গুম তদন্ত কমিশনের দ্বিতীয় অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ৫ আগস্ট ২০২৪ পরবর্তী সময়ে প্রমাণ ধ্বংসের নানা চেষ্টার মধ্যেও দেশের প্রায় সব আটক কেন্দ্রে নির্যাতনের জন্য বিশেষভাবে তৈরি জেরা কক্ষ ও অত্যাধুনিক নির্যাতন যন্ত্রপাতির অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, র্যাব-২ ও সিপিসি-৩ কেন্দ্রে ঘূর্ণায়মান চেয়ার ব্যবহৃত হতো। র্যাব-৪ ও ডিবিতে ‘যম টুপি’ ও টাস্কফোর্স ইন্টাররোগেশন সেলে পুলি সিস্টেমের মাধ্যমে ঝুলিয়ে নির্যাতন চালানো হতো। নির্যাতনের শব্দ ঢাকতে কক্ষে সাউন্ডপ্রুফিংয়ের পাশাপাশি উচ্চস্বরে গান বাজানো হতো।
ভুক্তভোগীরা জানায়, দীর্ঘদিন শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। তাদের অর্ধেক খাবার দেওয়া হতো, চোখ বেঁধে, হাতকড়া পরিয়ে সম্পূর্ণ নির্জন কক্ষে আটকে রাখা হতো। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নির্যাতিত ব্যক্তিদের গুম করা হতো, যাতে তারা আইনি জবাবদিহির বাইরে থেকে নির্যাতনের শিকার হন।
কমিশন জানিয়েছে, নির্যাতন ছিল সুসংগঠিত ও প্রাতিষ্ঠানিক। এটি মাঠ পর্যায়ে অনুমোদিত ছিল না, বরং শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত হতো। নির্যাতনের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সংগ্রহ, জনবল প্রশিক্ষণ এবং বাজেট বরাদ্দও এই ব্যবস্থাকে সচল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
প্রতিবেদনটি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছে, এই মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় শুধু মাঠ পর্যায়ের সংশ্লিষ্টদের নয়, বরং তাদের শীর্ষ কর্তা ও কমান্ডিং অফিসারদের ওপরও বর্তায়, যারা এ কার্যক্রম অনুমোদন ও উৎসাহিত করেছিলেন।