বৈরী আবহাওয়া এবং টানা বৃষ্টির উপেক্ষা করে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের আনাগোনায় জমে উঠেছে উত্তরা দিয়াবাড়ি পশুর হাট। তবে ইজারাদার না থাকায় হাটের পরিবেশ নিয়ে অসন্তোষ জানিয়েছেন হাটে আসা ক্রেতা-বিক্রেতারা। সবচেয়ে বেশি অসুবিধার শিকার হচ্ছেন দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে গরু-ছাগল নিয়ে আসা বেপারীরা।
শনিবার দুপুরে উত্তরা ১৮ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত দিয়াবাড়ি কুরবানীর পশুর ঘুরে এমন চিত্রই উঠে এসেছে উত্তরা নিউজের ক্যামেরায়।
৩য় দিনের মতো হাট ঘুরে দেখা যায়, হাটে নেই ন্যূনতম অবকাঠামো। ভোগান্তির শেষ নেই খামারি ও বিক্রেতাদের। পানির সঙ্কট, শৌচাগারের অভাব এবং রাতে বিদ্যুৎ না থাকায় তারা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন তারা।
মনু মিয়া নামের এক গরু ব্যবসায়ী ক্ষোভ প্রকাশ করে উত্তরা নিউজকে বলেন, বুঝলাম বিদ্যুৎ নেই, পানি নেই, কিন্তু শৌচাগারের মতো মৌলিক চাহিদাগুলোও পূরণ করা হয়নি। পাশের খেতে গিয়ে প্রাকৃতিক কাজ সারতে হচ্ছে। গরুকে দূর থেকে পানি এনে খাওয়াতে হচ্ছে।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, হাট পরিচালনার জন্য কোনো ইজারাদারের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে সমস্যাগুলো কার কাছে জানাবে, সেটাও তারা বুঝে উঠতে পারছেন না।
ইজারাদার না থাকায় হাটের পরিবেশ নিয়ে অসন্তুষ্ট হাটে গরু কিনতে আসা ক্রেতা সাধারণও। ক্রেতা ও দর্শনার্থীরা বলছেন, কোনরূপ ব্যবস্থাপনা ও শৃঙ্খলা না থাকায় চলাচলে তীব্র অসুবিধা হচ্ছে তাদের। বৃষ্টিতে এরই মধ্যে কাদাপানিতে একাকার মাঠের পরিবেশ।
হাটে পশু দেখতে আসা এক দর্শনার্থী সুবহান মিয়া বলেন, দেখে মনে হচ্ছে অনেক গরু উঠেছে, কিন্তু ব্যবস্থাপনায় ঘাটতি রয়েছে।
দিয়াবাড়ি হাটে এসে গরু কিনতে আসা আলফাজ হোসেন উত্তরা নিউজকে জানান, প্রতিবছরের মতো এবারও গরু কিনতে এসেছি। কিন্তু দাম একটু বেশি চাচ্ছে, তাই এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। ঘুরে ঘুরে দেখছি। হাটের পরিবেশ ভাল নয় বলেও জানান তিনি।
এদিকে, হাট ঘুরে ছোট-বড় নানা আকারের গরু, ছাগল ও অন্যান্য পশু দেখা গেছে দিয়াবাড়ি হাট ঘিরে। দেশী জাতের পাশাপাশি বিদেশি জাতের গরুও উঠেছে দিয়াবাড়ি হাটে। পাশাপাশি ছাগল ও ভেড়াও রাখা হয়েছে বিক্রির জন্য।
প্রতিটি গরুর দাম শুরু হচ্ছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা থেকে। অনেক গরুর দাম আরও অনেক বেশি। বিক্রেতাদের দাবি, খরচ ও লজিস্টিক জটিলতার কারণে দাম কিছুটা বেশি হলেও গরুর মান ভালো।
অপরদিকে, হাটে ভেতরে বা বাইরে কোথাও ইজারাদারের খোঁজ পাওয়া যায়নি। ফলে পরিস্থিতি নিয়ে কেউ কোনো দায় নিচ্ছে না।
স্থানীয় প্রশাসন ও হাট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে খামারিরা বলছেন, ঈদের আর বেশি দেরি নেই, এখনই যদি ব্যবস্থা না নেওয়া হয় তাহলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে এবং পরিবেশের অভাবে লসের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা।