শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ১১:০৭ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:

নড়িয়ায় বিএনপির দুপক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি : ১৪৪ ধারা জারি

অনলাইন ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট টাইম: রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
  • ১২ বার পঠিত
শরীয়তপুরের নড়িয়ায় পদ্মা নদী থেকে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুটি পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির কারণে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় আজ রবিবার (২০ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত নড়িয়া পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন।উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা নদীর ডান তীর রক্ষাবাঁধ সংলগ্ন এলাকা থেকে বালু উত্তোলনের বিরোধিতায় ‘নড়িয়ার সর্বস্তরের জনতা’- এই ব্যানারে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে একটি পক্ষ। তারা গত ১৪, ১৫ ও ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ, অবস্থান ও মানববন্ধন করেছেন।এ কর্মসূচিতে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মহিউদ্দিন আহমেদ ঝিন্টু, কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল এস এম ফয়সাল, কলাবাগান থানা মহিলা দলের সভাপতি শামীমা জামানসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা অংশ নেন।অন্যদিকে, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আহমেদ রয়েলের নেতৃত্বে আরেকটি পক্ষ বৈধভাবে নিলামে কেনা বালু উত্তোলনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।রয়েলের দাবি, একটি মহল রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বৈধ কার্যক্রম বন্ধের চেষ্টা করছে। আন্দোলনকারীরা আওয়ামী লীগের দোসর।তিনি তাদের প্রতিহতের হুঁশিয়ারিও দেন। গতকাল শনিবার রাতে বালু উত্তোলনবিরোধী পক্ষ আবারও বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়ে মাইকিং করে প্রচার চালায়। পাল্টা মিছিল করে রয়েলের অনুসারীরাও আজ রবিবার সমাবেশের ডাক দেয়। ফলে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঠেকাতে প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারির সিদ্ধান্ত নেয়।স্থানীয়দের অভিযোগ, ফরিদ আহমেদ রয়েলের নেতৃত্বে একটি চক্র ৬ এপ্রিল থেকে চরআত্রা ও চরনড়িয়া এলাকায় প্রায় ৩০টি ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করছে। এতে বাঁধ ও ফসলি জমি হুমকির মুখে পড়েছে।উপজেলা প্রশাসন জানায়, নিলামের মাধ্যমে ফরিদ আহমেদ রয়েল প্রায় পাঁচ কোটি ৮৮ লাখ টাকায় ১০ কোটি ঘনফুট স্তূপীকৃত বালু কিনেছেন।পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩-২০১৮ সালের মধ্যে পদ্মার ভাঙনে নড়িয়ার প্রায় ২৫ হাজার পরিবার গৃহহীন হয়। ভাঙনের কবলে পড়ে হাসপাতাল, সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা, এমনকি সড়কও বিলীন হয়।পরে প্রায় ১,৪১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘নড়িয়া-জাজিরা পদ্মা নদীর ডান তীর রক্ষা প্রকল্প’ বাস্তবায়ন করে পাউবো। এতে ১০.২ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ এবং নদীতে ৮০ কোটি টাকার জিওব্যাগ ফেলা হয়।স্থানীয়রা বলছেন, নতুন করে বালু উত্তোলনের ফলে আবারও নদীভাঙনের ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মহিউদ্দিন আহমেদ ঝিন্টু  বলেন, ‘নড়িয়ার মানুষ নদীভাঙনের আতঙ্কে দিন কাটায়। আমরা জনগণের দাবি নিয়ে আন্দোলন করছি, এটি কোনো ব্যক্তি বা দলের বিরুদ্ধে নয়। মিথ্যা ও বানোয়াট টেন্ডারের মাধ্যমে বৈধতার ছাপ লাগানো হলেও, প্রকৃতপক্ষে অবৈধভাবে নদীর গভীর থেকে বালু উত্তোলন হচ্ছে।’তবে এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আহমেদ রয়েল ফোন ধরেননি।নড়িয়া থানার ওসি আসলাম উদ্দিন  বলেন, ‘এক পক্ষ মিছিলের অনুমতি চেয়ে চিঠি দিয়েছে, অন্য পক্ষ এখনো জানায়নি। পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি আইন-শৃঙ্খলার জন্য হুমকি হতে পারে।’নড়িয়া উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আমিনুল ইসলাম বুলবুল  বলেন, ‘বালু উত্তোলনের ইস্যুটি এখন রাজনৈতিক শক্তি প্রদর্শনের দিকে মোড় নিয়েছে। দুই পক্ষই কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমরা ১৪৪ ধারা জারি করেছি।’জারি করা আদেশে উল্লেখ করা হয়, ২০ এপ্রিল সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত নড়িয়া পৌর এলাকায় কোনো সভা, মিছিল, মাইকিং ও জমায়েত নিষিদ্ধ থাকবে। আদেশ লঙ্ঘন করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

  • Print
  • উত্তরা নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন:
এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৫ | Technical Support: Uttara News Team
themesba-lates1749691102