বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৮:০৮ পূর্বাহ্ন

পিরিয়ড নিয়ে লজ্জা নয়, সচেতনতা জরুরি

অনলাইন ডেক্স রির্পোট
  • আপডেট টাইম: রবিবার, ১৫ জুন, ২০২৫

‘দেশে নারীদের একটি বড় অংশ পিরিয়ড নিয়ে এখনো সচেতন নয়। অথচ এটি কোন লজ্জার বিষয় না। এ জন্য আরও সচেতনতা জরুরি। আমরা একসঙ্গে চেষ্টা করব সামাজিক ট্যাবুগুলো ভাঙতে, যেগুলো বহুদিন ধরে নারীদের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।’

নারীদের মাসিক চলাকালে পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ফ্রেশ অনন্যা এবং পিএজিএসবি’র প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেছেন।

শনিবার রাজধানীর শেরাটন হোটেলে প্যানেল আলোচনাটি আয়োজন করে দৈনিক আমাদের সময়। দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ (এমজিআই)-এর জনপ্রিয় ব্র্যান্ড ‘ফ্রেশ অনন্যা স্যানিটারি ন্যাপকিন’ এবং পেডিয়াট্রিক অ্যান্ড অ্যাডোলেসেন্ট গাইনোকোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশ (পিএজিএসবি) পৃষ্ঠপোষকতায় ‘টুগেদার ফর এ মেনস্ট্রুয়েশন-ফ্রেন্ডলি ওয়ার্ল্ড’ শীর্ষক এ প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

সেমিনার উদ্বোধন করেন পিএজিএসবি সভাপতি অধ্যাপক কোহিনূর বেগম।

তিনি বলেন, দেশে নারীদের একটি বড় অংশ পিরিয়ড নিয়ে এখনো সচেতন নয়। এটি কোনো লজ্জার বিষয় না। আমরা একসঙ্গে চেষ্টা করবো সামাজিক ট্যাবুগুলো ভাঙতে, যেগুলো বহুদিন ধরে নারীদের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

তিনি বলেন, চিকিৎসক, পৃষ্ঠপোষক, গণমাধ্যম, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সামাজিক সংগঠনের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা বিশ্বাস করি-এই আলোচনা সমাজে একটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এটি ভবিষ্যতের প্রজন্মকে আরও সচেতন, সহানুভূতিশীল এবং স্বাস্থ্যবোধ সম্পন্ন করে তুলবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এমজিআই ডিরেক্টর ব্যারিস্টার তাসনিম মোস্তফা বলেন, আমরা নারী-পুরুষ সমাজে সবাই একসঙ্গে কাজ করি। কিন্তু পিরিয়ড নিয়ে এখনো আমাদের মধ্যে লজ্জা কাজ করছে, যা এই সময়ে এসে ভাবাই যায় না। এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন করাটা খুবই জরুরি।

সেমিনারে পিরিয়ডবিষয়ক একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপনা করেন পিএজিএসবি’র মহাসচিব অধ্যাপক গুলশান আরা।

তিনি বলেন, মাসিক হলো একটি স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়া। এই সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান থাকলে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করা সম্ভব। মাসিক সম্পর্কে কোনো ধরনের লজ্জা বা অস্বস্তি বোধ করা উচিত নয়।

তিনি আরও বলেন, মাসিক চলাকালীন যোনিপথের পিএইচ লেভেল পরিবর্তিত হয় এবং এটি ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের জন্য আরও সংবেদনশীল হয়ে পড়ে। নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা এই ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

ডা. তানিয়া রহমান মিতুলের সঞ্চালনায় প্যানেল আলোচনায় প্রায় ৫০ জন ডাক্তার অংশগ্রহণ করেন।

সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন এমজিআই সিনিয়র জিএম (ব্র্যান্ড) কাজী মো. মহিউদ্দিন এবং দৈনিক আমাদের সময়ের নির্বাহী সম্পাদক মাইনুল আলম, অনলাইন ইনচার্জ মঈন বকুল ও হেড অব ডিজিটাল মার্কেটিং সরোয়ার কবির শাকিল।

আলোচনায় বক্তারা পিরিয়ড সংক্রান্ত বিভিন্ন জানা-অজানা, সামাজিক বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা এবং সেগুলো কাটিয়ে উঠতে করণীয় বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

ন্যাশনাল হাইজিন সার্ভে ২০১৮-এর তথ্যানুসারে, বাংলাদেশে মাত্র ২৯ শতাংশ নারী স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করে। অর্থাৎ প্রায় ৭১ শতাংশ নারী এখনও স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করে না। পিরিয়ডের সময় অস্বাস্থ্যকর কাপড় ব্যবহার করার ফলে সার্ভিক্যাল ইনফেকশন হতে পারে। এছাড়াও অস্বাস্থ্যকর কাপড় ব্যবহারের ফলে পরবর্তীতে বন্ধ্যাত্ব এমনকি ক্যানসারেরও ঝুঁকি থাকে। এর জন্য প্রয়োজন জনসচেতনতা।

সেই সঙ্গে নারীদের পিরিয়ডের ট্যাবু ভাঙতে ফ্রেশ অনন্যা স্যানিটারি ন্যাপকিন-এর পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। যার অংশ হিসেবে এ প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

অটোরিকশা-মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে প্রাণ গেল যুবকের

২৭ বছরে প্রথম আইসিসি ট্রফি জয় দ.আফ্রিকার

ঈদের ছুটি শেষে বেনাপোল বন্দরে আমদানি-রপ্তানি শুরু

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় যেভাবে ইসলাম ছড়িয়ে দেন চীনা নাবিক ঝেং হে

শেষ মুহূর্তে বাংলাদেশ সিরিজের দল ঘোষণা করল শ্রীলঙ্কা

ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে হামলা, ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে পালটা জবাব তেহরানের

ডেঙ্গুতে আরও ১ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৪৯ রোগী

কাপ্তাইয়ে দুর্বৃত্তের গুলিতে যুবক নিহত

ইরানের হামলায় বিধ্বস্ত এলাকায় নেতানিয়াহু

তেহরানে নতুন করে বিস্ফোরণ

 

 

ক্যানসার চিকিৎসার অভিনব পদ্ধতি প্রিসিশন অনকোলজি

 

সরকার এম শাহীন

প্রকাশ: ১৪ জুন ২০২৫, ১০:২৭ এএম

727Shares

ক্যানসার চিকিৎসার অভিনব পদ্ধতি প্রিসিশন অনকোলজি। ছবি: সংগৃহীত

আরও পড়ুন

জরায়ু ফাইব্রয়েড রোগীদের কী খাওয়া উচিত

নতুন করে সংক্রমণ বাড়ছে করোনার, সুস্থ থাকতে যা করবেন

গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস মা ও শিশুর জন্য কতটা ঝুঁকিপূর্ণ

সংসারের আয়-ব্যয় নিয়ন্ত্রণে বাজেট করবেন যেভাবে

ক্যানসারের দ্বিগুণ কার্যকরী ওষুধ উদ্ভাবনের দাবি মার্কিন গবেষকদের

জীবন্ত প্রাণীর কোষে ডিএনএ বা ডি-অক্সিরাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড থাকে। এ জিনোমিক উপাদান কোষ বৃদ্ধি, বিকাশ, গঠন, রক্ষণাবেক্ষণ এবং রোগ-বালাইসহ প্রয়োজনীয় তথ্য ধারণ ও নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।

এ জিনোমিক উপাদান প্রায় ৩.২ বিলিয়ন ডিএনয়ের সন্নিবেশে গঠিত। রাসায়নিক উপাদান অ্যাডেনিন গুয়ানিন, সাইটসিন, থায়ামিন-এর সমন্বয়ে একটি নির্দিষ্ট ক্রমানুসারে সাজানো থাকে, যা জীবন্ত প্রাণীর জেনেটিক কোড নির্ধারণ করে।

ক্যানসার সৃষ্টিকারী টিউমারের শনাক্তকরণ এবং পরীক্ষায় ডিএনএ মিউটেশন বা পরিবর্তনের ব্যতিক্রমী প্যাটার্ন লক্ষ্য করা যায়। গবেষকরা, হাজার হাজার বিভিন্ন টিউমার এবং লাখ লাখ মিউটেশন অধ্যয়ন করে এক ধরনের নির্দিষ্ট প্যাটার্ন আবিষ্কার করেছেন, যা সংক্ষেপে ‘মিউটেশনাল সিগনেচার’ হিসাবে পরিচিত। এ ‘মিউটেশনাল সিগনেচার’ দেহের ক্যানসার বিকাশের সময় নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া দ্বারা তৈরি হয় তার অন্যতম কারণ হচ্ছে ডিএনএ রেপ্লিকেশন প্রক্রিয়ার ত্রুটি।

ডিএনএ রেপ্লিকেশন একটি জৈবিক প্রক্রিয়া যা সব জীবন্ত প্রাণীর জৈবিক উত্তরাধিকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসাব কাজ করে। এ প্রক্রিয়ায় একটি মূল ডিএনএ অণু থেকে দুটি অভিন্ন ডিএনএ প্রতিনিয়ত তৈরি হতে থাকে। যদিও ডিএনএ রেপ্লিকেশন একটি অত্যন্ত সঠিক প্রক্রিয়া, মাঝে মাঝে এ প্রক্রিয়ায় ত্রুটি ঘটতে পারে ফলে ডিএনএ তার আদি বৈশিষ্ট্যর পরিবর্তে ভুল বা নতুন বৈশিষ্ট্যর ডিএনএ তৈরি করে। ফলে ক্ষতিকারক প্রোটিন তৈরি হয় এবং সঠিক কার্যকারিতা ব্যাহত হওয়াসহ শরীরে অন্য পরিবর্তন ঘটাতে পারে এবং সম্ভাব্যভাবে ক্যানসারের মতো রোগের দিকে পরিচালিত করতে পারে।

ডিএনএ রেপ্লিকেশন পদ্ধতির ত্রুটির বহু কারণ রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম ক্যানসারাস এজেন্টের সংস্পর্শ যেমন-সিগারেট, বিষাক্ত গ্যাস, আলট্রা ভায়োলেট রেডিয়েশন, ক্ষতিকারক ভাইরাস ইত্যাদিকে কারণ হিসাবে ধরা হয়। ক্যানসার আক্রান্ত একেক ব্যক্তির এ ‘মিউটেশনাল সিগনেচার’ একেক রকম হয়ে থাকে। মিউটেশনাল সিগনেচারের এ গোপন রহস্য ক্যানসার আক্রান্ত ব্যক্তির নিজস্ব জিনোমিক উপাদান স্ট্যাডির মাধ্যমে অনেকটাই শনাক্ত করা সম্ভব।

সঠিক ক্যানসার ট্রিটমেন্টের ক্ষেত্রে এ পিনপয়েন্ট ‘মিউটেশনাল সিগনেচার’ শনাক্তকরণ এবং সেই অনুযায়ী সবচেয়ে কার্যকর চিকিৎসা নির্ধারণ বর্তমান সময়ের একটা অভিনব পদ্ধতি যা পার্সোন্যালাইজড বা প্রিসিশন অনকোলজি হিসাবে ইতোমধ্যে অনেকটাই প্রতিষ্ঠিত।

এ পদ্ধতিতে একজন ক্যানসার আক্রান্ত ব্যক্তির ওষুধের কার্যকারিতা উন্নত করা এবং অনুপযুক্ত ওষুধের প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত অসুস্থতা, মৃত্যুহার এবং অপ্রয়োজনীয় খরচ কমানোর ঝুঁকি এড়াতেও সক্ষম। ফলে, একজন চিকিৎসকের ক্ষেত্রে সঠিক সময়ে সঠিক ওষুধ প্রয়োগ সম্ভব হতে পারে।

উন্নয়নশীল দেশ, বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো জনবহুল দেশেও এ পদ্ধতি বাস্তবায়নে দেশের জনস্বাস্থ্য, চিকিৎসা, স্বাস্থ্যশিক্ষা ও চিকিৎসাসেবীর অর্থনৈতিক খরচের বোঝা কমানোসহ ইতিবাচক প্রভাবও ভূমিকা রাখতে পারে ।

লেখক : গবেষক, নিউরোজেনেটিকস অ্যান্ড প্রিসিশন মেডিসিন, ডিপার্টমেন্ট অব সাইকাইয়াট্রি, ফার্মাকোলজি অ্যান্ড মেডিকেল জেনেটিকস, ইউনিভার্সিটি অব ক্যালগেরি, কানাডা।

নিউজটি শেয়ার করুন..

  • Print
  • উত্তরা নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন:
এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৫ | Technical Support: Uttara News Team
themesba-lates1749691102