বুধবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:২৬ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:

গফরগাঁওয়ে কারেন্ট পোকার আক্রমণে ধানক্ষেতে বিপর্যয়

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম: শুক্রবার, ৭ নভেম্বর, ২০২৫

গফরগাঁওয়ে যশরা ইউনিয়নের গণ্ডগ্রাম গ্রামের বর্গা চাষি শফিকুল ইসলাম চলতি আমন মৌসুমে ১৩ কাঠা জমিতে ধান চাষ করেছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করেই কারেন্ট পোকা তার স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে। এই পোকার আক্রমণে শফিকুলের ৬ কাঠা জমির ধান একেবারে শেষ হয়ে গেছে। দূর থেকে তাকালে মনে হয়, কেউ যেন শত্রুতা করে তার জমির ধান আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে।প্রতিদিন আক্রান্ত জমিতে গিয়ে তিনি মাথায় হাত দিয়ে শুধু হা-হুতাশ করেন। একই গ্রামের কৃষক মজিবর রহমানের অবস্থাও করুণ। নিজের ৭ কাঠা জমির পুরো ধানই নষ্ট হয়ে গেছে কারেন্ট পোকার আক্রমণে। আরেক কৃষক মকবুল হোসেনও বাঁচতে পারেননি এই ভয়ংকর পোকার হাত থেকে।তার ১৩ কাঠা জমির মধ্যে ৪ কাঠার ধানই নষ্ট করে দিয়েছে কারেন্ট পোকা।গণ্ডগ্রাম গ্রামের বর্গাচাষি শফিকুল ইসলাম কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, ধার করা ১৩ কাঠা জমিতে ধান আবাদ করেছেন তিনি। কিন্তু কারেন্ট পোকা সব নষ্ট করে দিয়েছে। এতে খরচের টাকাও উঠবে না।এখন পর্যন্ত কৃষি অফিস থেকে কোনো খোঁজ নেওয়া হয়নি। যশরা ইউনিয়নের গণ্ডগ্রাম গ্রামের কৃষক শফিকুল, মজিবর ও মকবুল হোসেন ছাড়াও কারেন্ট পোকা উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের কৃষকের ধান নষ্ট করেছে। শুধু কারেন্ট পোকার আক্রমণে নয়, মাজরা পোকার আক্রমণেও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ১৫ হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়েছে বলে জানা যায়।  উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি আমন মৌসুমে এই উপজেলায় ২২ হাজার ৬৬০ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদ হয়েছে। আমন মৌসুমে যেসব জমিতে পানি জমে থাকে, সেসব জমির ধানে কারেন্ট পোকার আক্রমণ বেশি হয়।কেননা কারেন্ট পোকা পানি ভেজা জমির ধানগাছের গোড়া থেকে রস শুষে নেয়। এতে ধানগাছ শুকিয়ে মরে যায় এবং মনে হয়, কেউ আগুনে ধানক্ষেত পুড়িয়ে দিয়েছে।কারেন্ট পোকা খুব দ্রুত বংশবিস্তার করে। ফলে অল্প সময়ে ধানক্ষেত ভরে যায় এই পোকায়। আবার মাজরা পোকা ধানগাছের কুশি কেটে দেয়, ফলে ধানের শীষ মরে সাদা হয়ে যায়। তাই জমিতে পানি থাকলে দ্রুত ড্রেন কেটে বা সেচ দিয়ে পানি বের করতে হবে। এরপর মাটি শুকালে ৭-৮ দিন পর অষুধ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. সাফাত জামান পনির জানান, কারেন্ট পোকা ও মাজরা পোকা দমনে আইপিএম (সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা) পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শাকুরা নাম্নী জানান, কারেন্ট পোকা ও মাজরা পোকার আক্রমণে যে ক্ষতি হয়েছে তাতে আমন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হবে না। মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

  • Print
  • উত্তরা নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন:
এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৫ | Technical Support: Uttara News Team
themesba-lates1749691102