বাংলাদেশের তারকা ক্রিকেটারদের মধ্যে ক্রিকেটে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ নিয়ে সবার আগে সোচ্চার হয়েছিলেন তামিম ইকবাল খান। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে দেওয়া স্ট্যাটাসে তদন্ত কমিটি গঠন নিয়েও কিছু পরামর্শ ছিল এই সাবেক অধিনায়কের। গতকাল সে বিষয় নিয়েই মাসুদ পারভেজের সঙ্গে কথোপকথনে তিনি অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার আগ পর্যন্ত কাউকে দোষী বলে রায় না দেওয়ার অনুরোধও রাখলেনপ্রশ্ন : একটি প্রসঙ্গ আপনিই প্রথম তুলেছিলেন। যৌন হয়রানির বিষয়ে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটির দাবি জানিয়েছিলেন।যে কমিটিতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কাউকে না রাখারও পরামর্শ দিয়েছিলেন। বিসিবি তো একটি কমিটি গঠন করল।সেটি আপনার কাছে কেমন লাগল?এই কমিটিই ঠিক আছে, নাকি অন্য রকম হওয়া উচিত ছিল?তামিম ইকবাল খান : আমি এখনো মনে করি যৌন হয়রানির ঘটনা তদন্তে একটি স্বাধীন কমিটিই গঠিত হওয়ার দরকার ছিল। যে কমিটির সদস্যদের নিয়োগ বিসিবি দেবে না।
তা ছাড়া আমাদের দেশে শুধুই নারীদের নিয়ে কাজ করে, এমন অসংখ্য প্রতিষ্ঠান আছে। বিশেষ করে নারী অধিকার ও নারীদের যাবতীয় বিষয় নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান। এ রকম প্রতিষ্ঠান বা এর কর্মীদের প্রতিনিধিত্ব এই কমিটিতে থাকার দরকার ছিল। এদের রাখা গেলে সবচেয়ে ভালো হতো।
প্রশ্ন : সেটি কি এই বিষয়ে তাঁদের বিশেষজ্ঞতার জন্য?
তামিম : অবশ্যই। কারণ এখানে যে অভিযোগগুলো করা হয়েছে, সেগুলো সত্যি হোক বা যা-ই হোক, তদন্ত তো আগে করতে হবে।কাউকে তো এখনই দোষী বলার সুযোগ নেই। তবে যে অভিযোগগুলো এসেছে, এর প্রতিটিই ভয়ংকর। আর এ ধরনের অভিযোগ উনাদের চেয়ে ভালো আর কেউ বুঝবেন না।
উনাদের কাজই তো এসব নিয়ে। এ রকম কাউকে কমিটিতে না রেখে এগোনোটা সঠিক হবে বলে আমি মনে করি না। সেই সঙ্গে এটিও বলতে হয়, এখানে বিসিবির কোনো পরিচালককে রাখা উচিত নয়। উচিত নয় বিসিবির নিয়োগ দেওয়া কাউকে রাখাও।
প্রশ্ন : তাহলে এই তদন্ত কমিটি নিয়োগ করবে কারা?তামিম : আমি কিন্তু আগেও বলেছি স্বাধীন তদন্ত কমিটি হওয়া দরকার। সরকারই নিয়োগ দিক না। এটি অনেক বড় একটি ইস্যু। এই জিনিসটি কোনোভাবেই কোনো দিক থেকে কাম্য নয়। আবারও বলছি, দোষী যে-ই হোক, সঠিকভাবে তদন্ত করাটাই সবচেয়ে জরুরি কাজ। আর তদন্ত যদি আমরা ঠিকভাবেই করতে চাই, সে ক্ষেত্রে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ কমিটির কোনো বিকল্প নেই। এর আরেকটি বড় কারণ হলো, আজকেও (গতকাল) পত্রিকায় দেখলাম যে আরো কিছু বড় অভিযোগ এসেছে। অভিযোগ এমন কয়েকজনের বিরুদ্ধে, যাঁরা বর্তমান ক্রিকেট বোর্ডেই আছেন। শুধুই অভিযোগ, উনারা কেউই এখনো দোষী নন। কিন্তু অভিযোগ যেহেতু তদন্তের ব্যাপার আছে, তাই একই সংস্থার কারো এর সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকাটা কাম্য নয়।প্রশ্ন : জাহানারা আলম মুখ খোলার পর থেকে লাগাতার অভিযোগ আসছেই। পুরো বিষয়টিকে আপনি কিভাবে দেখছেন?তামিম : হ্যাঁ, অনেক অভিযোগ আসছে। তবে আমি একই সঙ্গে আরেকটি কথা বলে রাখতে চাই, আমরা কেউ যেন ‘জাজমেন্টাল’ না হয়ে যাই। কেউ দোষী না নির্দোষ, সেটি তদন্তেই ঠিক হোক। এই অভিযোগগুলো অনেক বড় এবং খুব সিরিয়াস। আমি এগুলো সবই বুঝি। সে জন্যই সঠিক পথে তদন্ত হওয়াটা জরুরি। সেই সঙ্গে আরো জরুরি হচ্ছে, ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের অভিযোগ আর কোনো জায়গা থেকে কখনো না আসে। সোজা কথা এ রকম কিছু নির্মূল করতে হবে।