দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এখন সরকারের অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় একধাপ এগিয়ে রয়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। সরকারের এক বছরপূর্তি উপলক্ষে ৪ আগস্ট দেওয়া তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়, বর্তমানে সরকারি গুদামে চাল ও গম মিলে মোট ২১ লাখ ৩১ হাজার মেট্রিক টন খাদ্যশস্য মজুদ রয়েছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এর মধ্যে চালের পরিমাণ ১৯ লাখ ৫৪ হাজার এবং গম ১ লাখ ৭৭ হাজার মেট্রিক টন। পাশাপাশি, ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত ৫ লাখ মেট্রিক টন চাল ও ৪ লাখ মেট্রিক টন গম আমদানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে সরকার সর্বমোট ৩৩ লাখ ৫ হাজার মেট্রিক টন খাদ্যশস্য বিতরণ করেছে, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। আগের বছরের তুলনায় এবার ৪৪ হাজার মেট্রিক টন বেশি বিতরণ করা হয়েছে। একইসঙ্গে, সরকারিভাবে ধান ও চাল সংগ্রহেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।
সরকারি গুদামজাতকরণ সক্ষমতা বর্তমানে ২৩ লাখ ৮৮ হাজার মেট্রিক টনে পৌঁছেছে। মধুপুর, বরিশাল, ময়মনসিংহ ও নারায়ণগঞ্জে নতুন সাইলো নির্মাণের ফলে এই অগ্রগতি হয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে মজুদ ক্ষমতা ২৬ লাখ ৮৪ হাজার মেট্রিক টনে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি সাতটি নতুন সাইলো গুদামের নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে।
তবে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্তমান মজুদকে সন্তোষজনক বলা না গেলেও, ঝুঁকিপূর্ণও নয়। তারা আরও জানান, দেশে খাদ্যশস্য উৎপাদনের জমি কমে যাওয়ায় সরকারকে বাড়তি চাপে পড়তে হচ্ছে। প্রায় ১৮ কোটি মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সীমাবদ্ধতার মধ্যেও নতুন প্রযুক্তি ও আমদানি নির্ভরতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সরকারের ওএমএস কর্মসূচি বর্তমানে রাজধানীসহ সারাদেশে চলমান। এ কর্মসূচির আওতায় নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে রাখতে চাল, আটা, এমনকি প্রয়োজনবোধে সবজিও খোলা বাজারে বিক্রির পরিকল্পনা রয়েছে।
চিনির বাজার নিয়ন্ত্রণেও সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড শুল্কহার কমিয়ে বর্তমানে অপরিশোধিত চিনিতে প্রতি কেজিতে ১১ টাকা ১৮ পয়সা এবং পরিশোধিত চিনিতে ১৪ টাকা ২৬ পয়সা পর্যন্ত খরচ হ্রাস করেছে।