রাজধানীর উত্তরা হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের কর্তৃপক্ষের অনিয়ম ও গাফিলতির কারণে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি মানবিক বিভাগের দুই শিক্ষার্থী—ইয়াসির আরাফাত ও সাজ্জাদ হোসেন। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের পরিবার, যাদের অভিযোগ—এডমিট কার্ড না পাওয়ায় তাদের সন্তানরা পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারেননি।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের পরিবার জানায়, কলেজ কর্তৃপক্ষ গতকাল রাত পর্যন্ত এডমিট কার্ড দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে সময়ক্ষেপণ করে। শেষ পর্যন্ত আজ সকালেও তারা কার্ড পাননি। এমনকি শিক্ষার্থীদের দাবি, অধ্যক্ষ ইভানা তালুকদার তাদের মৌখিকভাবে নির্দেশ দেন বিষয়টি কাউকে জানাতে না, নইলে পরীক্ষায় অংশ নিতে দেবে না।
সাজ্জাদের মা বিলকিস বেগমের আর্তনাদ
সাজ্জাদ হোসেনের বাবা আবদুল গফুর অভিযোগ করেন, “আমার ছেলের রোল ১০৯১, অথচ তারা সেটা পরিবর্তন করে অন্য কারও নাম ঢুকিয়েছে। এটা অর্থ লেনদেন ছাড়া সম্ভব নয়।” তিনি বলেন, “প্রিন্সিপাল সাহেবার দেওয়া প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে এখন আর ফোনও ধরছেন না। ছেলের ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা ছিনিমিনি খেলেছে।”
সাজ্জাদের মা বিলকিস বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “সকাল থেকে কলেজ গেটে দাঁড়িয়ে আছি। কেউ দেখেও না, ফোনও ধরে না। আমার ছেলের ভবিষ্যৎ শেষ হয়ে গেল।”
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইভানা তালুকদারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাংবাদিকদের ফোন ধরেননি।
তবে গভর্নিং বডির সভাপতি ও ডিএনসিসি অঞ্চল-১০-এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, বিষয়টি তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত এক শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে জড়িত শিক্ষকের নাম তিনি জানাতে পারেননি।
তিনি আশ্বস্ত করেন, “যাদের গাফিলতিতে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে—এমনকি যদি তাতে অধ্যক্ষও দায়ী হন।”