পূর্বের ব্যর্থ ডেমু প্রকল্পের অভিজ্ঞতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ রেলওয়ে এবার নতুন করে চীনা মিটারগেজ ডিজেল-ইলেকট্রিক ইঞ্জিন আনার পরিকল্পনা করেছে। চীন সরকারের অনুদান ও বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক প্রস্তাব অনুযায়ী প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১,৭২৩ কোটি ৭৫ লাখ ১০ হাজার টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার বহন করবে ৪৯৮ কোটি ৬৯ লাখ টাকা এবং চীন দেবে ১,২২৫ কোটি ৬ লাখ ১০ হাজার টাকার অনুদান। প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে জুলাই ২০২৫ থেকে জুন ২০২৯ পর্যন্ত।
বাংলাদেশ রেলওয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ১৭৪টি মিটারগেজ ইঞ্জিনের মধ্যে ১২৪টির বয়স ২০ বছরের বেশি এবং ৬৮টির বয়স ৪০ বছরেরও বেশি। পুরনো ইঞ্জিনগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি খুচরা যন্ত্রাংশের সংকটও তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নতুন ইঞ্জিন আনার মাধ্যমে রেল পরিবহন ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার।
তবে রেলওয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীনে মিটারগেজ ব্যবস্থার প্রচলন না থাকায় প্রযুক্তিগত সামঞ্জস্যতা নিয়ে আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। তারা নতুন ইঞ্জিন আনার আগে ফিজিবিলিটি স্টাডি ও প্রযুক্তিগত পরীক্ষা জরুরি বলে মত দিয়েছেন।
লোকোমাস্টার ও শ্রমিক সংগঠনগুলোও বলছে, অতীতে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আনা ইঞ্জিনগুলো অল্প সময়ের মধ্যেই সমস্যায় পড়ে। তাই নতুন ইঞ্জিন আনার সময় পার্টস সরবরাহ, প্রশিক্ষণ এবং রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিত করা জরুরি।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকে পার্টস সরবরাহ, দীর্ঘমেয়াদি রক্ষণাবেক্ষণ পরিকল্পনা এবং সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের তথ্য প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইআরডির মাধ্যমে চীন সরকারের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।