বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫, ০৭:৪০ অপরাহ্ন

বিদ্রোহ নয়, ছিল পিলখানায় পরিকল্পিত হত্যাযজ্ঞ

ন্যাশনাল ডেস্ক
  • আপডেট টাইম: বুধবার, ২৫ জুন, ২০২৫
সংগৃহীত ছবি | উত্তরা নিউজ

পিলখানা ট্র্যাজেডির তদন্তে গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন জানিয়েছে, ২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি সংঘটিত এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ছিল একটি দীর্ঘমেয়াদি ষড়যন্ত্রের ফল। আজ বুধবার (২৫শে জুন,২০২৫) রাজধানীর সাইন্সল্যাবে কমিশনের কার্যালয়ে আয়োজিত তৃতীয় সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান কমিশনের সভাপতি ও বিডিআরের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমান।

কমিশনের অগ্রগতি প্রতিবেদনে উঠে আসে—বিদ্রোহ প্রতিরোধে সময়মতো সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় হত্যাকাণ্ডটি রোধ করা সম্ভব হয়নি। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর চরম ব্যর্থতা, সশস্ত্র বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তা, রাজনৈতিক নেতৃত্বের কালক্ষেপণ ও বিভ্রান্তিকর গণমাধ্যম কাভারেজ বিদ্রোহকে আরো উসকে দেয়।

তদন্তের অগ্রগতি:

  • এখন পর্যন্ত ১৫৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে; আরও ৫০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ বাকি।

  • শহীদ পরিবারের সদস্য, বেঁচে ফেরা অফিসার, রাজনীতিবিদ, সামরিক-অসামরিক ও বেসরকারি ব্যক্তিসহ সংশ্লিষ্ট প্রায় সকল পক্ষের জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে।

  • ২৫ জন দণ্ডপ্রাপ্ত ও ২৯ জন কারামুক্ত বিডিআর সদস্যের সাক্ষ্য গ্রহণ হয়েছে।

  • ভিডিও, সিসিটিভি, বইপত্র, জাতীয় সংসদের কার্যবিবরণী, সংবাদ প্রতিবেদন ও ১০৩৮টি ইমেইলসহ বিপুল তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণাধীন।

  • সেনাবাহিনী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ববর্তী তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা সম্পন্ন।

  • বিজিবি, ডিজিএফআই ও র‍্যাব সদরদপ্তর পরিদর্শনসহ ২৫টি সরকারি-বেসরকারি সংস্থা থেকে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।

গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ:

  • হত্যাকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত ও বহুমাত্রিক ষড়যন্ত্রের অংশ।

  • সামরিক বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিষ্ক্রিয় ছিল।

  • গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর অবহেলা ও ব্যর্থতা ছিল প্রকট।

  • কিছু গণমাধ্যম বিদ্রোহকে উসকে দেয় ও সামরিক অফিসারদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে।

  • বিদেশি সংশ্লিষ্টতার তথ্য পাওয়া গেছে, যাচাই-বাছাই চলছে।

কমিশনের উদ্যোগ:

  • তদন্তের স্বার্থে ৩৩ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা।

  • পলাতকদের খুঁজে পেতে ৩টি বিশেষ বিজ্ঞপ্তি জারি।

  • তথ্য সংগ্রহে ৬টি বিদেশি দূতাবাস ও জাতিসংঘের অফিসের সাথে যোগাযোগ।

  • তদন্ত প্রতিবেদন খসড়া প্রস্তুত; কিছু সাক্ষ্য ও তথ্য সংগ্রহ প্রক্রিয়াধীন।

সময় বৃদ্ধির অনুরোধ:

বাকি সাক্ষ্যগ্রহণ, পুনঃসাক্ষ্য, বিদেশি তথ্য সংগ্রহ এবং বিশ্লেষণমূলক কাজের জন্য কমিশন চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত বৃদ্ধির অনুরোধ জানিয়েছে।

কমিশনের মন্তব্য অনুযায়ী, সময়মতো সামরিক হস্তক্ষেপ ও গোয়েন্দা তৎপরতা থাকলে এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড প্রতিহত করা সম্ভব হতো। তদন্ত এখনও চলমান এবং কমিশন শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিলের প্রস্তুতি নিচ্ছে

নিউজটি শেয়ার করুন..

  • Print
  • উত্তরা নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন:
এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৫ | Technical Support: Uttara News Team
themesba-lates1749691102