মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:৫৩ অপরাহ্ন

অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঘোষণায় শেয়ার লেনদেনে ধুম

ন্যাশনাল ডেস্ক
  • আপডেট টাইম: মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৫
সংগৃহীত ছবি | উত্তরা নিউজ

একীভূত হতে যাওয়া পাঁচটি শরিয়াহভিত্তিক বেসরকারি ব্যাংকের সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। গতকাল মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, একীভূত প্রক্রিয়ায় বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন—এমন গুজব একটি স্বার্থান্বেষী মহল ছড়াচ্ছে, যা সম্পূর্ণ অসত্য।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের আশ্বাসের পর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) একীভূত হতে যাওয়া ব্যাংকগুলোর শেয়ার লেনদেনে ব্যাপক গতি ফিরে আসে। আগের দিনের তুলনায় এসব ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন কয়েকগুণ বেড়ে গেলেও দাম অপরিবর্তিত বা সামান্য কমেছে।

সরকার শরিয়াহভিত্তিক এক্সিম ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংককে একীভূত করে ‘ইউনাইটেড ইসলামী ব্যাংক’ বা ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক’ নামে একটি নতুন প্রতিষ্ঠান গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। প্রস্তাবটি গত ৯ অক্টোবর উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন পায়।

উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদিত প্রস্তাবনায় বলা হয়, হস্তান্তরকারী ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি ও শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য ঋণাত্মক হওয়ায় মালিক বা শেয়ারহোল্ডারদের কোনো আর্থিক দাবি পরিশোধের সুযোগ নেই। অর্থাৎ নতুন ব্যাংক গঠনের পর পুরোনো ব্যাংকগুলোর শেয়ারের অস্তিত্ব থাকবে না।

তবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সরকার এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ না হয় তা নিশ্চিত করতে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

বাজার বিশ্লেষণ অনুযায়ী, সোমবার এক্সিম ব্যাংকের ৬০ লাখের বেশি, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের প্রায় ৭০ লাখ, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের ৩২ লাখ, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ৩৭ লাখ এবং ইউনিয়ন ব্যাংকের ২৮ লাখের বেশি শেয়ার লেনদেন হয়েছে—যা আগের দিনের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি।

বিনিয়োগকারীরা বলছেন, সরকারের আশ্বাসের পর বাজারে কিছুটা আস্থা ফিরেছে। বিনিয়োগকারী কাজী মো. নজরুল ইসলাম বলেন, “অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা শেয়ারবাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। সরকারের উচিত বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা।”

এর আগে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষায় পাঁচটি নির্দেশনা দেয়। চিঠিতে বলা হয়, ব্যাংকগুলোর আর্থিক সংকটের দায় বিনিয়োগকারীদের নয়, তাই তাদের ন্যায্য মূল্য—বাজারমূল্য বা অভিহিতমূল্যের মধ্যে যেটি বেশি—তা প্রদানের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

বিএসইসির মুখপাত্র আবুল কালাম বলেন, “এই পাঁচ ব্যাংক অবসায়ন হচ্ছে না, বরং একীভূত হচ্ছে। তাই আমরা বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়েছি।”

বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারের সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত না হলে এই একীভূতকরণ প্রক্রিয়া ব্যাংক খাত ও পুঁজিবাজারে বড় অনিশ্চয়তা তৈরি করতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

  • Print
  • উত্তরা নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন:
এ জাতীয় আরো খবর..
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৫ | Technical Support: Uttara News Team
themesba-lates1749691102