ফ্রান্সে ফিলিস্তিনি জনগণের পক্ষে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করায় মাহদি এসফান্দিয়ারি নামের এক ইরানি নারীকে গ্রেপ্তার করে রাখা হয়েছে প্যারিসের ফ্রেসনেস কারাগারে। ৩৮ বছর বয়সী এই নারী একজন অনুবাদক এবং লিওন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী।
ফ্রান্সের সরকারি কৌসুলির অভিযোগ— মাহদি তার টেলিগ্রাম চ্যানেলে “ইহুদিবিদ্বেষী” বক্তব্য দিয়েছেন, যা “সন্ত্রাসবাদে উস্কানির” শামিল। তবে তার পরিবার ও বন্ধুদের দাবি, মাহদি শুধু ফিলিস্তিনিদের ওপর চলমান নির্যাতনের প্রতিবাদ জানিয়েছেন এবং শিশুদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। তারা প্রশ্ন তুলছেন— নিপীড়িতদের পক্ষে কথা বলাই যদি অপরাধ হয়, তবে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কোথায়?
মাহদিকে আটক রাখা হয়েছে ফ্রান্সের দ্বিতীয় বৃহত্তম ও সর্বাধিক সুরক্ষিত ফ্রেসনেস কারাগারে, যেখানে সাধারণত মাদক ব্যবসায়ী, চরমপন্থী ও সশস্ত্র অপরাধীরা বন্দী থাকে। এই কারাগারে রয়েছে ১,৮০০-এর বেশি একক সেল, যেগুলোর মধ্যে মাহদিকে নির্জন অবস্থায় রাখা হয়েছে প্রায় ৯০ দিন। এ সময় তিনি শারীরিক ও মানসিক নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন বলে পরিবার দাবি করেছে।
এই ঘটনার প্রতিবাদে X (সাবেক টুইটার)-এ ইরানি ও আন্তর্জাতিক ব্যবহারকারীরা হ্যাশট্যাগ #FreeMahdiEsfandiari ব্যবহার করে মাহদির মুক্তির দাবি জানাচ্ছেন।
ইরানি এক্স ব্যবহারকারী ফাতেমা মোহাম্মদ বেইগি বলেন, “শুধু গাজার নিপীড়নের বিরুদ্ধে পোস্ট করায় একজন নারীকে ৮০ দিনের বেশি সময় জেলে রাখা হয়েছে— এটা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার চরম লঙ্ঘন।”
মানবাধিকার সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইউরোপজুড়ে ফিলিস্তিন সমর্থনে কথা বলা ১০০ জনেরও বেশি ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, “ইউরোপে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা যেন শুধু তাদের জন্যই, যারা পশ্চিমা নীতির সঙ্গে একমত।”
এ বিষয়ে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাকাই বলেন, “আমরা এখনো ফ্রান্সের পক্ষ থেকে পরিষ্কার ব্যাখ্যা পাইনি। নিপীড়িতের পাশে দাঁড়ানো কি অপরাধ? এটাই যদি মানবাধিকারের দাবিদার দেশগুলোর আচরণ হয়, তবে সেটি বিশ্বমানবতার জন্য অশনিসংকেত।”