রাজধানীর উত্তরা দিয়াবাড়িতে কুরবানীর পশুর হাটের গরু নির্ধারিত সীমানা ছাড়িয়ে রাস্তার উপর রাখা হয়েছে। এতে নিত্যদিনের যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টিসহ যেকোন মুহুর্তে দূর্ঘটনার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে এলাকাবাসী ও সাধারণ পথচারীরা।
(বৃহস্পতিবার) দুপুরে উত্তরা ১৬ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত দিয়াবাড়ি কুরবানীর পশু হাট সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, কুরবানীর পশু বিক্রির প্রথম দিনই মেট্রোরেলের ২ নম্বর স্টেশন থেকে পশ্চিমে ১৮ নম্বর সেক্টরে যাতায়াতের একমাত্র সড়কটির উপর সারি সারি বেঁধে রাখা হয়েছে কুরবানীর গরু। একই পরিস্থিতি হাট সংলগ্ন পূর্ব পার্শ্বের দিয়াবাড়ি মেট্রোরেলের নিচ দিয়ে বয়ে যাওয়া যান চলাচলের প্রধান সড়কটিতেও।
ডিএমপির নির্দেশনা অনুযায়ী, সড়কের পাশে খোলা জায়গায় কুরবানীর পশু না রাখার কথা বলা হলেও দিয়াবাড়ি হাটে মানা হচ্ছে না সেই বিধি-বিধান। নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই হাট কর্তৃপক্ষ ব্যাপারীদেরকে বাধ্য করছে এসব খালি জায়গায় গরু রাখতে। এমনকি মেট্রোরেলের ২ নম্বর ডিপো থেকে ১৮ নম্বর সেক্টরে যাওয়ার দুই সড়কের মধ্যবর্তী বিভাজকের খালি জায়গাতেও রাখা হয়েছে এসব কুরবানীর পশু।
উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টর থেকে হাটে গরু কিনতে আসা আনিস নামের এক ব্যক্তি জানায়, গরুগুলো রাস্তার উপর রাখাতে আমরা সুষ্ঠুভাবে দাঁড়াতে পারছি না। পেছন থেকেই গাড়ির হর্ণ বাজছে। একটা আতঙ্ক নিয়ে এখানে গরু দেখতে হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উত্তরা ১৮ নম্বর সেক্টরের এক বাসিন্দা জানায়, আমাদের ১৮ নম্বর সেক্টরে যাওয়ার একমাত্র রাস্তাই হচ্ছে এটি। হাটের ভেতরে এত বড় জায়গা থাকতেও রাস্তার উপর আর সড়ক বিভাজকের খালি জায়গায় এভাবে গরু-ছাগল রাখাটা দুঃখজনক। এটা কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই দেখা উচিত। অন্যথায় আমাদের চলাচলের পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে।
ব্যাপারিরা জানায়, হাটের ভেতরে ইচ্ছে করেই গরু রাখতে দিচ্ছে না ইজারাদাররা। কুষ্টিয়া থেকে হাটে গরু নিয়ে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যাপারির বক্তব্য- ভিতরে জায়গা পাই নাই। হেরা (হাটের লোকজন) এইখানে গরু বাঁধতে কইছে। এইহানেই বাঁধছি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সড়কের উপর পশু রাখার বিষয়টি স্বীকার করে দিয়াবাড়ি হাটের ইজারাদার কফিল উদ্দিন বলেন, রাস্তার উপর গরু ব্যাপারিরা রাখছে। ওগোরে তো আর মাইরা তাড়িয়ে দেয়া যাইত না। রাত্রে আসছে তো তাই ভিতরে আনতে পারে নাই।
দিয়াবাড়ি গরুর হাটের সীমানা সম্পর্কে জানতে চাইলে ইজারাদার কফিল বলেন, দিয়াবাড়ি ১৬ নম্বর সেক্টর বউ বাজার পর্যন্ত রাস্তার জায়গা ছাড়া বাকী খালি জায়গা হাটের সীমানা। তবে রাস্তার উপর গরু রাখার বিষয়টি কতটুকু বৈধ? প্রশ্ন করা হলে প্রতিবেদকে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
এ বিষয়ে ডিএমপি উত্তরা জোনের এক সহকারি পুলিশ কমিশনার (এসি) জানায়, আমি সকালে ঘুরে এসেছি। এ বিষয়ে তাদেরকে বলেছি। তারা (ইজারাদার) যদি ডিএমপির নির্দেশনা লঙ্ঘন করে তাহলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।