কোরবানির হাটের উৎসবমুখর পরিবেশ আজকাল কেবল গরু-ছাগলের দামে নয়, ভাইরাল ভিডিও আর ইউটিউব কনটেন্টের প্রতিযোগিতায়ও মুখর। রাজধানীর গাবতলী হাটে ঢুকলেই চোখে পড়ে ‘শাকিব খান’, ‘পরীমনি’, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প’ কিংবা ‘লায়লা’ নামের গরু। বাহারি নাম আর অতিরঞ্জিত দামের ভিডিওতে যেন মুছে যাচ্ছে বাস্তবতা।
এসব কনটেন্ট নির্মাতারা হাটে গিয়ে নিজেরা পশুর নাম দিয়ে, অনুমতি ছাড়াই দামে কল্পনার রঙ চড়াচ্ছেন। কেউ বলছেন ৫ লাখ, কেউ বলছেন ৭ লাখ—বিক্রেতা যা-ই বলুক, ইউটিউবেই যেন শেষ কথা। ফলে ক্রেতা বিভ্রান্ত, বিক্রেতা ক্ষতিগ্রস্ত।
গরুর গায়ে ঝুলছে ফেস্টুন, দেওয়া হচ্ছে স্প্রে পেইন্ট। কোরবানির হাটে যেখানে দর কষাকষির বাস্তবতায় দাম নির্ধারিত হওয়ার কথা, সেখানে এখন ‘ভিউ’ নির্ধারণ করছে বাজারমূল্য। এক বিক্রেতা বলেন, “আমি ৩ লাখ চাইলেও ইউটিউবার ৫ লাখ বললে সেই দামেই বিচার হয়।” ক্রেতারাও বলছেন—“আমি গরু কিনতে এসেছি, ভাইরাল নাম নয়!”
এই নৈরাজ্যের দায় কেবল ইউটিউবারদের নয়, হাট ব্যবস্থাপনা ও সংশ্লিষ্ট সংস্থারও। প্রয়োজন দ্রুত একটি গাইডলাইন—যাতে সোশ্যাল মিডিয়া উপস্থিতি তথ্যভিত্তিক ও দায়িত্বশীল হয়।
কোরবানি শুধু কেনাবেচা নয়, এটি একটি ধর্মীয় ও সামাজিক অনুশীলন। সেটিকে ‘ভিউ’র বাজারে ঠেলে দিলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে কেবল অর্থনীতি নয়, মূল্যবোধও।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (৩ জুন) থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজধানীর কোরবানির হাটগুলোতে পশু বেচাকেনা শুরু হয়েছে। আজ হাটে ক্রেতাদের ভিড় কিছুটা বেশি দেখা গেছে।