যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরুর জন্য হামাসের প্রস্তুতির ঘোষণার পর ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু একটি প্রতিনিধিদলকে কাতারে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রোববার দলটি কাতার যাবে এবং আলোচনা হবে যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি নিয়ে।
তবে নেতানিয়াহুর দপ্তর জানিয়েছে, হামাস যে সংশোধিত প্রস্তাব দিয়েছে, তা ইসরাইলের কাছে “অগ্রহণযোগ্য”। বিবৃতিতে বলা হয়, হামাস কাতারি প্রস্তাবে যেসব পরিবর্তন চায় তা গ্রহণযোগ্য নয়, তবে নেতানিয়াহু আলোচনায় অংশ নিতে সম্মতি দিয়েছেন।
গাজা থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, শনিবার ইসরাইলি হামলায় অন্তত ৪২ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলমান সংঘাতে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৫৭,৩৮৮ ছাড়িয়েছে।
হামাস জানিয়েছে, তারা “অবিলম্বে ও আন্তরিকভাবে” আলোচনায় প্রস্তুত এবং প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি বিষয়ে তাদের জবাব কাতার ও মিসরের মাধ্যমে পৌঁছেছে। প্রস্তাবে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির কথা রয়েছে, যাতে ১০ জন জীবিত জিম্মির মুক্তি এবং মৃতদেহ হস্তান্তরের বিনিময়ে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি চাওয়া হয়েছে।
হামাস আরও দাবি জানিয়েছে— ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহারের রূপরেখা, যুদ্ধবিরতির সময় পুনরায় হামলার নিশ্চয়তা, এবং জাতিসংঘের নেতৃত্বে ত্রাণ বিতরণ ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা।
আগামী সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে নেতানিয়াহুর বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ থামাতে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে। মিশরের কূটনৈতিক নেতাদের সঙ্গেও আলোচনা চলছে।
গাজা যুদ্ধ শুরু হয়েছিল ২০২৩ সালের অক্টোবরে, হামাসের ইসরাইলে হামলার পর। সেই হামলায় ১,২১৯ জন ইসরাইলি নিহত হয়েছিলেন। এরপর থেকেই ইসরাইল গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে। এখনো প্রায় ৪৯ জন জিম্মি গাজায় অবস্থান করছেন, যাদের মধ্যে ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি ইসরাইলি বাহিনীর।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মানবিক বিপর্যয়ের মুখে থাকা গাজার জনগণের জন্য এই যুদ্ধবিরতি আলোচনা আশার আলো হয়ে উঠতে পারে। তবে হামাসের দাবি ও ইসরাইলের অবস্থানের ব্যবধান এই আলোচনা সফল হওয়ার পথে প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।