পুরো রাস্তাটিই খানাখন্দে জরাজীর্ণ। সামান্য বৃষ্টিতে কাদাপানিতে একাকার পথচারী ও যানচলাচলের প্রধান সড়কটি। টঙ্গী থেকে উত্তরায় যাতায়াত কিংবা প্রবেশের প্রধান সংযোগস্থল আব্দুল্লাহপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকার ঢাকা-আশুলিয়া সড়কের নিত্যদিনের চিত্র এটি। তার ওপর চর্তুমূখী সড়কে পরিবহন চালকদের যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামায় সৃষ্ট যানজটে অতিষ্ট এলাকাবাসী। ফলে চরম দুর্ভোগ আর শঙ্কা নিয়ে আব্দুল্লাহপুর এলাকার রাস্তায় চলাচল করতে হচ্ছে এখানকার বাসিন্দাদের।
বৃষ্টিতে আব্দুল্লাহপুর ট্রাফিক পুলিশ বক্সের পাশের উড়াল সেতুর গার্ডারের নিচে দাঁড়িয়ে থাকা উত্তরা ৯ নম্বর সেক্টরের বাসিন্দা ও স্থানীয় ব্যবসায়ী ওমর ফারুক উত্তরা নিউজকে জানান, এই সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে শুধুই দেখেই যাচ্ছি। বৃষ্টিতে কাঁদাপানি আর রোদে ধুলা ছাড়া এখানে কিছুই নেই। এই রাস্তার সমস্যা দেখার কেউ আছে তাও আমরা জানিনা।
সড়কের এমন সমস্যা ও দুর্ভোগ নিয়ে আসলাম নামের এক পথচারীর অভিযোগ, প্রতিদিন হাজার হাজার গাড়ি এই রাস্তায় চলাচল করে। কিন্তু, রাস্তা মেরামতে কোন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। এর ভুক্তভোগী উত্তরা ৯ নম্বর সেক্টরসহ উত্তরার সবকটি সেক্টরের বাসিন্দারা।
বাজারের ব্যাগ হাতে রাস্তা পারাপার হওয়া আরেক পথচারীর অভিযোগ, আমরা প্রতিদিনের বাজার কিংবা ব্যবসায়িক কাজে টঙ্গী বাজার যাতায়াত করার একমাত্র রাস্তা এটি। গেল দুই বছর ধরে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেডেট এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের কাজ চলায় পুরো রাস্তায় বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হলে কোথায় গর্ত বোঝা যায় না। তাই চলাচল করতে ভয় লাগে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, উত্তরা আব্দুল্লাহপুর এলাকায় দুর্ভোগের সবচেয়ে কারণ অঘোষিত বাস টার্মিনাল ও যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা। আব্দুল্লাহপুর ঘিরে আন্তঃজেলা বাস কাউন্টার গড়ে ওঠায় মহাসড়কের ওপর অবৈধ বাস পার্কিং এই এলাকায় যানজটের প্রধান কারণ। আব্দুল্লাহপুর ট্রাফিক পুলিশ বক্স সংলগ্ন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ও ঢাকা-আশুলিয়া মহাসড়কের ওপর দিনরাত দূরপাল্লার এসব বাস পার্কিং করে যাত্রী ওঠানামা করলেও নির্বিকার দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা।
এসব বিষয়ে জানতে বিকাল সাড়ে চারটায় আব্দুল্লাহপুর ট্রাফিক পুলিশ বক্সে গিয়ে বক্সটি তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়। আশপাশে দায়িত্বরত কোন ট্রাফিক সদস্যকেও দেখা যায়নি।
অপরদিকে, সন্ধ্যার পর আব্দুল্লাহপুর ঘিরে ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য নিয়ে জনমনে শঙ্কা রয়েই গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দোকানী উত্তরা নিউজকে জানায়, রাত নয়টার পর আব্দুল্লাহপুর এলাকায় ছিনতাইয়ের ঘটনা নিয়মিত। ছিনতাইকারীরা নদীর ওপাড় (টঙ্গী) থেকে এসে এগুলো করে চলে যায়। ওরা বেশি মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। আবার কাউকে একা পেলে ছুরি-চাকু দেখিয়ে পকেটে যা পায় তা নিয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গুরুত্বপূর্ণ এই স্থানটিতে সড়ক বাতি না থাকায় সন্ধ্যার পর অন্ধকারে পরিণত হয় গোটা আব্দুল্লাহপুর এলাকা। এতে ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য বেড়ে যায় সড়কটিতে। এছাড়াও ঈদ এলে ছিনতাইয়ের আনাগোনা সবচেয়ে বেশি দেখা যায় যায়।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে উত্তরা পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, ছিনতাইসহ যেকোন অপরাধ ঠেকাতে আব্দুল্লাহপুর এলাকায় আমাদের বিশেষ টিম কাজ করছে। ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য আগের চেয়ে অনেক কমেছে। এ ধরণের অপরাধ ঠেকাতে উড়াল সড়কের উপরেও আমাদের টহল টিম রয়েছে।