েলি জাতীয় নিরাপত্তা গবেষণা প্রতিষ্ঠান নিজেই স্বীকার করেছে।

আমেরিকা বিহীন ইসরাইল শূন্য; যুদ্ধ থেকেও উদ্ধার করেছে ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরতা

নেতানিয়াহু বড় বড় দাবি করলেও বাস্তবতা হচ্ছে- ইসরায়েলের সামরিক শক্তি মার্কিন ও ইউরোপীয় সহায়তার উপর নির্ভরশীল ফরেন পলিসি জানায়, ইসরায়েলের প্রযুক্তিগত উন্নয়নের পেছনে মূল অবদান যুক্তরাষ্ট্রের। প্রতিবছর তারা যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৩.৮ বিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা পায় এবং জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক পরিসরে অন্ধ সমর্থন উপভোগ করে।

মিলার বলেছেন, “যদি যুক্তরাষ্ট্র অস্ত্র সহায়তা বন্ধ করে দেয়, তাহলে ইসরায়েল গভীর সংকটে পড়বে।”

আমেরিকা বিহীন ইসরাইল শূন্য; যুদ্ধ থেকেও উদ্ধার করেছে ট্রাম্প

আঞ্চলিক বৈধতার সংকট

স্টিফেন ওয়াল্টের মতে, পশ্চিম তীর ও বায়তুল মুকাদ্দাস দখল, গাজা যুদ্ধ এবং ফিলিস্তিনি গণহত্যার কারণে বিশ্বে ইসরায়েল একটি আগ্রাসী ও দখলদার শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।

মডার্ন ডিপ্লোমেসি পত্রিকা জানিয়েছে- যেসব দেশ ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রেখেছে, তারা এই সম্পর্ক রেখেছে মূলত পশ্চিমা চাপে, ইসরায়েলের প্রভাব বা হেজেমনির কারণে নয়।

নিউজটি শেয়ার করুন..

  • Print
  • উত্তরা নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন:
এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৫ | Technical Support: Uttara News Team
themesba-lates1749691102