ফুটবল মাঠের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ

সাম্প্রতিক সময়ে ফুটবল যেমন আলোচনায় ফিরেছে, তেমনি মাঠে দর্শক-সমর্থকদের উচ্ছৃঙ্খল আচরণও বেড়েছে। লিগ, ফেডারেশন কাপ মিলিয়ে গত কয়েক দিনে বেশ কিছু ম্যাচে এমন সব ঘটনা ঘটেছে, যাতে মাঠের খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফরা ভুগেছেন নিরাপত্তাহীনতায়। ময়মনসিংহে ফেডারেশন কাপ ফাইনালে দর্শকরা হুড়মুড়িয়ে মাঠে ঢুকে পড়েছিল। গত শুক্রবার কুমিল্লায় মোহামেডানের এক সমর্থক তো মাঠে ঢুকে তেড়ে যান প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়ের দিকে! একই দিনে বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় আবাহনী ও কিংসের দুই ডাগ আউটের উত্তেজনায় জড়ায় দুই দলের সমর্থকরা।কিংস অ্যারেনায় এর আগে বোতলবৃষ্টি, স্মোক ফ্লেয়ার ছোড়ার ঘটনা ঘটেছে। সেটি ঘটেছে কুমিল্লায় সর্বশেষ আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচেও। মোহামেডান সমর্থকদের ছোড়া স্মোক ফ্লেয়ার ও বোতলবৃষ্টিতে ম্যাচ বন্ধ ছিল দীর্ঘক্ষণ। সমর্থকরা মাঠেও ঢুকে পড়তে চেষ্টা করছিল, যে কয়েকজন পুলিশ সদস্য সেখানে ছিলেন, তাঁদের পক্ষে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া ছিল কঠিন।মাঠের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে তাই নতুন করে ভাবা উচিত বলে মনে করেন আবাহনীর সহকারী ম্যানেজার নজরুল ইসলাম, ‘প্রতিটি মাঠেই কোনো না কোনো বিশৃঙ্খলা ঘটছে। আমরা যারা মাঠের ভেতর থাকি, তাদের জন্য এটা খুবই উদ্বেগের। আমার মনে হয়, বাফুফের উচিত মাঠের নিরাপত্তার বিষয়টা নিয়ে নতুন করে ভাবা।’ মোহামেডানের কোচ আলফাজ আহমেদ এ ব্যাপারে অবশ্য সরাসরি মন্তব্য করতে রাজি হননি, তবে তাঁরও চাওয়া উচ্ছৃঙ্খলতা বন্ধ হোক, ‘আমরা কোনো কিছু নিয়ে মন্তব্য করলে সেটি এখন ফেসবুকে নানাভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে।আমার মূল কথাটাই হয়তো তাতে থাকছে না। তাই এই বিষয়েও কিছু বলতে চাচ্ছি না। ম্যাচগুলোতে কী হচ্ছে, সেগুলো আপনারাও (সাংবাদিকরা) দেখছেন। আপনাদেরই এটা নিয়ে লেখালেখি করা উচিত, কিভাবে খেলা চালাতে হবে, পুলিশ সদস্য আরো বাড়াতে হবে কি না…বা এই বিষয়গুলো।’কিংস-আবাহনী লিগ ম্যাচ শেষে দুই ডাগ আউটের উত্তেজনা শেষ পর্যন্ত ধাক্কাধাক্কিতে জড়ায়।

ম্যাচে গুরুতর কিছু ঘটলে রেফারি ও ম্যাচ কমিশনারের রিপোর্ট দ্রুতই বাফুফের কম্পিটিশন বিভাগে জমা দেওয়া হয়। বাফুফের রেফারিজ বিভাগের আজাদ রহমান বলেন, ‘সেভাবে সব রিপোর্টই আমরা এরই মধ্যে কম্পিটিশন বিভাগে জমা দিয়েছি। নিয়ম হলো, পরের ম্যাচের আগেই সেই বিষয়গুলোর ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া। এখন পর্যন্ত যদিও সে রকম কিছু আমরা দেখিনি। তবে গত রাউন্ডে যা হয়েছে, যেমন সাদ উদ্দিন ম্যাচ কমিশনারের গায়ে হাত তুলেছেন বা অন্য যা হয়েছে, সে ব্যাপারে আগামী রাউন্ডের আগেই হয়তো একটা সিদ্ধান্ত পাব।’

বরবার তা-ই হয়ে এসেছে। এবারের মৌসুমেই দেখা গেল ব্যতিক্রম। বাফুফের নতুন কমিটি সব কিছু গুছিয়ে নিতে সময় নিচ্ছে। একসময় ঢাকা স্টেডিয়ামে নিয়মিতই গণ্ডগোল হতো। ম্যাচ পণ্ডও হয়েছে। রেফারি, খেলোয়াড়রা লাঞ্ছিত হয়েছেন, আহত হয়েছে সমর্থকরা। পরিস্থিতি ক্রমে তেমনই উল্টো দিকে ধাবিত হচ্ছে কি না, সেটিই উদ্বেগের। ভেন্যুগুলোর নিরাপত্তা বাড়ানো তাই জরুরি বলে মানছেন পেশাদার লিগ কমিটির ডেপুটি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন চৌধুরী, ‘এই বিষয়টি নিয়ে আমরা এর মধ্যেই আলোচনা করেছি। প্রতিটি ক্লাবকে তাদের হোম ভেন্যুর নিরাপত্তা বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে পুলিশ সদস্যও বাড়াতে হবে।’