সম্প্রতি রাজধানী ঢাকায় এক হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে। এক যুবদল নেতা প্রকাশ্য দিবালোকে পাথর দিয়ে এক নিরীহ ব্যবসায়ীকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও আমাদের স্তব্ধ করে দিয়েছে। এই ঘটনা শুধু একটি হত্যাকাণ্ড নয়—এটি বিচারহীনতা, রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় অপরাধের আশ্রয়, এবং রাষ্ট্রের সম্পূর্ণ ব্যর্থতার নগ্ন উদাহরণ।
প্রশ্ন উঠছে—কেন এমন ঘটনা ঘটছে? কার সাহসে একজন রাজনৈতিক নেতা এতটা বর্বর হতে পারে? এই প্রশ্নের উত্তর আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থার ভেতরেই লুকিয়ে আছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি আমাদের সমাজকে ধ্বংস করছে
যদি দেশে সঠিক বিচার হতো, তবে কেউ প্রকাশ্যে পাথর দিয়ে মানুষ খুন করার সাহস পেত না। আজকের বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিচয়ই যেন অপরাধের লাইসেন্স! দলীয় পরিচয়ে অপরাধীরা রক্ষা পায়, বরং অনেক সময় তাদের উৎসাহ দেওয়া হয়—এটাই বাস্তবতা।
বিচার না হলে অপরাধ বাড়বেই। কারণ অপরাধীর মনে ভয় থাকবে না, থাকবে আত্মবিশ্বাস—“কিছুই হবে না”। আর এভাবেই গড়ে ওঠে এক ভয়ঙ্কর সামাজিক অবক্ষয়, যেখানে জীবন সস্তা, রক্ত পানির চেয়েও মূল্যহীন।
আমরা কি নিরাপদ?
এই হত্যাকাণ্ড কেবল একটি ব্যক্তি বা একটি পরিবারের বিপর্যয় নয়—এটি গোটা সমাজের জন্য অশনিসংকেত। রাজধানীর মতো জায়গায় যদি কেউ প্রকাশ্যে মানুষ খুন করতে পারে, তাহলে গ্রামেগঞ্জে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার কী অবস্থা, তা সহজেই অনুমেয়।
এই অবস্থার জন্য কে দায়ী?
দায়ী সেই রাজনীতি, যেখানে সন্ত্রাসীরা জায়গা পায়। দায়ী সেই রাষ্ট্রযন্ত্র, যারা অপরাধীর দলীয় পরিচয়ের দিকে তাকিয়ে মামলা নেয় বা নেয় না। দায়ী সেই সমাজও, যেখানে আমরা অনেকেই চোখ বন্ধ করে থাকি।
আমাদের অবস্থান ও দাবি
আমরা এই বর্বর হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা দোষী যুবদল নেতার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। কেবল গ্রেফতার নয়—তার দ্রুত বিচার ও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। আর এটিই হোক শেষ উদাহরণ—যাতে কেউ আর কখনো এভাবে একজন নিরীহ মানুষকে হত্যা করার সাহস না পায়। এখনই আমাদের জেগে উঠতে হবে। নইলে একদিন আমরা সবাই হবো পরবর্তী শিকার।
এই রাষ্ট্র, এই সমাজ—আমাদের সবার। তাই এখনই বলতে হবে,”এটা চলতে পারে না”, আসুন সকলে মিলে প্রতিরোধ গড়ে তুলি।
লেখক- ইব্রাহিম সিকদার
আহ্বায়ক,বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, উত্তরা পূর্ব থানা শাখা।