কুরবানীর ঈদ ঘিরে রাজধানীর উত্তরায় জমে উঠেছে দুই পশুর হাট। এ বছর উত্তরার ১৮ নম্বর সেক্টরের দিয়াবাড়ি ও ১০ নম্বর সেক্টর সংলগ্ন কামারপাড়া এই দুই হাট থেকে কুরবানীর পশু কিনছেন উত্তরাসহ আশপাশের বাসিন্দারা।
আজ (মঙ্গলবার) দুপুরে উত্তরা ১৮ নম্বর সেক্টর অবস্থিত সবচেয়ে বড় দিয়াবাড়ি কুরবানীর পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, হাটে প্রচুর গরু-ছাগল সেই সঙ্গে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ব্যাপক উপস্থিতি রয়েছে। পরিবারের অভিভাবক সদস্যদের সঙ্গে গরু কিনতে এসেছেন ছোটরাও।
দিয়াবাড়ি হাট থেকে এক লক্ষ চল্লিশ হাজার টাকায় মাঝারি সাইজের গরু কিনে উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টরের বাসিন্দা আলম খান বলেন, প্রতিবারের মত এবারও গরু কুরবানি দিব। দাম স্বাভাবিকই আছে বলে মনে হচ্ছে। হাটের পরিবেশও খারাপ না।
হাটে গরু দেখতে আসা উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরের এক বাসিন্দা জানায়, গতবারের চেয়ে দাম কিছু কম আছে বলে মনে হচ্ছে।
বাবার সাথে হাটে গরু কিনতে আসা ১১ বছর বয়সী আরাফাতুল ইসলাম জানায়, কুরবানীর হাটে এসে ভাল লাগছে। হাটে অনেক গরু-ছাগল আছে। আমরা একটি গরু কিনেছি।
বিকেলে দিয়াবাড়ি পশুর হাট পরিদর্শনে এসে ডিএমপি উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার মো. মহিদুল ইসলাম উত্তরা নিউজকে বলেন, হাটের নিরাপত্তায় আমাদের পুলিশের টিম সার্বক্ষণিক কাজ করছে। হাট ঘিরে চাঁদাবাজি, ছিনতাই, মলমপার্টিসহ যেকোন ধরণের অপরাধ ঠেকাতে আমরা জিরো টলারেন্স।
অপরদিকে, এ বছর ক্রেতারা আশানুরূপ দাম বলছে না বলে জানিয়েছেন একাধিক গরু ব্যবসায়ী। নাটোর থেকে ২৮টি গরু নিয়ে দিয়াবাড়ি হাটে ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম উত্তরা নিউজকে জানায়, কাস্টমার আসতেছে, গরু দেখতেছে। উনারা দরদাম করতেছে। কিন্তু ভাল দাম বলতেছে না। দেড় লাখ টাকা দামের গরু উনারা যা-তা দাম বলতেছে।
ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ড থেকে দিয়াবাড়ি হাটে গরু নিয়ে আসা ব্যবসায়ী ইব্রাহিম জানায়, আজকেই কাস্টমার বেশি দেখা যাচ্ছে। কিন্তু দাম বলতেছে না। বেশিরভাগ মানুষই দাম শুনতাছে। আশা করি কাল থেকে বিক্রি করতে পারব।
এ বছর দিয়াবাড়ি হাটে ২৪ মন ওজনের সবচেয়ে বড় গরু ‘কালোরাজা’ বগুড়া থেকে নিয়ে এসেছেন বেপারী আনিস মিয়া। দাম জানতে চাইলে উত্তরা নিউজকে তিনি বলেন, কালোরাজার দাম ১১ লক্ষ টাকা। এখন পর্যন্ত ৭ লক্ষ টাকা দাম উঠছে। আশা করি ভাল দামে বিক্রি করতে পারব ইনশাআল্লাহ।
এদিকে, ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম ঘটলেও হাটের ব্যবস্থাপনা নিয়ে খুশি নন ব্যবসায়ীরা। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে দিয়াবাড়ি হাটে আসা গরু ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ পায়নি তারা। এছাড়াও পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা না থাকায় পশুদের জন্য দূর থেকে পানি আনতে হচ্ছে বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে দিয়াবাড়ি হাটের ইজারাদার এস এ খোকন বলেন, মাত্র দুদিন আগে আমরা ওয়ার্ক অর্ডারটা পেয়েছি। তারপরও হাটের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে আমরা চেষ্টা করেছি। ঈদের দু-তিন আগে মূলত বিক্রি শুরু হয়। গত কয়েকদিনের তুলনায় আজ আলহামদুলিল্লাহ হাটে বেচাবিক্রি ভাল হয়েছে।
সন্ধ্যায় উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টর সংলগ্ন কামারপাড়া কুরবানীর পশুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, হাটে গরু, ছাগল-ভেড়া উঠলেও ক্রেতা তুলনামূলক কম। হাট ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম জানায়, উত্তরায় ঈদের দু-তিন দিন আগে গরু কেনাবেচা হয়। তাই আমরা আশাবাদী।