বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:৪৫ অপরাহ্ন

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে বাস ধর্মঘট, দুর্ভোগে যাত্রীরা

অনলাইন ডেক্স রির্পোট
  • আপডেট টাইম: শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
বেতন বৃদ্ধি ও কল্যাণ তহবিলের দাবিতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে চলাচলকারী চারটি প্রধান বাস কম্পানির মারছা, সৌদিয়া, পূরবী ও স্বাধীন ট্রাভেলসের চালক ও সহকারীরা (হেলপার) ৩৬ ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া এই ধর্মঘটের কারণে যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ধর্মঘটের কারণে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের মধ্যে সরাসরি বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে সাধারণ যাত্রীদের বিকল্প উপায়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে হচ্ছে, যার ফলে তাদের সময় ও অর্থ দুটোই নষ্ট হচ্ছে।নগরের শাহ আমানত সেতু এলাকার বাস কাউন্টারগুলোতে এসে যাত্রীরা টিকিট না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। কেউ কেউ বাধ্য হয়ে চট্টগ্রাম থেকে চকরিয়া পর্যন্ত লোকাল বাসে করে যাচ্ছেন। সেখান থেকে আবার অন্য বাসে কক্সবাজার যাচ্ছেন। এতে একদিকে যেমন বেশি সময় লাগছে, তেমনি খরচও হচ্ছে প্রায় দ্বিগুণ বা তার বেশি।জরুরি কাজে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামে এসেছিলেন আতিকুল আলম নামের একজন যাত্রী। কথা হলে তিনি বলেন, ‘আমি জরুরি কাজে চট্টগ্রামে এসেছিলাম। কিন্তু কাজ শেষে কাউন্টারে এসে দেখি কাউন্টার বন্ধ, বিকল্প মাইক্রোবাস। কিন্তু প্রধান কম্পানিগুলোর বাস সার্ভিস বন্ধ থাকায় মাইক্রোর চালকরা দ্বিগুণ ভাড়া নিচ্ছেন।ধর্মঘট শুরু করার আগে যাত্রীদের কথা একটুও ভাবা উচিত ছিল। ভোগান্তির শেষ নেই।’একই অভিযোগ আরেক যাত্রী সন্দ্বীপন রায়ের। তিনিও যাবেন কক্সবাজার। কিন্তু নগরীর শাহ আমানত ব্রিজ এলাকায় গত তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করেও বাস পাননি।ক্ষোভ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা আমাদের মানুষ মনে করেন না। তাদের ইচ্ছেমতো ধর্মঘট করবেন। বিষয়টি সংশ্লিষ্টরা দেখেও না দেখার ভান করেন। ফল, আমাদের ভোগান্তি।’শ্রমিকরা জানান, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে তাদের মজুরি বাড়ছে না। বর্তমানে একজন চালক প্রতি ট্রিপে (একবার যাওয়া বা আসা) পান মাত্র ৫৫০ টাকা এবং একজন হেলপার পান ২৭৫ টাকা। দিনে সর্বোচ্চ দুটি ট্রিপ হয়। এই সামান্য মজুরি দিয়ে বর্তমান বাজারে সংসার চালানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে।মারছা পরিবহনের বাসচালক আব্দুল আজিজ বলেন, ‘আমি আট বছর ধরে এই কাজ করছি। যে বেতন পাই, তা দিয়ে নিজে খাব, সংসার চালাব নাকি ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখার খরচ চালাব? এক বেলার ভাত খেতেই ১০০ টাকার বেশি খরচ হয়, সেখানে আমার দৈনিক আয় মাত্র ৫৫০ টাকা।’এ ছাড়া দুর্ঘটনায় পড়লে মালিকপক্ষ কোনো ধরনের সহযোগিতা করে না বলে শ্রমিকরা অভিযোগ করেছেন। তাদের জন্য কোনো কল্যাণ তহবিলও নেই। শ্রমিকদের এই ন্যায্য দাবিগুলোই ধর্মঘটের মূল কারণ।আরাকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মুছা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য কর্মবিরতি পালন করছি। এর আগেও ১৯ আগস্ট কর্মবিরতি পালন করেছিলাম, তখন মালিকপক্ষ আশ্বাস দিয়েছিল কিন্তু কোনো সমাধান হয়নি। এবার দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যাব।’

নিউজটি শেয়ার করুন..

  • Print
  • উত্তরা নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন:
এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৫ | Technical Support: Uttara News Team
themesba-lates1749691102