২০২৪ সালের আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর, সাবেক ক্ষমতাসীন দলের একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি যুক্তরাজ্যে আশ্রয় নেন। তাদের অনেকেই এখন সে দেশে থাকা সম্পত্তি বিক্রি ও স্থানান্তরে ব্যস্ত।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের এক যৌথ তদন্তে উঠে এসেছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের অনুরোধে যুক্তরাজ্য সরকার এসব প্রবাসী রাজনীতিক, ব্যবসায়ী ও সাবেক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অর্থপাচারের তদন্ত শুরু করেছে। ইতোমধ্যে লন্ডনের ল্যান্ড রেজিস্ট্রিতে তদন্তাধীনদের সম্পত্তি সংক্রান্ত অন্তত ২০টি লেনদেনের আবেদন জমা পড়েছে।
বিশেষভাবে আলোচিত বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের মালিকানাধীন নাইটসব্রিজের ৭.৩৫ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের একটি টাউনহাউস, সম্প্রতি সন্দেহজনকভাবে হস্তান্তর ও বিক্রির প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গেছে। একইভাবে, সোবহান পরিবারের অপর সদস্য শাফিয়াতের মালিকানাধীন সারে-এর ৮ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের প্রাসাদ নিয়েও দুটি আবেদন জমা হয়েছে।
তদন্তে উঠে আসা আরও নামের মধ্যে রয়েছেন—সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ভাই আনিসুজ্জামান, যিনি লন্ডনের ১০ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের একটি টাউনহাউস গত বছর বিক্রি করেছেন।
এছাড়া বেক্সিমকো গ্রুপের শীর্ষ কর্মকর্তা সালমান এফ রহমানের ছেলে ও ভাগ্নের নামে থাকা মেফেয়ারের ৩৫ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের সম্পত্তিও ইতিমধ্যে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (NCA) জব্দ করেছে।
বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুরোধে এসব তদন্তে গতি এসেছে। ব্রিটিশ আইনপ্রণেতা জো পাওয়েল মন্তব্য করেছেন, “তদন্ত চলাকালীন দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে এই সম্পদগুলো সহজেই অদৃশ্য হয়ে যেতে পারে।”
সংশ্লিষ্ট অনেকেই অভিযোগ অস্বীকার করলেও, যুক্তরাজ্যে সম্পদ বিক্রির হিড়িক এবং লুকানো কোম্পানির মাধ্যমে হস্তান্তর ঘিরে প্রশ্ন উঠেছে—অর্থপাচার ও দুর্নীতির দায় এড়ানোই কি তাদের উদ্দেশ্য?